—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পুজোর মুখে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠল মহানগরের বিভিন্ন এলাকা। বুধবার সকালে ও দুপুরে সল্টলেকে, বিকেলে কালীঘাটে এবং সন্ধ্যায় ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে উত্তেজনা ছড়াল নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনকে ঘিরে। প্রতিটি জায়গাতেই আন্দোলনকারীদের আটক করে গ্রেফতার করে পুলিশ। আন্দোলনকারীদের দাবি, দ্রুত নিয়োগ করতে হবে। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে থাকা আন্দোলনকারীদের কয়েক জন প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত সেখানেই বসে থাকেন বলে খবর। তাঁদের দাবি, নিয়োগের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অথবা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করতে হবে। না হলে তাঁরা গান্ধী মূর্তির পাদদেশ থেকে উঠবেন না।
এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ২০২২ সালে টেট পাশ করা চাকরিপ্রার্থীরা অবিলম্বে ইন্টারভিউ নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর দাবিতে সল্টলেকের করুণাময়ীতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরের কাছে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। ওই আন্দোলনকারীদের দাবি, তাঁদের নিয়োগ নিয়ে কোনও মামলা-মোকদ্দমা হয়নি। তা হলে কেন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করছে না পর্ষদ? অবিলম্বে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানান তাঁরা। টেট পাশ করা প্রার্থীদের এই বিক্ষোভ আন্দোলন শেষ হতে না হতেই করুণাময়ীতে পৌঁছে যান উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের গন্তব্য ছিল, করুণাময়ী হয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিস। উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোষের প্রশ্ন, তাঁদের মেধা তালিকা বেরিয়ে গিয়েছে, তা হলে এখনও দেরি কেন? অবিলম্বে পুজোর আগেই নিয়োগের দাবি জানান তিনি। ওই মিছিলে কয়েক জন মহিলা চাকরিপ্রার্থী মাথায় গঙ্গাজল ভর্তি ঘট ও বেলপাতা নিয়ে যাচ্ছিলেন। পুলিশ ওই মিছিল আটকাতে গেলে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। কয়েক জন চাকরিপ্রার্থীকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা ফের একই দাবিতে বিকেলে কালীঘাট মেট্রো স্টেশন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু কিছু দূর এগোতেই পুলিশ সেই মিছিলে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ কয়েক জনকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, ‘‘আদালতের অনুমতিতে উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের মেধা তালিকা প্রকাশ করেছি। আদালত অনুমতি দিলেই কাউন্সেলিং শুরু করা হবে।’’
এ দিকে, বিকেলে প্রায় একই সময়ে ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তখন চলছিল ২০০৯ সালের দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ। সেটাও নিয়োগের দাবিতে। ওই চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ১৮৩৪ জনের পূর্ণাঙ্গ মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। ১৫০৬ জনের মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। অবিলম্বে বাকি ৩২৮ জনের মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে।
এক চাকরিপ্রার্থী শিউলি মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা ২০০৯ সালে যখন চাকরির পরীক্ষা দিয়েছিলাম, তখন প্রাথমিকে জেলা-ভিত্তিক নিয়োগ হত। অন্যান্য জেলায় নিয়োগ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এখনও তা হয়নি। আজ আমরা বিকাশ ভবনে স্মারকলিপি দিতে গেলে সেখান থেকে আমাদের কার্যত ধাক্কা দিয়ে বার করে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অথবা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করতে হবে। যত ক্ষণ না তাঁরা হস্তক্ষেপ করছেন, আমরা এই গান্ধী মূর্তির পাদদেশ থেকে উঠব না। এখানেই আমরা অনশন ও ধর্না চালাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy