কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে আগেই বসে গিয়েছিল সিসিটিভি। লন্ডনের ধাঁচে কলকাতার মেজো-সেজো রাস্তা বা অলিগলিতে সিসিটিভি লাগানোর পরিকল্পনাও সারা। সিসিটিভি বসে গিয়েছে সল্টলেকের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়েও। অথচ এই নজরদারিতে এখনও বঞ্চিত কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে শহরে ঢোকার অন্যতম প্রবেশপথ ভিআইপি রোড ও নিউ টাউন রোড।
শুধু সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাই নয়, রবিবার থেকে শহরে শুরু হওয়া ফুটবল টুর্নামেন্ট আইএসএল-কে কেন্দ্র করে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্রচুর ভিআইপি সমাগম হবে আগামী কয়েক দিনে, যাঁরা বিমানবন্দর থেকে সোজা নিউ টাউন রোড ধরে ঢুকবেন কলকাতায়। বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশকর্তাদের একাংশও মানছেন, নিউ টাউন রোডের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে সিসিটিভি থাকলে রাস্তায় ভিআইপি-দের গাড়ির নজরদারি আরও জোরালো হতে পারত।
গত কয়েক বছরে নিউ টাউনে শুধু জনবসতিই বাড়েনি, বেড়েছে শপিং মল থেকে সিনেমা হল, রেস্তোরাঁও। গভীর রাত পর্যন্ত এই সব জায়গায় জনসমাগম থাকে। বেশি রাতে দুর্ঘটনা থেকে শুরু করে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ স্বীকার করেছে, নিউ টাউনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়, যেমন যাত্রাগাছি মোড় বা নারকেলবাগান মোড়ও যদি সিসিটিভি-র আওতায় থাকত, তা হলেও তদন্তে কিছুটা সুবিধা হতো।
শুধু নিউ টাউন রোডই নয়, ভিআইপি রোডও সিসিটিভির আওতায় আসা উচিত বলে মনে করছেন এলাকার স্থানীয় মানুষ থেকে শুরু করে পুলিশ মহলের একাংশ। সম্প্রতি ভিআইপি রোডের তেঘরিয়া মোড়ে শেষ রাতে একটি গাড়ি প্রচণ্ড গতিতে ধাক্কা মারে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি দুধের গাড়িতে। দুর্ঘটনায় এক জন প্রাণ হারান। গুরুতর জখম হন আরও ছ’জন। পুলিশ জানায়, রাত তিনটে দশ নাগাদ ওই দুর্ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী ছিল না। ওই মোড়টি যদি সিসিটিভির আওতায় থাকত, সে ক্ষেত্রে কার দোষে, কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা স্পষ্ট হতো। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও নেওয়া যেত।
বাগুইআটি, লেক টাউন এলাকায় রাস্তার ধারে পার্ক করে রাখা বেশ কয়েকটি মোটরবাইক চুরি হয়েছে গত কয়েক মাসে। প্রকাশ্য রাস্তায় দিনের বেলায় ছিনতাই-কেপমারিও ঘটেছে। এলাকাবাসীদের দাবি, ভিআইপি রোডে সিসিটিভির নজরদারি থাকলে দুষ্কৃতীরা এ সব অপরাধমূলক কাজ করতে সাহস পেত না।
অথচ নিউ টাউন রোড ও ভিআইপি রোড সিসিটিভির আওতায় আনার পরিকল্পনা চলছে বেশ কয়েক মাস ধরে। এমনকী নিউ টাউনের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে রাতেও ভাল ছবি উঠবে, এমন উন্নত মানের সিসিটিভি লাগানোর পরিকল্পনার কথা বলেছিল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। কিন্তু অভিযোগ, বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হিডকো চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, “আমাদের ইকো পার্ক থেকে শুরু করে কয়েকটি জায়গায় সিসিটিভি রয়েছে। কিন্তু রাস্তায় সিসিটিভি লাগানোর কথা পুলিশের। আমরা পুলিশকে বলেছি দ্রুত এর ব্যবস্থা করতে।” অন্য দিকে বিধাননগর কমিশনারেটের এডিসিপি সন্তোষ নিম্বলকর অবশ্য আশ্বাস দেন, “হিডকোর সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। দ্রুতই কাজ আরম্ভ হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy