রান্নাঘরে গ্যাসের আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন তাঁর দাদা-বৌদি এবং গ্যাস সারাতে আসা এক ব্যক্তি। তার পর থেকে সামান্য পোড়া গন্ধ নাকে এলেই বুক শুকিয়ে যায় বরাহনগরের সুব্রত দাসের। রান্নাঘরে গ্যাসের ব্যবহার নিয়েও প্রচণ্ড সজাগ তিনি। বারবার সতর্ক করেন স্ত্রীকে। যে দুর্ঘটনায় দাদা-বৌদির মৃত্যু হয়েছে, তার জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছেন আদালতে। এর মাঝেই বাড়িতে হাজির একটি সিলিন্ডার, যার গায়ে লেখা ডি-০৮। ভয়ে হাড় হিম হয়ে গিয়েছে সুব্রতবাবুর।
জানা গিয়েছে, প্রতিটি খালি সিলিন্ডার নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরীক্ষা করার কথা প্রস্তুতকারক সংস্থার। যদি দেখা যায় সেই সিলিন্ডার ঠিক অবস্থায় রয়েছে, তবেই তাতে গ্যাস ভরে গ্রাহকের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা। সিলিন্ডার ঠিক না থাকলে তা নষ্ট করে ফেলতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী, একটি খালি সিলিন্ডার যে দিন পরীক্ষা করা হয়, সে দিনই ওই সিলিন্ডারের গায়ে পরবর্তী পরীক্ষার দিনক্ষণ (এক সময়ে যা ছিল পাঁচ বছর পরে) খোদাই করে দেওয়ার কথা। যাতে সেই দিনক্ষণ দেখে পাঁচ বছর পরে আবার ওই সিলিন্ডারটি পরীক্ষা করা যায়, পাশাপাশি গ্রাহকও যাতে বুঝতে পারেন যে, সিলিন্ডারটি ব্যবহারযোগ্য রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বছরকে চারটি ভাগে ভাগ করে ইংরেজির এ, বি, সি, ডি-তে নামাঙ্কিত করা হয়।
ডি-০৮ অর্থে, সুব্রতবাবুর কাছে পৌঁছনো সিলিন্ডারটি ২০০৮ সালের শেষ তিন মাসের মধ্যে পরীক্ষা করার কথা ছিল। যার মানে দাঁড়ায়, সিলিন্ডারটি এগারো বছর আগে, ২০০৩ সালে শেষ বার পরীক্ষা করা হয়েছিল। ইন্ডিয়ান অয়েলের পক্ষ থেকে মাঝে যুক্তি দেখানো হয়, সিলিন্ডারের মেয়াদ আগে যেটা পাঁচ বছর ছিল, তা এখন বেড়ে দশ বছর হয়ে গিয়েছে। এই যুক্তি মানলেও ২০০৩ সালে শেষ বার পরীক্ষা করা সিলিন্ডারটি পরীক্ষা করার কথা ছিল ২০১৩ সালের শেষে। এখন থেকে এক বছর আগে!