Advertisement
E-Paper

গুলিতে বিপদ দেখছেন গোয়েন্দারা

বু‌ধবার রাতে মেটিয়াবুরুজ এলাকা থেকে লালবাজারের নার্কোটিক সেল-এর গোয়েন্দারা মহম্মদ জানে আলম ওরফে খান এবং মহম্মদ সালাউদ্দিনকে গ্রেফতার করেছেন। তাদের কাছেই মিলেছে চরসের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি।

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৬

পরিমাণে এক কেজি, মানে লাখ দুয়েক টাকার চরস। দু’জন দাগি মাদক কারবারির কাছ থেকে ওই জিনিস উদ্ধার একেবারেই অস্বাভাবিক নয়। তবে শুধু চরস তো নয়, দু’টো বন্দুক ও ১৪ রাউন্ড গুলিও মিলেছে তাদের কাছ থেকে। আর এতেই বিপদ দেখছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তাঁদের একাংশের প্রশ্ন, বন্দুকের সঙ্গে এত গুলি সঙ্গে রাখার অর্থ কী, বন্দরের মাদক কারবারিদের মধ্যে কোনও ‘গ্যাং ওয়ার’ বা এলাকা দখলের লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে!

বু‌ধবার রাতে মেটিয়াবুরুজ এলাকা থেকে লালবাজারের নার্কোটিক সেল-এর গোয়েন্দারা মহম্মদ জানে আলম ওরফে খান এবং মহম্মদ সালাউদ্দিনকে গ্রেফতার করেছেন। তাদের কাছেই মিলেছে চরসের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি। প্রথমে বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে ও তার পরে শনিবার তাদের বিচার ভবনে মাদক সংক্রান্ত মামলার বিচারের জন্য নির্ধারিত বিশেষ আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক ওই দু’জনকে চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, জানে আলম ওরফে খান এক জন দাগি মাদক ব্যবসায়ী। ২০০৭ সালেও চরস নিয়ে ধরা পড়েছিল রাজাবাজারের ওই যুবক। গত দু’মাস ধরে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে সে মেটিয়াবুরুজে সালাউদ্দিনের কাছে থাকছিল। হিমাচল প্রদেশের মানালি থেকে কলকাতায় খানের কাছে নিয়মিত চরস আসছে বলে খবর পেয়ে তাকে খুঁজে বে়ড়াচ্ছিলেন গোয়েন্দারা। এ দিকে খানকে পেয়ে বন্দর এলাকার মাদক কারবারি মহম্মদ সালাউদ্দিনের হাত শক্ত হয়।

লালবাজারের এক কর্তা জানান, সালাউদ্দিন ও খান মিলে যাওয়ায় তাদের প্রতিপক্ষ বোম্মাইয়া শাকিল ও চাঁদের গোষ্ঠী বিপদের গন্ধ পেয়েছিল। সালাউদ্দিনের মতো ওই গোষ্ঠীও কাজ করে বন্দরের রাজাবাগান, মেটিয়াবুরুজ ও নাদিয়াল এলাকায়। সালাউদ্দিনের দল শক্তিশালী হওয়ায় তারাও তলে তলে তৈরি হচ্ছিল এদের মোকাবিলা করার জন্যে। ‘‘মনে হচ্ছে, দু’টো গোষ্ঠীই বহু দিনের পুরনো হিসেব মেটাতে অস্ত্রশস্ত্র জোগাড় করেছে। একটা দলের দুই চাঁই ও অস্ত্রশস্ত্র আমরা পেয়ে গেলাম। এ বার অন্য দলের লোকদের অস্ত্র-সহ ধরাটাই চ্যালেঞ্জ,’’ বলছেন ওই কর্তা।

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, অন্য দুষ্কৃতীদের মতো মাদক কারবারিদের নিজেদের গোষ্ঠীবাজিও স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু শোধ তুলতে বা অন্য গোষ্ঠীকে বিপদে ফেলতে এদের পুরনো কায়দা হল, প্রতিপক্ষের খবর পুলিশের কাছে পাচার করে দেওয়া। যাতে বমাল ধরা পড়ে যায় অন্য দলের লোকজন। কিন্তু এলাকা দখলের জন্য গুলির লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে মাদক কারবারিদের দু’টো দল, কলকাতায় এটা ব্যতিক্রমী ঘটনা বলেই মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ।

পুলিশ জানায়, সালাউদ্দিনের কাছে মিলেছে একটি সেভেন এমএম পিস্তল ও ছ’টি গুলি। একটি ওয়ান শটার এবং ৩১৫ বোরের আটটি গুলি খানের কাছে পাওয়া গিয়েছে।

এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘অন্য দলের লোকজন যাতে ঝট করে ভয় দেখাতে না পারে, সেই জন্য মাদক কারবারিদের কেউ কেউ সঙ্গে বন্দুক রাখে। দু’-একটা কার্তুজও থাকে। কিন্তু এক জনের কাছে আট, আর এক জনের কাছে ছ’রাউন্ড গুলি! এটাই চিন্তার কারণ।’’

drug dealer arrest Illegal arms
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy