Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
rohinga

জাল নথি দিয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট, কুয়ালালামপুর যেতে গিয়ে জালে ২ রোহিঙ্গা তরুণী

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই দালালের মাধ্যমেই জাল নথি দিয়ে তরুণীদের পাসপোর্ট বানানো হয়েছিল। পুলিশের অনুমান একটি আন্তর্জাতিক চক্র রয়েছে এর পিছনে।

ধৃত দুই তরুণী। —নিজস্ব চিত্র।

ধৃত দুই তরুণী। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯ ১৯:১২
Share: Save:

জাল নথি দিয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট বানিয়ে মালয়েশিয়া যেতে গিয়ে ধরা পড়লেন দুই রোহিঙ্গা তরুণী। ধৃত দুই তরুণীর সঙ্গেই পুলিশের জালে ধরা পড়েছে ভারতীয় এক দালাল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই দালালের মাধ্যমেই জাল নথি দিয়ে তরুণীদের পাসপোর্ট বানানো হয়েছিল। পুলিশের অনুমান একটি আন্তর্জাতিক চক্র রয়েছে এর পিছনে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১ এবং ২২ বছর বয়সী দুই তরুণী শনিবার রাতের কুয়ালালামপুরগামী বিমান একে-৬২ ধরার জন্য দমদমে বিমানবন্দরে হাজির হন।

দুই তরুণীর পাসপোর্ট অনুযায়ী, তাঁদের নাম রফিকা খাতুন এবং নুর কায়দা খাতুন। দু’জনেরই ঠিকানা পশ্চিম বর্ধমানের কুলটি থানা এলাকার দিশেরগড়। কিন্তু অভিবাসন দফতরের কর্মীদের সন্দেহ হয়, ওই দুই তরুণীর বলা বাংলার টানে।

আরও পড়ুন: প্রায়ই মাল্টিটাস্কিং করেন? অজান্তেই নিজের কী ক্ষতি করছেন জানেন?

তাঁদের কথার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বাংলার মিল না থাকায় অভিবাসন দফতরের কর্মীরা তাঁদের জেরা করা শুরু করেন। গোটা বিষয়টি জানানো হয় বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী(সিআইএসএফ)-কে।

সিআইএসএফ এবং অভিবাসন দফতরের কর্মীদের জেরায় ওই দুই তরুণী স্বীকার করেন যে, তাঁরা আদতে মায়ানমারের আরাকান বা রাখাইন প্রদেশের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় রফিকা জানিয়েছেন, তিনি টাঙ্গাইলের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ছিলেন। সেখান থেকে ছ’মাস আগে দালালদের হাত ধরে চোরা পথে ভারতে ঢোকেন। অন্য তরুণী জানিয়েছেন তাঁর জন্ম আরাকান প্রদেশে। খুব ছোটবেলায় তিনি কক্সবাজার এলাকায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ছিলেন। তিনিও প্রায় ছ’মাস আগে চোরা পথে এ রাজ্যে আসেন।

সিআইএসএফ সূত্রে খবর, ওই দুই তরুণীর সঙ্গে কুয়ালালামপুর যাচ্ছিলেন কল্লোল মিত্র নামে সিউড়ির এক ব্যক্তি। অভিবাসন দফতরের আধিকারিকরা তাঁকেও আটক করেছিলেন ওই দুই তরুণীর সঙ্গে। রোহিঙ্গা তরুণীদের জেরা করে জানা যায়, কল্লোল মিত্রই তাঁদের পাসপোর্ট-সহ কুয়ালালামপুরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: অসুখ রুখতে চিনি বা কৃত্রিম চিনি ভুলে যান, তার বদলে রান্না করুন এ সব দিয়ে

জেরায় ওই দুই তরুণী তদন্তাকারীদের জানিয়েছেন, কল্লোল মিত্র তাঁদের মালয়েশিয়াতে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন বলেও কথা দিয়েছিলেন। ওই দুই তরুণীর কয়েকজন আত্মীয় রয়েছেন মালয়েশিয়াতে। তবে তদন্তকারীদের অনুমান, চাকরির টোপ দিয়ে ওই তরুণীদের পাচারের চেষ্টা করেছিলেন কল্লোল। রবিবার বিকেলে সিআইএসএফ বিমানবন্দর থানার হাতে তুলে দেয় তিনজনকেই। পুলিশ তিনজনকেই গ্রেফতার করে। সোমবার তাঁদের আদালতে পেশ করা হয়। কল্লোলকে জেরা করার জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। আদালত চারদিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছে।

গোটা ঘটনা চিন্তায় ফেলেছে গোয়েন্দাদের। রোহিঙ্গারা যে এখনও প্রায় অবাধে সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে চলে আসছে এবং এখানকার চক্রের হাত ধরে যে তাঁরা ভারতীয় নথিও তৈরি করে ফেলছেন, সেটাই চিন্তার গোয়েন্দাদের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE