E-Paper

বেলঘরিয়ায় বিষাক্ত গ্যাসে মৃত্যু কারখানার দুই কর্মীর, অসুস্থ এক

সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই কর্মীদের দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে কাজ করানো এবং দু’জন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় কারখানার মালিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কারখানাটির লাইসেন্স-সহ অন্য বৈধ নথিপত্র আছে কিনা, খতিয়ে দেখছেন কামারহাটি পুর কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ০৯:২৯
নিকেল তৈরির কারখানায় মজুত থাকা রাসায়নিকের বিষাক্ত গ্যাস থেকেই মৃত্যু বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিকেল তৈরির কারখানায় মজুত থাকা রাসায়নিকের বিষাক্ত গ্যাস থেকেই মৃত্যু বলে জানিয়েছে পুলিশ। —প্রতীকী চিত্র।

কেউ দৌড়ে বেরিয়ে আসছেন। কেউ বেরোনোর চেষ্টা করেও কারখানার গেটের সামনেই অচৈতন্য হয়ে লুটিয়ে পড়ছেন। এমনটা দেখে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তড়িঘড়ি সকলকে উদ্ধার করে পাশের অন্য কারখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অচৈতন্য তিন কর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বেলঘরিয়ায়। নিকেল তৈরির কারখানায় মজুত থাকা রাসায়নিকের বিষাক্ত গ্যাস থেকেই তা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই কর্মীদের দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে কাজ করানো এবং দু’জন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় কারখানার মালিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কারখানাটির লাইসেন্স-সহ অন্য বৈধ নথিপত্র আছে কিনা, খতিয়ে দেখছেন কামারহাটি পুর কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দু’জনের নাম রবীন আইচ (৬০) ও সুরজিৎ মাইতি (৫৫)। অসুস্থ শ্রমিকের নাম গোবিন্দ নন্দী। তিনি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন।

বেলঘরিয়া থানা এলাকার আগরপাড়ার শালপাতা বাগানে রয়েছে ‘ইউনাইটেড ইলেকট্রো-কেম ইন্ডাস্ট্রি’ নামের ওই কারখানা। সেখানে নিকেল তৈরি হত। তার জন্য থাকা গ্যাস চেম্বার আগেই বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু রাসায়নিক মজুত করা ছিল একটি বড় ড্রামে। বহু পুরনো সেই ড্রাম পরিষ্কারের জন্য রাসায়নিক বার করতে গিয়েই বিপত্তি ঘটে বলে জেনেছেন তদন্তকারীরা। স্থানীয়েরা জানান, আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি। ওই রাতে আচমকাই কয়েক জন শ্রমিককে চিৎকার করতে করতে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। ওই শ্রমিকেরা বাইরে এসে বসে পড়েন। ঠিক মতো শ্বাস নিতে পারছিলেন না তাঁরা। স্থানীয় কয়েক জন কারখানার সামনে যেতেই দেখেন, গেটের সামনে পড়ে রয়েছেন তিন শ্রমিক। তাঁদের সাগর দত্তে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে আসে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ ও দমকলের একটি ইঞ্জিন। কারখানা সিল করে দেওয়া হয়।

এ দিন ওই কারখানার মালিক, খড়দহের বাসিন্দা অলোক বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দূষণ ছড়ানো এবং অবহেলার কারণে মৃত্যুর ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বরাহনগরের বাসিন্দা রবীন এবং পানিহাটির সুরজিৎ দীর্ঘ দিন ধরে ওই কারখানায় কাজ করেছেন। এ দিন ময়না তদন্তের পরে পরিবারের হাতে তাঁদের দেহ তুলে দেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, আচমকাই বিষাক্ত গ্যাস ফুসফুসে ঢুকে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সকলে। তাতেই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। ব্যারাকপুরের উপ-নগরপাল (দক্ষিণ) অনুপম সিংহ বলেন, ‘‘কোন গ্যাসের কারণে এমন ঘটনা ঘটল, তা জানতে ফরেন্সিক দলকে খবর দেওয়া হয়েছে। কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া কী ভাবে কারখানা চলছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

police investigation Belgharia

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy