উড়ালপুলের মাঝে আচমকা খারাপ হয়ে গিয়েছে কোনও গাড়ি। সেটিকে সরিয়ে রাস্তার ধারে রাখলেও এই বিপত্তির জেরে গাড়ির লাইন পড়ে গিয়েছে উড়ালপুলের এক প্রান্ত পর্যন্ত। মূলত যানজট থেকে শহরবাসীকে মুক্তি দিতে তৈরি হয়েছিল এই উড়ালপুল। তবে এখন সেই যানজটই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে সেখানে।
ঘটনাস্থল মা উড়ালপুল। পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে সেখানে যানজট কার্যত রোজকার ঘটনা। তাই মাঝ উড়ালপুলে খারাপ হয়ে যাওয়া বা দুর্ঘটনায় পড়া গাড়ি সরিয়ে রাখতে উড়ালপুলের আট জায়গায় আটটি ডেক তৈরি করতে চাইছে লালবাজার। ইতিমধ্যে লালবাজারের তরফে এই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে কেএমডিএ-কে। ডেক তৈরির আটটি সম্ভাব্য জায়গা সম্প্রতি ঘুরে দেখেন পুলিশকর্তারা।
২০১৫ সালে চালু হয়েছিল মা উড়ালপুল। চার লেনের এবং সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়ালপুলটি পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড় থেকে শুরু হয়ে ইএম বাইপাসের দুই প্রান্তে এসে শেষ হয়েছে। ইএম বাইপাসে ধাপা এবং আম্বেডকর সেতুর দিক থেকে এই উড়ালপুলে ওঠা এবং নামা যায়। আবার, পার্ক সার্কাসে দু’টি লিঙ্ক র্যাম্প এ জে সি বসু উড়ালপুলের সঙ্গে মা উড়ালপুলকে যুক্ত করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মা উড়ালপুলে প্রতিদিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনা এবং গাড়ি খারাপ হওয়া লেগে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে উড়ালপুলের দুই জায়গায় ছোট রেকার এমনিই রাখতে হয়। এ ছাড়া, কোনও গাড়ি খারাপ হলে সেটিকে দ্রুত সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য ১০ জনের বেশি ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী উড়ালপুলে ডিউটিতে থাকেন। তাঁদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ছ’টি কিয়স্ক। সেখান থেকে তাঁরা দিনের ব্যস্ত সময়ে উড়ালপুল দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের উপরে লক্ষ রাখেন। কিন্তু এত কিছুর পরেও দুর্ঘটনায় পড়া বা খারাপ হয়ে যাওয়া গাড়ি ক্রেন দিয়ে নামাতে অনেক সময় লেগে যায়। অভিযোগ, এর ফলে উড়ালপুলে তৈরি হয় তীব্র যানজট। তাই খারাপ হওয়া বা দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি সরিয়ে যাতে সাময়িক ভাবে যান চলাচল করানো যায়, তার জন্যই এই ডেক তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, লালবাজারের তরফে উড়ালপুলে চিহ্নিত করা আটটি জায়গায় ডেক তৈরি করা সম্ভব কিনা, তা খতিয়ে দেখছে কেএমডিএ। সম্প্রতি পুলিশকর্তাদের সঙ্গে পরিদর্শনে কেএমডিএ-র কর্তারাও ছিলেন। এক পুলিশকর্তা জানান, ওই আটটি ডেক ছাড়া উড়ালপুলে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের জন্য শৌচাগার তৈরি করারও পরিকল্পনা আছে। যাতে তাঁদের বার বার উড়ালপুল থেকে নামতে না হয়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)