Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Clash

Kasba Clash: দুই দলের সংঘর্ষে ফের উত্তপ্ত কসবা, আহত দুই

এলাকায় দিন দিন দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বাড়তে থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

গোলমালের পরে রাস্তায় পড়ে গাড়ির ভাঙা টুকরো। রবিবার, কসবার ত্রিবর্ণ মোড়ে।

গোলমালের পরে রাস্তায় পড়ে গাড়ির ভাঙা টুকরো। রবিবার, কসবার ত্রিবর্ণ মোড়ে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২১ ০৭:৪৮
Share: Save:

মধ্যরাতে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল কসবার ত্রিবর্ণ মোড়। এলাকা ঘিরে বেশ কিছু ক্ষণ ধরে বোমাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ। চলে ভাঙচুর ও মারধর। রাস্তায় ফেলে মাথায় ইটের আঘাত করা হয় বলেও অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, দু’দলের মধ্যে ধারালো অস্ত্র নিয়েও চলে মারামারি। এই ঘটনায় দু’জন আহত হয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত দু’জনের নাম আশিস ঠাকুর ও রবি চৌধুরী। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এলাকায় দিন দিন দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বাড়তে থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ গোলমালের সূত্রপাত। ওই রাতে ত্রিবর্ণ মোড়ের কাছে বসেছিলেন কয়েক জন যুবক। আচমকা পর পর বেশ কয়েকটি মোটরবাইক এসে তাঁদের ঘিরে ধরে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি, বাঁশ, কাচের বোতল দিয়ে তাঁদের উপর হামলা করা হয় বলেই অভিযোগ। চলে দেদার বোমাবাজি। শুধু তা-ই নয়, বেশ কয়েক জনকে মাটিতে ফেলে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় বলেও অভিযোগ। দু’পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। তাঁরা জানাচ্ছেন, ১০ থেকে ১২টি বোমার আওয়াজ পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি, বেশ কয়েকটি মোটরবাইকও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রায় ২০-২৫ মিনিট ধরে গোলমাল চলায় পর মোটরবাইক নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। খবর পেয়ে রাতেই কসবা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তিন জনকে উদ্ধার করে বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে এক জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও আশিস ঠাকুর ও রবি চৌধুরী নামে দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে কসবা থানায় বেশ কয়েক জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

শনিবার রাতে মুন্না পাণ্ডে নামে এক প্রোমোটার ও তাঁর দলবল আচমকা হামলা করে বলেই অভিযোগ উঠেছে। মুন্না-সহ দুই গোষ্ঠীর বেশ কয়েক জন বিরুদ্ধে একাধিক পুরনো অভিযোগ রয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘‘রাতে হঠাৎ বোমার আওয়াজ ও ভাঙচুরের শব্দ পাই। বাইরে বেরিয়ে দেখি, রাস্তায় প্রচুর ছেলে এ দিক ও দিক ছোটাছুটি করছে। বেশ কয়েক জনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। আতঙ্কে ঘরে চলে যাই।’’ স্থানীয় ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর সুশান্তকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘ঘটনার জেরে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত। পুলিশকে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।’’ এ দিকে শনিবার রাতে ঘটনার পরেই ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করে পুলিশ। রবিবারও দিনভর
এলাকায় পুলিশি টহল চলে। ঘটনার তদন্তে নেমে এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

রাতের সংঘর্ষের পরে বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে, রবিবার সকালেও রাস্তায় ছিল রক্তের দাগ। আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে গোটা এলাকায়। বাসিন্দারা সংঘর্ষের বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রোমোটিং নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই এলাকার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা চলছিল। তার সূত্র ধরেই শনিবার রাতের সংঘর্ষের সূত্রপাত।

সাম্প্রতিক অতীতে কসবায় একাধিক দুষ্কৃতী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রোমোটিং নিয়ে বিবাদের কারণই উঠে এসেছে তদন্তে। সপ্তাহ কয়েক আগেই প্রোমোটিং নিয়ে বিবাদকে কেন্দ্র করে কসবার বোসপুকুর এলাকায় বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের মারধর করা হয়। শনিবার রাতে ফের গোলমালের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Clash kasba
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE