একই পরিবারের দুই সদস্যের দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার অধীন পটলডাঙা স্ট্রিট এলাকায়। শুক্রবার সন্ধ্যার ঘটনা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। দেহ এন আর এস হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃত দুই ব্যক্তির নাম মৃণাল বসু ওরফে পলাশ (৭৫) এবং নীলাঞ্জন বসু (৫০)। পুলিশ সূত্রের খবর, সম্পর্কে ওই দুই ব্যক্তি কাকা-ভাইপো। কারও দেহে বাইরে থেকে আঘাতের চিহ্ন মেলেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ৪৫ নম্বর পটলডাঙা স্ট্রিটে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়ায় বসবাস করতেন মৃণাল ও নীলাঞ্জন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বাজারে তাঁদের দেনা ছিল। এ দিনও কয়েক জন পাওনাদার এসে ডাকাডাকি করেন। তবে, দু’জনের কারও সাড়া মেলেনি। তখন পাওনাদারেরাই প্রতিবেশীদের খবর দেন। তাঁর গিয়ে ডেকেও সাড়া না পাওয়ায় খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ এলে দরজা খুলে ভিতরে ঢোকে।
৪৫ নম্বর পটলডাঙা স্ট্রিটের সাহা ভিলা নামে ওই বাড়ির অপর এক ভাড়াটে জানান, তাঁরা বেশ কয়েকটি পরিবার সেখানে বসবাস করেন। এ দিন দুপুরের পরে তিনি স্ত্রীর কাছে জানতে পারেন, দুপুরথেকে কয়েক জন পাওনাদার এসে মৃণাল ও নীলাঞ্জনকে ডাকাডাকি করছেন। কিন্তু কোনও সাড়া মিলছে না। বিকেল গড়িয়ে যাওয়ার পরেও সাড়া না মেলায় সন্দেহ হয় পাওনাদারদের।
এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। তবে এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি। ওই বাড়ির মালিক রাজীব সাহা জানান, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে মৃণাল ওই বাড়িতে সপরিবার বসবাস করতেন। তাঁর বাবা, মা, ঠাকুরমা আগেই প্রয়াত হয়েছেন।
বর্তমানে মৃণাল এবং তাঁর ভাইপো নীলাঞ্জন বসু, পাড়ায় যিনি বাবু নামে অধিক পরিচিত, বসবাস করছিলেন। রাজীব জানিয়েছেন, ওই দু’জন পুরসভার মিউটেশন করিয়ে দেওয়া-সহ একাধিক কাজ করতেন বলেই তিনি জানতেন। রাজীব আরও জানান, পুলিশ এসে দরজা খুললে দেখা যায়, একটি ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছেন মৃণাল। পাশের ঘরে পড়ে রয়েছেন তাঁর ভাইপো।
পুলিশ সূত্রের খবর, ময়না তদন্তে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, সম্ভবত বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)