Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta Medical College

শয্যা জোগাড় করে রোগীর পাশে চিকিৎসকেরা

এ দিন কিশোরীর মামা সুমন্ত সোরেন জানান, ভর্তির দু’দিন পরে মঙ্গলবার বাঁকুড়া হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করানো হয়। পরদিন রিপোর্টে দেখা যায়, তার ডান দিকের শ্বাসনালীতে কুলের বীজ আটকে রয়েছে। সুমন্তের কথায়, ‘‘রিপোর্ট দেখেই চিকিৎসকেরা কলকাতায় নিয়ে যেতে বলেন। টাকা জোগাড় করে কলকাতায় নিয়ে যেতে আরও এক দিন দেরি হয়।’’

বিপন্মুক্ত: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পিঙ্কি (বাঁ দিকে)। তার গলায় আটকে ছিল এই বীজটি। নিজস্ব চিত্র

বিপন্মুক্ত: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পিঙ্কি (বাঁ দিকে)। তার গলায় আটকে ছিল এই বীজটি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২০ ১০:৩০
Share: Save:

দিন সাতেক আগে কুলের বীজ শ্বাসনালীতে আটকে গিয়েছিল। শুক্রবার রাতে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ১২ বছরের পিঙ্কি হাঁসদাকে যখন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয় তখন কিশোরীর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক। হাসপাতালে শয্যা না থাকা সত্ত্বেও পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা রোগীর পরিজনদের মুখে হাসি ফোটালেন ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকেরা।

গত ১১ জানুয়ারি বিকালে কুল খাওয়ার সময়ে হাসতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। সন্ধ্যা থেকে পেটে এবং বুকে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয় পুরুলিয়ার কাশীপুরের বাসিন্দার। ওই দিনই বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে পিঙ্কিকে ভর্তি করেন তার পরিজনেরা। এ দিন কিশোরীর মামা সুমন্ত সোরেন জানান, ভর্তির দু’দিন পরে মঙ্গলবার বাঁকুড়া হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করানো হয়। পরদিন রিপোর্টে দেখা যায়, তার ডান দিকের শ্বাসনালীতে কুলের বীজ আটকে রয়েছে। সুমন্তের কথায়, ‘‘রিপোর্ট দেখেই চিকিৎসকেরা কলকাতায় নিয়ে যেতে বলেন। টাকা জোগাড় করে কলকাতায় নিয়ে যেতে আরও এক দিন দেরি হয়।’’

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রের খবর, পিঙ্কিকে শুক্রবার রাত দশটা নাগাদ জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে পরীক্ষা করে ইএনটি-তে পাঠান হয়। কিন্তু সেখানে শয্যা ছিল না। এজরা বিল্ডিংয়ে ইএনটি-র পাশাপাশি মনোরোগের বিভাগ রয়েছে। কিশোরীর চিকিৎসার সুবিধার্থে সেখানে শয্যা পাওয়ার চেষ্টা করা হয়। তা না পেয়ে গ্রিন বিল্ডিংয়ে খোঁজ করেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু পাওয়া যায়নি। এ দিকে পিঙ্কি তখন প্রায় নেতিয়ে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত অস্থি বিভাগে একটি শয্যা খালি পাওয়া যায়।
ছাত্রীর মামা বলেন, ‘‘রাতে ডাক্তার দিদি-দাদাদের জন্যই ভাগ্নিকে ভর্তি করতে পারি। চিকিৎসকেরাই ওকে নতুন জীবন দিলেন।’’

শনিবার সকালে চিকিৎসক সৌমেন্দ্রনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চিকিৎসক দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায় এবং প্রীতি রুবিনাথ কিশোরীর ব্রঙ্কোস্কোপি করে বীজটি বার করেন। সঙ্গে ছিলেন অ্যানাস্থেটিস্ট তুষার চক্রবর্তী এবং শুক্লা কর্মকার। হাসপাতাল সূত্রের খবর, অপটিক্যাল ফরসেপ দিয়ে এ কাজ করা অনেক সহজ। পুরনো যন্ত্র রিজিড ব্রঙ্কোস্কোপি যন্ত্র দিয়ে কুলের বীজ ধরতে অসুবিধা হচ্ছিল। তিন বারের চেষ্টায় সফল হন চিকিৎসকেরা।

এ দিন দীপ্তাংশু বলেন, ‘‘আটকে থাকা কুলের বীজের জন্য কিশোরীর ডান দিকের ফুসফুস কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। একেবারে নেতিয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। অস্ত্রোপচারের পরে এখন রোগী ভাল রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta Medical College and Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE