Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মারে মাথা ফাটল যাত্রীর, গ্রেফতার দুই অটোচালক

যাত্রীদের সঙ্গে অটোচালকদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ নতুন নয়। অটোচালকের হাতে যাত্রীর নিগৃহীত হওয়ার ঘটনারও সাক্ষী থেকেছে এই শহর।

অভিজিৎ বিশ্বাস

অভিজিৎ বিশ্বাস

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

যাত্রীদের সঙ্গে অটোচালকদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ নতুন নয়। অটোচালকের হাতে যাত্রীর নিগৃহীত হওয়ার ঘটনারও সাক্ষী থেকেছে এই শহর। সেই পথে হেঁটেই এ বার দমদমে এক যাত্রীকে মেরে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠল অটোচালকদের বিরুদ্ধে। যদিও দমদম ক্যান্টনমেন্ট-নাগেরবাজার রুটের অটো ইউনিয়নের দাবি, পুরো ঘটনায় ইন্ধন জুগিয়েছেন অভিযোগকারী যাত্রীই। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সকালে। সুভাষনগর থার্ড বাইলেনের বাসিন্দা, পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অভিজিৎ বিশ্বাস প্রতিদিন ডালহৌসির অফিসে যাওয়ার জন্য দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন চত্বর থেকে নাগেরবাজারের অটো ধরেন। অভিজিতের অভিযোগ, সে দিন নাগেরবাজার স্ট্যান্ডে নামার সময়ে পিছন থেকে একটি অটো তাঁর পায়ে ধাক্কা মারে। অভিজিতের কথায়, ‘‘প্রতিবাদ করলে স্ট্যান্ডে উপস্থিত অটোচালকেরা গালিগালাজ করতে শুরু করেন। আমি পাল্টা সুর চড়ালে চড়-থাপ্পড় মারা হয়।’’ আক্রান্ত তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী জানান, ওই গোলমালে সব চেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলেন অটো স্ট্যান্ডের স্টার্টার এবং এক জন অটোচালক।

বৃহস্পতিবারের ঘটনা শুক্রবার সন্ধ্যায় অন্য মাত্রা নেয়। অভিযোগকারী জানান, অফিস থেকে ফেরার পথে শুক্রবার ক্যান্টনমেন্ট অটো স্ট্যান্ডে ওই স্টার্টারকে তিনি দেখতে পান। বৃহস্পতিবারের ঘটনা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। অভিজিতের কথায়, ‘‘আমি বলি, ওদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাব। সে কথা শুনে ইউনিয়ন অফিস থেকে বাকিরা বেরিয়ে আমার উপরে চড়াও হয়। এক জন পিছন থেকে ধরে মাটিতে ফেলে দেয়।। ওই অবস্থায় কেউ ভারী কিছু দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে।’’ এর পরে রক্তাক্ত অবস্থায় দমদম থানায় যান অভিজিৎ। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়। অভিজিৎ বলেন, ‘‘এমন মেরেছে যে, আমার মাথায় পাঁচটা সেলাই পড়েছে।’’

বৃহস্পতিবারের ঘটনাস্থল থেকে দমদম থানার অন্তর্গত কামারডাঙা ফাঁড়ির দূরত্ব বেশি নয়। নাগেরবাজার ট্র্যাফিক পুলিশের কিয়স্কও কাছেই। তা হলে প্রথম দিনই পুলিশের দ্বারস্থ হলেন না কেন? অভিজিৎ বলেন, ‘‘অফিসের তাড়া ছিল বলে অটো ধরে মেট্রো স্টেশন চলে যাই।’’

অটো ইউনিয়নের সহকারী সম্পাদক মিন্টু দে-র বক্তব্য, ‘‘নাগেরবাজার স্ট্যান্ডে স্কুলের সময়ে যাতে যানজট না হয়, তার জন্য সে দিন রাস্তা থেকে অটোগুলি সরানো হচ্ছিল। ওই যাত্রীর কানে হেডফোন ছিল। অসাবধানতাবশত ধাক্কা লেগে যায়। তাতে উনি গালিগালাজ করতে থাকেন। দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলেও কেউ মারধর করেনি।’’ বিষয়টি তখন মিটে গিয়েছিল বলেই দাবি করেছে অটো ইউনিয়ন। মিন্টুবাবু বলেন, ‘‘পরদিন স্টার্টার বিশ্বজিৎ বলের কলার ধরে উনি বলেন, চল থানায় চল। আটকাতে গেলে আমারও কলার ধরেন। এর পরেই অটোচালকেরা উত্তেজিত হয়ে গায়ে হাত তোলে। সেই সময়ে কোনও ভাবে পড়ে যাওয়ার ওঁর মাথা ফেটেছে। কেউ আঘাত করেনি।’’ পুলিশ জানায়, প্রশান্ত রায় ও বিশ্বজিৎ বল নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্টার্টার বিশ্বজিৎ অটোও চালান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Beating Auto Rickshaw Arrest Injury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE