Advertisement
E-Paper

আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রশাসনে খোলনলচে বদল, চলতি সপ্তাহেই দায়িত্বে আসছেন নতুন ডিরেক্টর, বাড়ছে নিরাপত্তার বহর

আলিপুর চিড়িয়াখানার নতুন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে আইএফওএস তৃপ্তি শাহকে। চলতি সপ্তাহেই তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন বলে খবর। তিনি এর আগে ইনস্টিটিউট অফ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়েট ল্যান্ড ম্যানেজমেন্টে অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক ছিলেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৫ ১৩:৩৪
The new director is being appointed in Alipore Zoo

পশু ‘নিখোঁজ’ বিতর্কের মধ্যেই একাধিক বদল আলিপুর চিড়িয়াখানায়। —ফাইল চিত্র।

আলিপুর চিড়িয়াখানায় প্রাণীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে প্রশাসনে। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে বন দফতর। পাশাপাশি শুরু হয় আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রশাসনে রদবদলের প্রক্রিয়া। আলিপুর চিড়িয়াখানার পরিচালক (ডিরেক্টর) পদের দায়িত্বে ছিলেন অরুণ মুখোপাধ্যায়, যিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে এই কাজ সামাল দিচ্ছিলেন। কিন্তু প্রাণীর সংখ্যা কমে যাওয়ার জেরে পশ্চিমবঙ্গ বন দফতরের এক আদেশ অনুসারে তিনি স্থানান্তরিত হয়েছেন দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান চিড়িয়াখানায়। সেখানে তিনি পরিচালক ও প্রধান সংরক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বদলে নতুন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে আইএফওএস তৃপ্তি শাহকে। চলতি সপ্তাহেই তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন বলে খবর। তিনি এর আগে ইনস্টিটিউট অফ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়েট ল্যান্ড ম্যানেজমেন্টে অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক ছিলেন।

শুধু ডিরেক্টর পদেই নয়, আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রশাসনের সম্পূর্ণ খোলনলচে বদল করা হচ্ছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত সিসিটিভি এবং নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হচ্ছে পশু-পাখিদের ঘরের সামনে। নতুন ডিরেক্টর এসে যাতে নতুন ভাবেই নিজের দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সেই বিষয়ে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছে বন দফতর। কারণ, আলিপুর চিড়িয়াখানায় প্রাণীর সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে যে ভাবে প্রকাশ্যে বন দফতরকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে, তাতে মোটেই খুশি নয় সল্টলেকের অরণ্য ভবন। তাই এ বার প্রথম থেকেই কড়া হাতে আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রশাসনে বদল আনতে চাইছেন বন দফতরের বড় কর্তারা। সম্প্রতি কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় বেশ কিছু প্রাণী কমে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। এই ঘটনায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছে, যেখানে চিড়িয়াখানার হিসাব মেলানোর জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে।

এই উদ্বেগের মূল কারণ হিসাবে জানানো হয়েছে যে, চিড়িয়াখানায় নথিবদ্ধ করা প্রাণীর সংখ্যা ৬৭২ থেকে কমে ৩৫১-তে এসে দাঁড়িয়েছে, যার অর্থ ৩২১টি প্রাণী নিখোঁজ। এই ঘটনায় পশুপ্রেমী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই প্রাণীগুলি কোথায় গেল? তাদের কি বিক্রি বা পাচার করা হয়েছে?

কিছু মানুষের ধারণা, চিড়িয়াখানার কিছু জমি অপ্রয়োজনীয় দেখিয়ে বিক্রি করার জন্য এই প্রাণীগুলিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার কিছু মানুষের সন্দেহ, এই প্রাণীগুলিকে পাচার করা হয়েছে। এই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হওয়ার পর রাজ্য সরকার এবং চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাছে এর ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু প্রশ্ন উঠেছে পশুপ্রেমী মহলে। চিড়িয়াখানার পশু-পাখির সংখ্যা হঠাৎ করে কমে গেল কেন? যদি প্রাণী কমে গিয়ে থাকে, তবে তার কারণ কী? এগুলো কি বিক্রি বা পাচার করা হয়েছে? চিড়িয়াখানার জমি বিক্রি করার কোনও পরিকল্পনা আছে কি? এই সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। ১ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগেই আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রশাসনের আপাদমস্তক বদল চাইছে বন দফতর। যাতে আদালতের শুনানিতে কোনও ভাবেই তাদের প্রশ্নের মুখে না পড়তে হয়।

বন দফতরের এক আধিকারিক বলেছেন, ‘‘প্রাণীর সংখ্যা কমে যাওয়ার অভিযোগ আসার পরেই দফতরভিত্তিক তদন্ত শুরু হয়েছে। আলিপুর চিড়িয়াখানাও অভ্যন্তরীণ ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ করছে। প্রাথমিক ভাবে আলিপুর চিড়িয়াখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা আমাদের কাছে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু যত ক্ষণ না পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসছে, আমরা এ প্রসঙ্গে কোনও মতামত দেব না। আপাতত নতুন ডিরেক্টর দায়িত্ব নিলে চিড়িয়াখানা প্রশাসন যাতে সুষ্ঠু ভাবে কাজ করতে পারে, সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।’’

Alipore Zoo
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy