গত সোমবার যাদবপুর থানা এলাকার বিজয়গড়ে একটি চারতলা বাড়ির দোতলার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় সঞ্চিতা বসু (৩৮) নামে ওই তরুণীর দেহ। প্রতীকী ছবি।
পাকস্থলীতে মেলেনি কোনও খাবারের চিহ্ন। দীর্ঘ দিন কার্যত অনাহারে থাকার একাধিক লক্ষণও শরীরে স্পষ্ট। যাদবপুরের বিজয়গড়ে মেয়ের দেহ আগলে বৃদ্ধা মায়ের দিন কাটানোর ঘটনায় ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এমনই তথ্য হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে, একটি সংস্থা থেকে নিয়মিত বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া সত্ত্বেও কেন ওই তরুণী কিছু খেতেন না, আপাতত সেই প্রশ্নের উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
গত সোমবার যাদবপুর থানা এলাকার বিজয়গড়ে একটি চারতলা বাড়ির দোতলার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় সঞ্চিতা বসু (৩৮) নামে ওই তরুণীর দেহ। মেয়ের দেহ আগলে দিন কাটাচ্ছিলেন মা দীপালি বসু। ওই দিন সকালে ফ্ল্যাটে খাবার পৌঁছে দিতে এসে দুর্গন্ধ পেয়ে অন্যআবাসিকদের বিষয়টি জানান সরবরাহকারী ব্যক্তি। আবাসিকদের সূত্রেই খবর যায় থানায়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঢুকে সঞ্চিতার দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, দিনকয়েক আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই তরুণীর। তাঁদের অনুমান ছিল, অপুষ্টিজনিত কারণেই মারা গিয়েছেন তরুণী। কিন্তু মেয়ের মৃতদেহ আগলে ওই অবস্থায় মায়ের দিন কাটানোয় ধন্দ বাড়ে পুলিশের অন্দরেই।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, কর্মসূত্রে উত্তরপ্রদেশে থাকা ওই পরিবারের এক আত্মীয়ই দীপালি ও সঞ্চিতার দেখাশোনা করতেন। তিনিই স্থানীয় একটি খাবারসরবরাহকারী সংস্থার মাধ্যমে দু’জনের জন্য নিয়মিত খাবার পাঠাতেন। ইতিমধ্যেই ওই আত্মীয়কে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। তবে, সঞ্চিতার মৃতদেহের ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। আপাত ভাবে রিপোর্টে উঠে এসেছে, এক দিন বা দু’দিন নয়, দীর্ঘ দিন ধরে ওই তরুণী কার্যত না খেয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন।
এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘বাড়িতে খাবার আসা সত্ত্বেও কেন মহিলা কিছু খেতেন না, সেটাই এখন মূল প্রশ্ন। তাঁর কোনও মানসিক সমস্যা ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তরুণীর বৃদ্ধা মাকে পরিবারের উদ্যোগে আপাতত একটি হোমে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁর সঙ্গেও কথা বলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy