আমপানের তাণ্ডবে গাছের সঙ্গে সঙ্গে উপড়ে পড়েছিল রাস্তার পাশের বহু বাতিস্তম্ভ। কলকাতা-সহ বহু এলাকার বিদ্যুৎ ও কেব্ল পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। সেই ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় দু’মাস। কিন্তু অভিযোগ, নিউ ব্যারাকপুর, মধ্যমগ্রাম, বারাসত, আমডাঙা, দত্তপুকুর, গোলাবাড়ি এবং দেগঙ্গার বহু জায়গায় এখনও রাস্তার উপরে বা পাশে জট পাকানো অবস্থায় বিপজ্জনক ভাবে পড়ে রয়েছে বৈদ্যুতিক তার এবং কেব্ল। পথ চলতে গিয়ে তাতে হোঁচট খেয়ে পড়ে গুরুতর ভাবে জখম হওয়া তো আছেই, এমনকি বর্ষায় সেই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াতে রীতিমতো আতঙ্ক বোধ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সম্প্রতি দত্তপুকুর থানার কদম্বগাছির হেমন্ত বসু নগর এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় উজান বিশ্বাস নামে ছ’বছরের এক শিশুর। অভিযোগ, আমপানের পরে বেশ কিছু দিন ওই এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে থাকায় পাশের এলাকা থেকে হুকিং করে বিদ্যুৎ নেওয়া হয়েছিল। বর্ষার সময়ে সেই তারেই হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় শিশুটি। আবার বারাসতের বাজিতপুর এলাকায় রাস্তায় পড়ে থাকা কেব্লের জটে হোঁচট খেয়ে দিন দুয়েক আগে হাত ভাঙে এক বৃদ্ধার।
দত্তপুকুর থানার শিবালয়ের বাসিন্দা স্বপন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যেখানে সেখানে তার পড়ে রয়েছে। বৃষ্টিতে ওইসব এলাকা দিয়ে যাতায়াত করতেই ভয় করছে।’’ ওই থানার নরসিংহপুর এলাকায় সাময়িক ভাবে বিদ্যুৎসংযোগ ঠিক করার পরেও রাস্তার পাশে পড়ে ছিল তারের জট। কয়েক দিন আগে বৃষ্টির মধ্যে সেই তারে হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় মহম্মদ সুলেমান নামে ১১ বছরের এক বালকের।
জেলা বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমপানের পরে বিভিন্ন জায়গায় গাছ উপড়ে, সংযোগ ছিঁড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছিল। যত দ্রুত সম্ভব সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা গিয়েছে। তবে এখনও কিছু জায়গায় তার পড়ে থাকার খবর পেয়েই তা সরিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে।’’ লকডাউনের জন্য কর্মী-সমস্যাও এই বিপত্তির অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন তিনি।