Advertisement
E-Paper

খুনের মামলা রুজু হতেই সাড়ে তিন বছর পার

ছিন্নমস্তক তো বটেই, দু’টো পা-ও নেই। কাটা হাত দু’টো মিলেছিল সেই প্যাকেটেই, যেখানে মোড়া ছিল গলা থেকে পেট পর্যন্ত পুরুষদেহ বা ‘টরসো’। ফলে কার দেহ, বোঝার উপায় ছিল না। ঘটনা ২০১৩-এর সেপ্টেম্বরের। অথচ মাত্র দু’দিন আগে, শুক্রবার ঠাকুরপুকুরের ওই ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৭ ০০:৪৩

ছিন্নমস্তক তো বটেই, দু’টো পা-ও নেই। কাটা হাত দু’টো মিলেছিল সেই প্যাকেটেই, যেখানে মোড়া ছিল গলা থেকে পেট পর্যন্ত পুরুষদেহ বা ‘টরসো’। ফলে কার দেহ, বোঝার উপায় ছিল না। ঘটনা ২০১৩-এর সেপ্টেম্বরের। অথচ মাত্র দু’দিন আগে, শুক্রবার ঠাকুরপুকুরের ওই ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

তবে নিহতের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার উপায় সম্ভবত আর নেই। সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (সিএফএসএল) জানায়, দেহের যে নমুনা পাঠানো হয়েছিল, সেখানে কোষ অক্ষত নেই। ডিএনএ নেওয়া যাবে না। ২০১৩-র পাঠানো নমুনা ২০১৫-এ পরীক্ষার সময় পেয়েছিল সিএফএসএল।

আদালত সূত্রে খবর, ২০১৩-র ১১ সেপ্টেম্বর হাঁসপুকুর খালে মুণ্ড, হাত ও পা-হীন টরসো উদ্ধার হয়। কাছে একটি রিকশা পড়েছিল। ময়না-তদন্তে ধরা পড়ে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে। দেহ উদ্ধারের দু’-এক দিনের মধ্যে রাজনাথপুর কলোনির রেহানা খাতুন দাবি করেন, দেহটি তাঁর ছোট ছেলে নজরুল ইসলামের। ৩৮ বছরের নজরুল রিকশা চালাতেন। রেহানার দাবি ছিল, দেহের কাছে পড়ে থাকা রিকশাটিও তাঁর ছেলের। উদ্ধার হওয়া হাত দু’টির মধ্যে ডান হাতে কাটা চিহ্ন দেখিয়ে বৃদ্ধা বলেন, ওটি নজরুলেরই দেহ। দেহ উদ্ধারের আগের দিন, ১০ সেপ্টেম্বর থেকে নজরুল নিখোঁজ ছিল। থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়। টরসোটি দেখে রেহানা তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে জানিয়ে অভিযোগ করেন। তার পরেও খুনের মামলা রুজু করেনি পুলিশ। শুধু সিএফএসএল-এ ঘটনার ১৫ দিনের মধ্যে দেহের অংশের নমুনা, রেহানা ও তাঁর বড় ছেলের রক্ত ও চুলের নমুনা মিলিয়ে দেখতে পাঠানো হয়।

ঠাকুরপুকুরের তদানীন্তন ওসি, এখন এসি (ইএসডি ওয়ান) কুজল সরকার বলেন, ‘‘ঘটনার পরে আরও মাস চারেক ঠাকুরপুকুরে ছিলাম। তার মধ্যে ময়না-তদন্ত রিপোর্ট মেলেনি। তাই মামলা রুজু হয়নি। ডিএনএ পরীক্ষার ফলের জন্যও অপেক্ষা করছিলাম।’’ পুলিশের অন্দরের খবর, ময়না-তদন্তে খুন হয়েছে বলে বোঝা গেলে অটোপসি সার্জন সাধারণত মৌখিক ভাবে থানাকে জানিয়ে দেন।

এত দিন পরে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত বা সুয়ো মোটো খুনের মামলা রুজু করলেও নিহতকে অজ্ঞাতপরিচয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে, এমনই খবর আলিপুর আদালত সূত্রের। সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় পেরোনোর পর খুনের কিনারা করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে পুলিশ। কলকাতার সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির অধিকর্তা প্রিয়ঙ্কর ঘোষের কথায়, ‘‘মনে হচ্ছে দেহে জল ছিল, তার উপর সংরক্ষণের জন্য ফর্মালিন দেওয়া হয়েছিল। তাই দেহাংশের কোষগুলি অক্ষত অবস্থায় মেলেনি। ক্ষয়ে যাওয়া কোষ থেকে ডিএনএ নেওয়া যায় না।’’

Murder case Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy