Advertisement
E-Paper

শহরে মানাতে না পেরেই ‘আত্মহত্যা’?

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার আশুতোষের ট্রাউজার্সের পকেট থেকে একটি চিঠি মিলেছে। তা পড়ে পুলিশের অনুমান, নিজেকে শেষ করে দিতেই পাঁচতলার বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন তিনি। এ দিন বিকেলে ময়না-তদন্তের পরে আশুতোষের দেহ পরিজনেদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩৫
আবাসনের গেটের এই লোহার ফলার উপরেই এসে পড়েছিল আশুতোষ মণ্ডলের দেহ। রবিবার, বেলেঘাটায়। ফাইল চিত্র।

আবাসনের গেটের এই লোহার ফলার উপরেই এসে পড়েছিল আশুতোষ মণ্ডলের দেহ। রবিবার, বেলেঘাটায়। ফাইল চিত্র।

নিজের পুরনো জায়গা ছে়ড়ে চলে আসতে হয়েছিল কলকাতায়। কিন্তু শহুরে জীবনে মানিয়ে নিতে পারেননি আঠেরো বছরের তরুণ। পুলিশ বলছে, সেই অবসাদ থেকেই আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বেলেঘাটার বাসিন্দা আশুতোষ মণ্ডল (১৮)। রবিবার খোদাগঞ্জ রোডে একটি আবাসনের নীচে গেটের ফলায় বিদ্ধ অবস্থায় রক্তাক্ত আশুতোষকে পাওয়া যায়। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার আশুতোষের ট্রাউজার্সের পকেট থেকে একটি চিঠি মিলেছে। তা পড়ে পুলিশের অনুমান, নিজেকে শেষ করে দিতেই পাঁচতলার বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন তিনি। এ দিন বিকেলে ময়না-তদন্তের পরে আশুতোষের দেহ পরিজনেদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

পুলিশ জেনেছে, মাস চারেক আগে বীরভূমের মল্লারপুর থেকে বেলেঘাটার ভাড়ার ফ্ল্যাটে এসেছিল মণ্ডল পরিবার। তবে পরিবারের কর্তা রাধাগোবিন্দ মণ্ডল চাকরি সূত্রে বাইরে থাকেন। শহরের কর্মব্যস্ত জীবনের সঙ্গে আশুতোষ মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। মধ্য কলকাতার একটি কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। কিন্তু কলেজের সহপাঠীদের সঙ্গেও তিনি মানিয়ে নিতে পারেননি। স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, শহরের বেশির ভাগ আবাসনের মতো আশুতোষদের ফ্ল্যাটবাড়িতেও বাসিন্দাদের মধ্যে মেলামেশা কম। তার প্রমাণ অবশ্য রবিবারও মিলেছে। ওই আবাসনের পাশের বাড়ির বাসিন্দা তাপস মিত্র বলেন, ‘‘আশুতোষকে গেটের ফলায় বেঁধে ছটফট করতে দেখে উদ্ধার করতে যাই। আবাসনের বাসিন্দারা সব দেখেও নীচে নামেননি।’’

নিজের পুরনো জায়গা ছেড়ে নতুন জায়গায় মানিয়ে নিতে না পারার পরিণাম এমন মারাত্মক হতে পারে, তা অনেকেই ভাবতে পারছেন না। তবে মনোবিদ বহ্নিশিখা ভট্টাচার্যের মতে, চেনা চৌহদ্দির বাইরে এসে মানিয়ে নেওয়া বা না-নেওয়া প্রত্যেকের ব্যক্তিসত্তার উপরে নির্ভর করে। মফস্‌সলে যে ধরনের মানসিকতা ওই তরুণ পেয়েছিলেন, সেটা কলকাতায় পাননি। মিশতে পারেননি তিনি নিজেও। ফলে অবসাদে ভুগতে শুরু করেন। পরিজনেরা তাঁর অবসাদের কথা বুঝতে পারেননি বলে অনুমান মনোবিদের।

মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেলের মতে, অবসাদপ্রবণতা অনেকের মধ্যে বেশি থাকে। তাঁরা এই ধরনের সমস্যায় পড়লে তা কাটিয়ে উঠতে পারেন না। অবসাদগ্রস্ত হওয়ার ফলে নিজেদের সমস্যাও পরিজনেদের কাছে তুলে ধরতে পারেন না। সকলেরই আরও সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন। পরিচিত কেউ নিজেকে বাইরের জগত থেকে ক্রমশ গুটিয়ে নিলে তাঁর সঙ্গে কথা বলা উচিত।

Suicide Depression
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy