E-Paper

রাজ্য পরিবহণের ঘাম ছোটাচ্ছে বাতানুকূল বাস

কার্যত লজ‌্ঝড়ে ওই সব বাস শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রুটে ছুটলেও প্রায়ই বাতানুকূল যন্ত্র কাজ করে না।

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:৪৭
এসি বাসের বাড়ছে খরচ।

এসি বাসের বাড়ছে খরচ। ফাইল চিত্র।

বাস তো নয়, যেন আস্তাবলে থাকা বেতো ঘোড়া। দিনে দিনে পোষার খরচ বেড়েই চলে, এ দিকেসওয়ার হলে বিপদের আশঙ্কা পিছু ছাড়ে না।

শহরের বিভিন্ন রুটে ছুটে চলা রাজ্য পরিবহণ নিগমের ৭৫টি বাতানুকূল বাস নিয়ে এমনই নাজেহাল অবস্থা সংস্থার। বাস নিয়ে উদ্বেগ বাড়লেও প্রতিনিয়ত বইতে হচ্ছে তার ভার। যাত্রীদের ক্ষেত্রেওনিরাপত্তার আশঙ্কা বাড়ছে। গত এক বছরে কয়েক মাসের ব্যবধানে তিন তিনটি বাস রাস্তায় আচমকা আগুন লেগে ভস্মীভূত হয়েছে।ভাগ্যক্রমে ওই সব দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।

কিন্তু, কার্যত লজ‌্ঝড়ে ওই সব বাস শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রুটে ছুটলেও প্রায়ই বাতানুকূল যন্ত্র কাজ করে না। বাসেরভিতরের আসনের মাথার দিকে বসানো পাখা ঘোরে না। ইঞ্জিন থেকে নিয়ত কর্কশ শব্দ বেরিয়ে আসে।এমন দূরবস্থা নিয়েই ওই সব বাস বিমানবন্দরকেন্দ্রিকগুরুত্বপূর্ণ রুটে ছুটছে। এসি-১২, এসি-৩৭, এসি-৩৭ এ, এসি-২৪, এসি-৩৯ ছাড়াও ভি-১, ভি-২ এবং আরও ওই সব বাস নানা রুটে ছুটছে।

গত এক বছরে প্রায় একই কায়দায় পিছনে ইঞ্জিনযুক্ত ওই সব বাসে তিন বার অগ্নিকাণ্ডঘটেছে। আচমকা বাসের সামনের দিকের নীচ থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে। কিছু ক্ষণের মধ্যে আগুনের গ্রাসে চলে যায় আস্তবাস। গড়িয়া, বেলঘরিয়া, মানিকতলা ডিপোর তিনটি বাস এ পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়েছে। মাসখানেক আগে ভিআইপিরোডে একটি খালি বাসে আগুন লাগে।

একটি সর্বভারতীয় বেসরকারি সংস্থার তৈরি ওই সব বাসপরিবহণ জগতে ‘জন-বাস’ নামে পরিচিত। বছর দশেক আগে বাজারে আসা ওই বাস এই মুহূর্তে রাজ্য পরিবহণ নিগম ছাড়া সারা দেশের আর কোথাও চলে না বলে সূত্রের খবর। দক্ষিণের কয়েকটি রাজ্যে ওই বাস চালু হওয়ার পরে ত্রুটিধরা পড়তেই বসিয়ে দেওয়া হয়। বাস নির্মাণকারী সংস্থাও ওই বাসের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ায় যন্ত্রাংশ মেলে না। ফলে, রক্ষণাবেক্ষণের টাকা এলেও তার সদ্ব্যবহারের উপায় থাকে না।

পুরনো বিকল যন্ত্রাংশ নিয়ে ছুটে চলা ওই সব বাস এক লিটার ডিজেলে মাত্র ১.২ কিলোমিটার পথ চলে। ফলে, যে বাস চালিয়ে পরিবহণ দফতরের আয় বাড়ার কথা, তা এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৭৫টি বাসের মধ্যে ৬০টি ১২ মিটারের বড়বাস। বাকি ১৫টি মাঝারি আকারের বাস।

এখনই বিকল্প মজুত না থাকায় ওই বাস রাতারাতি বাতিল করে ঝেড়ে ফেলা যাচ্ছে না। আবার পরিষেবা দিতে নিশ্চিন্তে ব্যবহার করাও যাচ্ছে না। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা, বিপত্তির আশঙ্কা এবং আর্থিক ক্ষতির বোঝা নিয়েই বাস চালাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। ওই সব বাস কবে কী ভাবে সরানো হবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে আধিকারিকদের।

পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, সিএনজি চালিত বাতানুকূল বাসের বরাত দেওয়া হয়েছে। সে সব বাস ধাপে ধাপে পুজোর পরেআসতে শুরু করবে। নতুন বাস হাতে পেলে তবেই পরিষেবার কিছুটা উন্নতি হতে পারে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Transport Department

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy