কোর্টে আসার আগে রাতে ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারেনি বছর চোদ্দোর কিশোরী। মা ও ছোট ভাইবোনেদের নিয়ে বাড়ি থেকে সামান্য দূরে পাড়ার এক দিদির বাড়িতে রাতে ছিল সে। আরও দু’জন ভাইকে নিয়ে স্থানীয় মসজিদে ছিলেন মেয়েটির বাবা।
বুধবার দুপুরে সেই মেয়েই মাথা উঁচু করে শিয়ালদহ আদালত চত্বরে এসে পকসো বিশেষ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দিল। রাজাবাজারের ক্লাস নাইনের মেয়েটি ও তার পরিবারের উপরে পড়শিদের একাংশ লাগাতার জুলুম চালাচ্ছে ও হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। পাড়ার ক্লাবের দিদিদের ডাকে গিয়ে ফুটবল খেলা এবং তাদের সঙ্গে মেলামেশার ‘অপরাধে’ এলাকার কয়েক জন মেয়েটির উপরে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ। মেয়েটির বাড়ি এসে তাকে মারধরের অভিযোগে মেহতাব আলম ওরফে ময়না বলে এক ব্যক্তিকে অবশ্য পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ দিন আদালতে ময়নার জামিন নাকচ হয়ে যায়। তাকে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
অভিযোগকারিণী কিশোরী ও তার পরিবারের পাশে রয়েছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে সদস্যেরা এবং নারী অধিকার নিয়ে সক্রিয় শহরের কিছু সংস্থা। মেয়েটির আইনজীবী অনুপম সরকার এ দিন বলেন, বাকি দুই অভিযুক্ত মহম্মদ সারোয়ার ওরফে গুড্ডু ও সরফুদ্দিন আহমেদ ওরফে পাঁচুর জামিন নাকচের জন্য হাইকোর্টে আবেদন জানানো হবে। দিন দশেক আগে এলাকায় গোলমালের পিছনে গুড্ডুরই হাত ছিল বলে ওই কিশোরী ও তার প্রতিবেশীদের অভিযোগ। তখন পাড়ায় এক নাবালিকার বিয়ে ভেস্তে দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় সমাজকর্মী সাহিনা জাভেদ, তাহসিনা বানোদের নিশানা করা হয়। পরে সাহিনাদের সঙ্গে মেলামেশা করায় কয়েক জন কিশোরীকে ওই দুষ্কৃতীরা নিশানা করে বলে অভিযোগ।
অভিযোগকারিণীর আইনজীবীর দাবি, সব অভিযুক্তের বিরুদ্ধেই পকসো আইনে মামলা করা গেলে কেউ জামিন পেত না। পুলিশের দাবি, আপাতত এলাকা শান্ত।