Advertisement
E-Paper

সময়ে চলছে না ট্রেন, তুঙ্গে যাত্রী ভোগান্তি

সময় সারণি মেনে ট্রেন চালানোর নিয়ম কার্যত উঠে গিয়েছে শিয়ালদহ থেকে। অভিযোগ, দেরিতে ট্রেন চলায় বেড়ে যাচ্ছে ভিড়ের চাপ। ফলে শহরতলিতে লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করতে গিয়ে যাত্রী-দুর্ভোগ এখন নিয়মিত ঘটনা।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৩৯

সময় সারণি মেনে ট্রেন চালানোর নিয়ম কার্যত উঠে গিয়েছে শিয়ালদহ থেকে। অভিযোগ, দেরিতে ট্রেন চলায় বেড়ে যাচ্ছে ভিড়ের চাপ। ফলে শহরতলিতে লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করতে গিয়ে যাত্রী-দুর্ভোগ এখন নিয়মিত ঘটনা।

‘গতিমান’ চালু হয়ে নতুন মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছে ভারতীয় রেল। ২০০ কিমি পথ পার করা যাচ্ছে মাত্র ১০০ মিনিটে। সব দেখে শিয়ালদহ শাখার নিত্য যাত্রীদের বক্তব্য, দেশ জুড়ে যখন ট্রেনের গতি বাড়িয়ে যাতায়াতের সময় কমানো হচ্ছে, তখন শিয়ালদহে রেলের নিজস্ব নানা সমস্যার জেরে যাতায়াতের সময় ক্রমশ বাড়ছে। বাড়ছে ভিড়ের চাপও।

অভিযোগ, শিয়ালদহের সব শাখায় বেনিয়মে ট্রেন চলাই এখন নিয়ম। কোথাও চালক নেই তো, কোথাও প্ল্যাটফর্মে রেক আসতে দেরি। বা সিগন্যাল বিপত্তি। এক বার একটি ট্রেন দেরিতে চলা মানেই পর পর ট্রেন চলাচলে দেরি হওয়া। দীর্ঘক্ষণ লেট করে যখন একটি লোকাল ট্রেন ঢোকে, তখন প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের ঢলের চাপে নামতে পারেন না ট্রেনের যাত্রীরা। ধাক্কাধাক্কিতে নিত্যই কেউ পড়ে যাচ্ছেন, আহত হচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা।

রেলের টাইম টেবিলে শিয়ালদহ থেকে নৈহাটি যেতে সময় বলা আছে এক ঘণ্টা। অভিযোগ, সেই পথ পেরোতে এখন লাগছে সওয়া এক থেকে দেড় ঘণ্টা। একই ভাবে ব্যারাকপুর পর্যন্ত ৩৫ মিনিটের বদলে লাগছে ৫০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা। যাত্রীরা বলছেন, প্রথমে শিয়ালদহে এক দফা দেরি হয় ট্রেন ছাড়তে। কারশেডে আর দমদম স্টেশনে ঢোকার আগেও হয় দেরি। দেরি হয় ব্যারাকপুরে ঢোকার আগেও। দমদম রুটে রিলে ইন্টারলক কেবিন এবং ব্যারাকপুর পর্যন্ত অটোমেটিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করার সময়ে বলা হয়েছিল, এই কাজের পরে ট্রেনে গতি বাড়বে, লাইনে পাত বাড়বে। ফলে বেশি ট্রেন চালানো যাবে। অভিযোগ, এ সবের কিছুই হয়নি। ট্রেন সেই চলছে গড়াতে গড়াতেই।

যাত্রীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক অনুরোধ করেও এই সমস্যা থেকে রেহাই মেলেনি। ভিড়ের হাত থেকে বাঁচাতে মেন লাইনে ১২ কামরার ট্রেন চালাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বেশির ভাগ ট্রেন এখনও ন’কামরা নিয়েই চলছে। উল্টে ট্রেনগুলি নিয়মিত দেরিতে চলাচল করায় যাত্রীরা নাকাল হচ্ছেন।

রেল সূত্রে খবর, হাওড়া ও শিয়ালদহ মিলিয়ে সরকারি হিসেবে প্রায় ৩০ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। এর মধ্যে শিয়ালদহেই প্রায় ১৮ লক্ষ। তার উপরে রয়েছে বিনা টিকিটের আরও কয়েক লক্ষ যাত্রী। রেলকর্তারা বলছেন, প্রতি বছর ছ’শতাংশ করে যাত্রীর ভিড় বাড়ছে। ফলে দুই ডিভিশন মিলিয়ে সারা দিনে ১২৮৪টি লোকাল ট্রেন চালিয়েও ভিড় সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের দাবি, ট্রেন বাড়ানোর আর কোনও সুযোগ নেই ওই দুই ডিভিশনে।

কিন্তু নিয়মমতো কেন চালানো যাচ্ছে না ট্রেন? রেলকর্মীদের একাংশেরই বক্তব্য, শিয়ালদহে উঁচু থেকে নিচু তলার বহু কর্মী দীর্ঘদিন ধরে একই জায়গায় থেকে যাওয়ায় কর্ম সংস্কৃতিতে গোলমাল হচ্ছে। অভিযোগ, নিয়মের তোয়াক্কা করা বা তা না মানার জন্য জবাব দেওয়ার পাট কার্যত উঠে গিয়েছে। যার ফলে ট্রেন অনিয়মিত হয়ে পড়লেও কেউ সে দিকে নজর করার প্রয়োজন বোধ করছেন না। উল্টে নিয়মিতই শিয়ালদহ থেকে সদর দফতরে রিপোর্ট যাচ্ছে, ১০০ শতাংশ ট্রেন সময়মতো চলছে।

শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার জয়া বর্মা অবশ্য বলেন, ঠিক সময়ে ট্রেন চালাতে না পারার মূল কারণ দমদমের ছ’পয়েন্ট ক্রসিং। অনেক বার বলার পরে রেল বোর্ড দমদমের ওই ক্রসিংয়ে রেলব্রিজ তৈরির অনুমতি দিয়েছে। রেলের সহযোগী সংস্থা রাইস এই কাজ করবে। কিছু দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে। রেলব্রিজ হয়ে গেলেই দমদমের জট কমে যাবে।’’

train passenger suffered
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy