Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Jadavpur University

শব্দসন্ধানী ড্রোন নিয়ে বিশ্ব-মঞ্চে শহরের দুই পড়ুয়া

স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের ওই দুই পড়ুয়া অন্বেষা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অচল নিলহানি জানালেন, তাঁদের তৈরি ড্রোন শব্দ রেকর্ড করতে পারবে।

উদ্ভাবন: নতুন ড্রোন নিয়ে অন্বেষা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অচল নিলহানি। শুক্রবার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

উদ্ভাবন: নতুন ড্রোন নিয়ে অন্বেষা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অচল নিলহানি। শুক্রবার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৫৩
Share: Save:

এ-ও এক ড্রোন। তবে সাধারণ ড্রোনের থেকে একটু আলাদা। সাধারণত ড্রোন যেখানে ছবি বা ভিডিয়ো রেকর্ড করতে পারে, সেখানে এই ড্রোন চিনে নেবে শব্দ। জানিয়ে দেবে তার উৎসও। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিনিউকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই পড়ুয়া তাঁদের তৈরি এমনই ড্রোন নিয়ে অংশ নিতে চলেছেন নাইরোবিতে এক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়।

স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের ওই দুই পড়ুয়া অন্বেষা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অচল নিলহানি জানালেন, তাঁদের তৈরি ড্রোন শব্দ রেকর্ড করতে পারবে। ফলে সেই শব্দ অনুসরণ করে সহজ হবে কিছু খুঁজে বার করা। উদাহরণ দিয়ে তাঁরা জানান, অনেক সময় জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে বোঝা যায় কাছাকাছি কোথাও লুকিয়ে আছে সে। এই ড্রোন দিয়ে বাঘের গলার আওয়াজ রেকর্ড করে সহজেই তার অবস্থান বোঝা যাবে। আবার ভূমিকম্প বা কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ধ্বংসস্তূপে কেউ আটকে পড়লে সেই শব্দ চিনেও তাঁকে খুঁজে বার করবে ড্রোন। অচল বলেন, ‘‘কুয়াশায়, ধোঁয়ায়, গভীর জঙ্গলে, খুব কম আলোতেও কাজ করবে এই যন্ত্র।’’ আর অন্বেষার কথায়, ‘‘যাঁরা কিছু খুঁজছেন, শব্দের রেকর্ডিং তাঁদের কাছে পৌঁছে যাবে। কোথা থেকে সেই শব্দ আসছে, তা-ও জানা যাবে অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ-সহ।’’

এই ড্রোন বানাতে দুই পড়ুয়াকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন বিভাগীয় শিক্ষক পি ভেঙ্কটেশ্বরন। তিনি জানালেন, আমেরিকার একটি সংস্থার উদ্যোগে নাইরোবিতে আগামী মঙ্গলবার হবে এই প্রতিযোগিতা। যার পোশাকি নাম ‘আনইউজুয়াল সলিউশন্‌স কম্পিটিশন’। ইতিমধ্যেই এই ড্রোন তৈরি এবং গবেষণার জন্য মার্কিন ওই সংস্থার থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা পেয়েছেন অন্বেষা। মোট ন’টি দেশের প্রতিযোগীরা পৌঁছেছেন চূড়ান্ত পর্যায়ে। অন্বেষা এবং অচলের পাশাপাশি আর্জেন্টিনা, ক্যামেরুন, কেনিয়া, জিম্বাবোয়ের প্রতিযোগীরাও রয়েছেন তাঁদের উদ্ভাবন নিয়ে। বিচারকদের আসনে থাকছেন হার্ভার্ড-সহ বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞেরা। প্রতিযোগিতায় প্রথম হলে এক লক্ষ মার্কিন ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭২ লক্ষ টাকা পাবেন প্রতিযোগীরা।

তৃতীয় বর্ষের অন্বেষা এবং অচল তাঁদের তৈরি ড্রোনকে আরও কুশলী করতে চান। যাতে বন্যা, বজ্রপাতের সময়েও সেই যন্ত্র কাজ করে, তা নিয়েই তাঁরা গবেষণা চালাচ্ছেন। আপাতত দুই পড়ুয়ার ‘পাখির চোখ’ নাইরোবি। জগৎসভায় ড্রোনের কেরামতি দেখাতে কাল, রবিবার সে দেশের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE