E-Paper

পিয়ানো, ফুটবলকে সঙ্গে নিয়েই বড় পরীক্ষায় সফল ওরা

এ বার আইএসসি-তে ৯৯.৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে দেশের পাঁচ পড়ুয়া। আইসিএসই-তে ৯৯.৬ শতাংশ পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাজ্যের ছয় পড়ুয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৩ ০৭:২১
An image of ISC candidate

ফলাফল দেখতে ভিড়। রবিবার,শহরের একটি স্কুলে। ছবি: সুমন বল্লভ।

বড় পরীক্ষার আগে ওরা কেউই নিজেদের শখ-আহ্লাদ বাদ দিয়ে দেয়নি। বরং, পড়াশোনার পাশাপাশি চলেছে নাটক-পিয়ানো-ফুটবল। ৯৯ শতাংশ নম্বর পাওয়ার পণ করেও পড়াশোনা করেনি কেউ। বরং লক্ষ্য ছিল নিখুঁত উত্তর দেওয়ার দিকে। আর সে জন্য বছরভর নিরন্তর অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছে ওই কৃতী পড়ুয়ারা।

এ বার আইএসসি-তে ৯৯.৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে দেশের পাঁচ পড়ুয়া। তাদেরই এক জন কলকাতার হেরিটেজ স্কুলের মান্য গুপ্ত। সে বলে, ‘‘২০২১ সালে আইসিএসই দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার জন্য তা বাতিল হয়। তাই জীবনের বড় পরীক্ষা ছিল এই আইএসসি। আমাদের স্কুল, টিউশন সব দিক থেকেই অনলাইন ও অফলাইনে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। অনলাইনে পড়ার ক্ষেত্রে সেই সময়টুকুও বাঁচাতে পারি।’’ লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোট গল্প লেখার অভ্যাসও রয়েছে তার। ভবিষ্যতে সাইকোলজি নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় ওই ছাত্রী। মান্য বলে, ‘‘নবম শ্রেণি থেকেই ঠিক করে রেখেছি, সাইকোলজি নিয়ে পড়াশোনা করব। পড়ার বইয়ের বাইরে সেই সংক্রান্ত বই পড়ি। দেশে বা বিদেশে এই বিষয়ে উচ্চশিক্ষা করতে চাই।’’

আইএসসি-তে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী, রাজ্যের ছয় পড়ুয়াদের এক জন মডার্ন হাইস্কুল ফর গার্লসের ছাত্রী অন্তরা বন্দ্যোপাধ্যায় (৯৯.৫ শতাংশ নম্বর)। তার পরামর্শ, ‘‘বার বার পড়া ঝালিয়ে নিতে হবে। আগের বছরগুলির বোর্ডের প্রশ্নপত্র সমাধান করতে হবে।’’ ভবিষ্যতে যাদবপুর বা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস নিয়ে পড়তে চায় অন্তরা। অবসর কাটে নাটক, গান, পিয়ানোয়।

আইসিএসই-তে ৯৯.৬ শতাংশ পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাজ্যের ছয় পড়ুয়া। তাদেরই এক জন, জোকার বিবেকানন্দ মিশন স্কুলের সাবিক ইবন খান সেই খবর জেনে জড়িয়ে ধরেছিল মা-বাবাকে। সে বলে, ‘‘পাঠ্যক্রম নিয়ে ভয় পেলে চলবে না। প্রতিদিনের স্কুলের পড়া রোজ করে ফেলতে হবে। তা হলে চাপ পড়বে না পরীক্ষার আগে।’’ সাবিক আরও জানায়, পাঠ্যক্রম সে শেষ করে ফেলেছিল ডিসেম্বরেই। ‘‘তবে ইতিহাস-ভূগোল মুখস্থ করিনি। গল্পের মতো পড়েছি, ফলে সবটা মনে ছিল’’—বলছে সে। ভবিষ্যতে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় সাবিক। কাগজ দিয়ে মডেল বানিয়ে, গিটার বাজিয়েই কাটে তার অবসর সময়। বইয়ে মুখ গুঁজে নয়, পরীক্ষার কয়েক মাস আগে বাবার সঙ্গে চুটিয়ে ব্যাডমিন্টনও খেলেছে সে।

একই নম্বর পেয়ে আইসিএসই-তে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী গার্ডেন হাইস্কুলের আরণ্যক রায়। সে জানায়, শেষ দু’মাস পড়াশোনার সময় বাড়াতে ফুটবল থেকে দূরে ছিল। তবে তার আগে মাঝেমধ্যেই ফুটবল খেলেছে। আরণ্যক বলে, ‘‘ভাল নম্বর পেতে বোর্ডের নিয়মাবলী অনুযায়ী লেখা দরকার। সেগুলো কী, তা স্কুলের শিক্ষকদের থেকে জানা দরকার।’’

এ বার আইসিএসই-তে রাজ্যের পাঁচ দ্বিতীয় স্থানাধিকারীর মধ্যে চার জনই কলকাতার স্কুলের পড়ুয়া। ১৬ জন তৃতীয় স্থানাধিকারীর মধ্যে ৯ জন কলকাতার। অন্য দিকে, আইএসসি-তে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাজ্যের যে ছয় পড়ুয়া, তাদের মধ্যে ৫ জন এ শহরের। রাজ্যে ১০ জন তৃতীয় স্থানাধিকারীর মধ্যে ৭ জন কলকাতার। তাই সার্বিক ভাবে কলকাতার ফল ভাল বলেই মনে করছেন অধ্যক্ষেরা।তাঁদের মতে, করোনা কাটিয়ে পরীক্ষা ও পড়াশোনা আবার ছন্দে ফিরেছে, এটাই স্বস্তির।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

ICSE ISC Exam Results

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy