Advertisement
E-Paper

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেল গাড়ি, মৃত তিন

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, অত্যন্ত দ্রুতবেগে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন চালক। সম্ভবত ওই বেপরোয়া গতির কারণেই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। গাড়িতে থাকা প্রত্যেকেই গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০২:২৬
বিদ্যাসাগর হাসপাতাল থেকে দুই আহতকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এম আর বাঙুরে। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

বিদ্যাসাগর হাসপাতাল থেকে দুই আহতকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এম আর বাঙুরে। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

মৃতদেহ নিয়ে উড়ালপুল থেকে নেমে আসা এক বেপরোয়া গতির ছোট মালবাহী গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল তিন জনের। আহত আরও আট জন। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সম্প্রীতি সেতুর সামনে বাটা মোড়ে।

ঘড়িতে তখন সন্ধ্যা ৬-১৫ মিনিট। কাটাপুকুর মর্গ থেকে ময়না-তদন্ত করে বছর ষাটের বীরেন্দ্র চক্রবর্তীর দেহ নিয়ে গাড়িতে করে রওনা দিয়েছিলেন প্রশান্ত চক্রবর্তী এবং সুনীল পাঠকেরা। গাড়িটির গন্তব্য ছিল বজবজের পূর্ব নিশ্চিন্তপুর। ওই গাড়িতেই ছিলেন এক পুলিশকর্মী এবং ডোমও। পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রীতি উড়ালপুল থেকে নেমে এসে গাড়িটি সোজা গন্তব্যে না গিয়ে হঠাৎ করেই ডান দিকে ঘুরে যায়। স্থানীয় একটি স্কুলের সামনে প্রতিদিন রিকশা-ভ্যান দাঁড় করানো থাকে। ঘিঞ্জি সেই জায়গায় গিয়ে ধাক্কা মেরে কিছুটা ঘষটে উল্টে যায় গাড়িটি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, অত্যন্ত দ্রুতবেগে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন চালক। সম্ভবত ওই বেপরোয়া গতির কারণেই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। গাড়িতে থাকা প্রত্যেকেই গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ও স্থানীয়েরা হাত লাগিয়ে উদ্ধার করেন আহতদের। দ্রুত ছ’জনকে বজবজ ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তত ক্ষণে রাজদীপ চক্রবর্তী (২৬) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানান। বাকি পাঁচ জনকে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অন্য চার জনকে বেহালার বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দু’জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মৃতদের নাম সমীরণ চক্রবর্তী এবং মোহিত মল্লিক। প্রশান্ত চক্রবর্তী এবং সুনীল পাঠক নামে অন্য দু’জনকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রাজদীপ সম্পর্কে বীরেন্দ্রের ভাইপো। তাঁরা একই বাড়িতে থাকতেন বলে জানা গিয়েছে। অন্য এক আত্মীয় মৃত সমীরণ বজবজের বাওয়ালির বাসিন্দা। মোহিত পেশায় রিকশাচালক। আহত পুলিশকর্মীর চিকিৎসা চলছে বজবজেরই একটি নার্সিংহোমে।

বীরেন্দ্রের পরিবার সূত্রের খবর, এ দিন সকালে ঘর থেকে বীরেন্দ্র চক্রবর্তীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। এর পরে দেহটি ময়না-তদন্ত করে এ দিন সন্ধ্যায় আত্মীয়দের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। ফেরার পথেই ঘটে বিপত্তি। হাসপাতালে শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে বীরেন্দ্রের জামাই সুনীল বলেন, ‘‘উড়ালপুলের মাঝপথ থেকে হঠাৎই গাড়ির গতি ভীষণ বেড়ে গিয়েছিল। আমরা বারবার চালককে আস্তে গাড়ি চালানোর জন্য বলছিলাম।’’

এ দিকে পুলিশের অভিযোগ, বাটা মোড়ের ওই দুর্ঘটনাস্থলে কোনও আলো নেই। দীর্ঘদিন ধরেই এমন পরিস্থিতি। ফলে উড়ালপুল থেকে নেমে আসা গাড়িগুলি যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনার কবলে পড়ার আশঙ্কা আগেই ছিল। এ দিন সেটাই সত্যি হল বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুলিশকর্মীরা। মহেশতলা পুরসভার অন্তর্গত ওই এলাকার কেন এমন পরিস্থিতি? দুর্ঘটনাস্থল সংলগ্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুকান্ত বেরা জানান, কেন ওখানে আলো নেই, তা খতিয়ে দেখা হবে। দ্রুত আলো লাগানোর ব্যবস্থাও করা হবে।

Accident Death Sampriti Flyover
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy