তিন দফায় আবেদন জানিয়েও চিংড়িঘাটার কাছে রাস্তা বন্ধ করে গার্ডার উত্তোলনের অনুমতি না মেলায় থমকে যেতে বসেছে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর কাজ। মেট্রো কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কলকাতা পুরসভা এবং ট্র্যাফিক বিভাগের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণ করার পরেও শেষ মুহূর্তে অনুমতি দিতে
গিয়ে পিছিয়ে আসছে কলকাতা পুলিশ। অনুমতি না মেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ওই মেট্রোর রুবি থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত অংশের সম্প্রসারণের কাজ প্রায় এক বছর ধরে থমকে আছে। মেট্রো সূত্রের খবর, চিংড়িঘাটা মোড়ের কাছে ওই মেট্রোপথের ৩১৭, ৩১৮ এবং ৩১৯ নম্বর স্তম্ভের উপরে গার্ডার উত্তোলনের কাজ না হওয়ায় ৩৬৬ মিটার অংশ সংযুক্তির কাজ করা যাচ্ছে না।
কলকাতা পুরসভা এবং ট্র্যাফিক বিভাগের সঙ্গে একাধিক দফায় আলোচনার পরে চিংড়িঘাটা মোড়ে যান চলাচল বন্ধ রাখার বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ই এম বাইপাসের ক্যাপ্টেন ভেড়ি এবং ধাপা লক পাম্পিং স্টেশনের ( ডি এল পি এস) এলাকার মধ্য দিয়ে রাস্তা নির্মাণের অনুমতি দেয় পুরসভা। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর ওই অনুমতি মেলে।
এর পরে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ওই মেট্রোর নির্মাণ সংস্থা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের (আর ভি এন এল) পক্ষ থেকে ২৫ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দু’দফায় ওই কাজ করার অনুমতি চাওয়া হয়। গত ২০ জানুয়ারি এই মর্মে আর ভি এন এল এবং ট্র্যাফিক বিভাগের আধিকারিকদের দল যৌথ ভাবে বিকল্প ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করে। পুলিশের পক্ষ থেকে আরও কিছু কাজের সুপারিশ করা হয়। যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে ফের ৩ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাতে দু’দফায় ওই কাজ সম্পূর্ণ করার অনুমতি চাওয়া হয় মেট্রোর তরফে। এর জন্য ১১ ফেব্রুয়ারি দু’তরফের বৈঠক হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে দু’দিনের মধ্যে ওই কাজের অনুমতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
কিন্তু আর ভি এন এলের অভিযোগ, তার পরেও ওই অনুমতি মেলেনি। এর পরে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার এবং দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু একত্রে ওই অংশ পরিদর্শন করেন। কিন্তু, তার পরেও রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি বলে অভিযোগ মেট্রো কর্তৃপক্ষের। বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি অনুষ্ঠানের কথা বলে অনুমতির বিষয়টি কার্যত ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের। মেট্রোর দাবি, তাঁদের দু’দফায় মোট ছ’রাত রাস্তা বন্ধ রেখে কাজ করার প্রয়োজন পড়বে। ওই অংশের ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখতে কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা-সহ ট্র্যাফিক বিভাগের শীর্ষ কর্তারাও পরিদর্শন করেছেন।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, চিংড়িঘাটা মোড়ের প্রস্তাবিত অংশটি একাধিক রাস্তার সংযোগস্থল। ওই অংশে রাস্তা বন্ধ থাকলে তার বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে শহরের যান ব্যবস্থাপনায়। ওই রাস্তা দিয়ে প্রায়ই ভিভিআইপি-রা যাতায়াত করেন। ফলে, সব দিক দেখেই এ নিয়ে প্রয়োজনীয় অনুমতি দেওয়া হবে। পাশাপাশি, মেট্রোর কাজের প্রশ্নে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা সর্বদাই সদর্থক বলেও জানানো হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)