Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

থিম-যুদ্ধে সামিল আবাসন, নজরকাড়া পারিবারিক পুজোও

কাউন্টডাউন শুরু। এক পুজোকে টেক্কা দিতে তৈরি অন্যরা। শহরের ‘সর্বজনীন’ পুজো নিয়ে উন্মাদনার পাশাপাশি তৈরি আরও দু’ধরনের পুজো— আবাসন আর বনেদি বাড়ি। বহু আবাসনে সারা বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা আবাসিকেরা পুজোর ক’দিন একই পরিবারের মতো পাত পেড়ে খাবেন। অঞ্জলি দেবেন ভিন্ ধর্মের মানুষ। অন্য দিকে, বনেদি বাড়ির প্রাচীন পুজোগুলি ধরে রাখবে সাবেকিয়ানা।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:২০
Share: Save:

কাউন্টডাউন শুরু। এক পুজোকে টেক্কা দিতে তৈরি অন্যরা। শহরের ‘সর্বজনীন’ পুজো নিয়ে উন্মাদনার পাশাপাশি তৈরি আরও দু’ধরনের পুজো— আবাসন আর বনেদি বাড়ি। বহু আবাসনে সারা বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা আবাসিকেরা পুজোর ক’দিন একই পরিবারের মতো পাত পেড়ে খাবেন। অঞ্জলি দেবেন ভিন্ ধর্মের মানুষ। অন্য দিকে, বনেদি বাড়ির প্রাচীন পুজোগুলি ধরে রাখবে সাবেকিয়ানা।

পামারবাজারের কাছে সানরাইজ এস্টেটে আবাসিকদের সঙ্গে মাতবেন চলচ্চিত্র তারকা ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শ’তিনেক কচিকাঁচা। জলদূষণ এড়াতে দেবীর রূপ হবে মৃন্ময়ী। আবাসনের পুজোয় থিমের ছোঁয়া কামালগাজির সানি সিজনে। থাকবে রামচন্দ্রের অকালবোধন থেকে হালফিলের থিম পুজোর বিবর্তনের ইতিহাস। প্রতিমা হবে ডাকের সাজে। পাতপেড়ে খাওয়ার পাশাপাশি ৩০০টি পরিবার মেতে উঠবে নানা অনুষ্ঠানে।

পাট, টেরাকোটা, বাঁশের কারুকাজে ঠাকুরবাড়ির দালানে সাবেক প্রতিমা নজর কাড়বে গড়িয়া মেন রোডের ভিক্টোরিয়া গ্রিন্স আবাসনে। সারা বছর দেশ-বিদেশের নানা প্রান্তে কাটিয়ে পুজোর ক’দিন যৌথ পরিবার হয়ে উঠবেন বেহালার নিউ জেম্স-অজন্তা পূজা কমিটির আবাসিকেরা। ভুরিভোজ, আনন্দমেলা, মুখোশ তৈরি, গান, নাচ এবং ফ্যান্সি ড্রেস শো, প্রর্দশনী চলবে। প্রতিমা ডাকের সাজের।

নাগেরবাজারের সাতগাছির শ্রাচী গার্ডেন-এর পুজোয় মাতবে ২০৬টি ফ্ল্যাট। কুঁড়েঘরে সাবেক প্রতিমা। মল এনক্লেভের আবাসিকেরাও পুজোয় মাতবেন যৌথ পরিবারের মতোই। টালা পার্কে কাছে পুলিশ আবাসনের পুজোর মূল উদ্যোক্তা মহিলারা। থাকছে নানা অনুষ্ঠান ও ভুরিভোজ।

অন্য দিকে, বহু আগে থেকেই পুজোর আচার শুরু হয়ে গিয়েছে সাবেক পুজোগুলিতে। ৩৬০ বছরের ‘শ্রীশ্রী রামেশ্বর শিব ধাম’-এর পুজোয় হবে ভক্ত সমাগম। ইংরেজ আমলে এই আটচালার শিবমন্দিরে দূর-দূরান্ত থেকে আসতেন ভক্তরা। মানব বিকাশ ট্রাস্টের উদ্যোগে শিব-শক্তি সাধনার এই পুজোয় ত্রিশূল, কুমারী ও সন্ধিপূজা দেখতেও ভিড় করবেন বহু মানুষ।

বৌবাজারের কপালিটোলা লেনে ‘দাশ পরিবার’-এর ২০০ বছরের প্রাচীন পুজোর শুরু রাখী পূর্ণিমার দিন। গরানের কাঠ দিয়ে কাঠামো করে প্রতিপদ থেকে শুরু দেবী মূর্তির পুজো। প্রতি দিন একটি মাটির শিবলিঙ্গ গড়ে পুজো হবে। চণ্ডীপাঠ, স্তোত্রপাঠ, কবজ পাঠ, পঞ্চমীতে ভাণ্ডার, অষ্টমীতে কুমারী পুজো, ধুনো পোড়ানো উৎসব, বিজয়ায় সিঁদুর খেলাও থাকবে।

টালিগঞ্জের চণ্ডী ঘোষ রোডের ‘বসুচৌধুরী পরিবার’-এর পুজোও প্রায় ৩০০ বছরের। প্রতি দিন পূজিত হন ‘সর্বমঙ্গলা মা’ ও শালগ্রাম শিলা। বাড়ির সদস্যদের আন্তরিকতাই পুজোর মূলধন।

নিউ ব্যারাকপুরের দক্ষিণ কোদালিয়ার ‘বিশ্ব সেবাশ্রম সঙ্ঘে’ সমীর ব্রহ্মচারীর পুজো দেখতে আসেন অনেকে। সাত নদী থেকে জল এনে পুজো হয়। দেবীর মহাস্নানেও ব্যবহার হয় বিভিন্ন জল। দেবী মূর্তি নির্মিত হয় কৈলাস ভূমির মাটি-সহ বিভিন্ন জায়গার মাটিতে। কুমারী পুজোও হবে এখানে।

শিবলোকে আদ্যাশক্তির ভাবনায় ‘সাধুখাঁ বাড়ি’র জাগ্রত পুজোও নজর কাড়বে। ব্রোঞ্জের ৯ ফুট নটরাজ মূর্তি পেরিয়ে ঢুকলে আদ্যাশক্তির আশীর্বাদী হাত, শিবলোক মন্দিরে ত্রিকাল ও পার্বতী মূর্তি। সেখানে পূজিত হবেন দশভূজা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE