দক্ষিণ দমদম ও দমদম পুরসভা নিজেদের দখলেই ছিল। এ বার ওই দু’টি পুরসভায় আরও কয়েকটি ওয়ার্ড বাড়িয়ে নিজেদের শক্তিবৃদ্ধি করে নিল তৃণমূল। সেই সঙ্গেই উত্তর দমদম পুরসভাও নিজেদের দখলে এনে কার্যত বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করে দিল তারা। দমদমে পরপর জয়ের খবর আসতেই বিধায়ক ব্রাত্য বসু জানিয়ে দিলেন, ‘‘গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।’’
দক্ষিণ দমদমে ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ৩১টি, বামফ্রন্ট ৩টি, ১টি ওয়ার্ডে জয়ী নির্দল প্রার্থী (বিক্ষুব্ধ তৃণমূল)। দমদমে ২২টি আসনে ২১টি তৃণমূল ও ১টি সিপিএম। উত্তর দমদমে ৩৪টি ওয়ার্ডের ২৬টি তৃণমূলের, ৮টি বামফ্রন্টের। গত পুরভোটে দক্ষিণ দমদমে তৃণমূল বোর্ড গড়লেও ১১টি ওয়ার্ড জিতেছিল সিপিএম। এ বার তার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩। দমদমে গত পুরভোটে বাম পেয়েছিল ৮টি ওয়ার্ড। এ বার তা কমে দাঁড়িয়েছে ১টিতে। উত্তর দমদমে পুর-বোর্ড ছিল বামফ্রন্টের। তাদের দখলে ছিল ১৭টি ওয়ার্ড, তৃণমূলের ছিল ১২টি। এ বার ৪৮ বছর পরে বোর্ড উল্টে বাম পেয়েছে ৮টি ওয়ার্ড। দমদমে কোথাও কংগ্রেস জিততে পারেনি। বারাসতে ৩৫টি ওয়ার্ডে তৃণমূল ২৬, বাম ৭, কংগ্রেস ১ ও নির্দল ১টি আসন পেয়েছে। মধ্যমগ্রামে ২৫টি ওয়ার্ডে তৃণমূল ২০, বাম ৭, একটি অমীমাংসিত। নিউ ব্যারাকপুরে ২১টি ওয়ার্ডে তৃণমূল ১৭, কংগ্রেস ২, বাম ২টি আসন পেয়েছে।
বেলা যত গড়িয়েছে, সোদপুর গুরুনানক ডেন্টাল কলেজে গণনাকেন্দ্রের সামনে ততই বেড়েছে তৃণমূল সমর্থকদের ভিড়। পরপর রাউন্ডের ফল বেরোতেই শুরু হয় আবির খেলা। উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙে বেলা ১১টার পরে। ততক্ষণে বেশির ভাগ ওয়ার্ডেরই ১২ রাউন্ড গণনা শেষ। তিনটে পুরসভাই যে তৃণমূলের দখলে যাবে, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।
রজনীগন্ধার মালা হাতে রোদের মধ্যেই ঠায় বসেছিলেন লেকটাউন থেকে আসা এক তৃণমূল সমর্থক। জানালেন, তাঁদের ওয়ার্ডের প্রার্থী সুজিত বসু জয়ের সার্টিফিকেট নিয়ে বেরোলেই গলায় মালা পরাবেন। ততক্ষণে ঢোল বাজিয়ে নাচ-গান শুরু করে দিয়েছেন অন্য সমর্থকেরা।
কিছু দূরেই বিজেপি ও সিপিএম সমর্থকেরা তখন হারের কারণ বিশ্লেষণে ব্যস্ত। কেউ শাসকদলের সন্ত্রাস, কেউ সংগঠনের দুর্বলতাকে দোষ দিচ্ছেন।
দমদমে বিজেপি বা সিপিএম-এর ফল এত খারাপ হল কেন? বিজেপি নেতা তথাগত রায়ের মত, ‘‘লোকসভায় মানুষ যা মাথায় রেখে ভোট দেন, পুরভোটে প্রেক্ষিত সম্পূর্ণ আলাদা। কত শতাংশ ভোট পেয়েছি, সেই হিসেব পেলেই বোঝা যাবে ফল কেমন হয়েছে।’’ সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন মন্ত্রী রেখা গোস্বামীর মতে, ‘‘রাজারহাট-নিউ টাউন থেকে বহিরাগত এনে তৃণমূল ভোট করেছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে এলাকার বিধায়ক তথা এ বারের বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী সুজিত বসু বলেন, ‘‘উন্নয়নই ছিল আমাদের শেষ কথা। মানুষ অবাধে ভোট দিয়েছেন বিকেল ৩টে পর্যন্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy