বিটি রোডে শনিবার ভোরে পুলিশের সঙ্গে পড়ুয়াদের বচসা। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের বিক্ষোভে টানা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিল বিটি রোড। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে সিঁথি এলাকায় কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীরা। সেখানে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের আচরণে আপত্তি তোলেন তাঁরা। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় ওই সিভিক ভলান্টিয়ার বাইক নিয়ে তাঁদের ব্যারিকেডে ধাক্কা মারেন। তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করেই ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পর ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক সার্জেন্টকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা। সকাল পর্যন্ত ওই সার্জেন্টকে আটকে রাখা হয়েছিল রাস্তায়। রাতে কী কী ঘটেছিল, তার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছেন রবীন্দ্রভারতীর পড়ুয়ারা।
ভাইরাল ভিডিয়োয় প্রকাশ, সিঁথির মোড়ে প্রতিবাদীদের ব্যারিকেডের সামনে আটকানো হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারের বাইক। সেই বাইকে পুলিশের স্টিকার লাগানো রয়েছে। সিভিক ভলান্টিয়ারকে পড়ুয়াদের এক জন বলছেন, ‘‘আপনার বাইকে পুলিশ লেখা রয়েছে। আপনি মত্ত অবস্থায় এখানে কী করছেন? আপনি তো দেখতে পাচ্ছেন, আমরা এখানে ছেলেখেলা করতে আসিনি।’’ ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে ক্ষমা চাইতে দেখা যায়। সেখান থেকে বেরোতে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে ঘিরে ধরেন পড়ুয়ারা। বলতে শোনা যায়, ‘‘ক্ষমা করে করেই তো এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ক্ষমা করব কী করে? কর্তব্যরত অবস্থায় আপনি মদ খেয়ে বাইক চালাচ্ছেন। এখানে দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় কে নিত?’’
ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট এগিয়ে আসেন। তিনি ব্যারিকেড সরিয়ে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে ঘটনাস্থল থেকে বার করে দেন। পড়ুয়াদের ক্ষোভ তাতে আরও বেড়ে যায়। তাঁরা চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘‘আমরা তো বিচার চাই, আর কিছু না। আপনি ওঁকে ছেড়ে দিলেন কেন? আমরা যদি মদ খেয়ে গাড়ি চালাতাম, ছেড়ে দিতেন? আমাদের বিচারটা দিন!’’ কর্তব্যরত সার্জেন্টকে ঘিরে ধরেন পড়ুয়ারা। তাঁর সঙ্গে বচসা চলে বেশ কিছু ক্ষণ।
ভোর ৪টে থেকে সার্জেন্টকে ঘিরে বিক্ষোভ চলেছে। রাস্তায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল বাস, বড় বড় মালবাহী লরি। সকালে বাস না পেয়ে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। পরে সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পড়ুয়ারা জানান, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার এবং সার্জেন্টের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। সেই কপি তাঁরা হাতে পেয়েছেন। সিভিক ভলান্টিয়ারকে কাশীপুর থানার হেফাজতে রাখা হয়েছে। এর পরেই অবরোধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম গঙ্গাসাগর গোন্ড এবং ট্র্যাফিক সার্জেন্টের নাম তারকেশ্বর পুরি। অবরোধ তুলে নিলেও রাস্তার ধারে রবীন্দ্রভারতীর পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে। লালবাজার সূত্রে খবর, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আপাতত সিভিকের কাজ তিনি করতে পারবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy