E-Paper

বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা যেন পুকুর, আতান্তরে পড়ুয়ারা

দুপুরে যোতশিবরামপুর গার্লস হাইস্কুলের সামনে দেখা গেল, রাস্তার মাঝখানে বিশাল গর্ত। সেখানে জল জমে থাকায় মোটরবাইক যেতে পারছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৫ ০৯:৪৮
দুর্ভোগ: বড় বড় গর্তে বিপজ্জনক অবস্থা রাস্তার। ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত মানুষের।

দুর্ভোগ: বড় বড় গর্তে বিপজ্জনক অবস্থা রাস্তার। ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত মানুষের। সোমবার, বেহালার শকুন্তলা পার্ক এলাকায়, বীরেন রায় রোডে (পশ্চিম)। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

রাস্তা না পুকুর?

এই প্রশ্নই করছেন দু’টি স্কুলের পড়ুয়া, অভিভাবক এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এমনই অবস্থা বেহালার বীরেন রায় রোডের (পশ্চিম)। রাস্তার এক দিকে কলকাতা পুরসভার ১২৭ নম্বর ওয়ার্ড। অন্য দিকে মহেশতলা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড। মহেশতলার দিকে যোতশিবরামপুর বয়েজ় ও গার্লস স্কুল দু’টি পাশাপাশি রয়েছে। অভিযোগ, রাস্তার বেহাল দশার জেরে স্কুলপড়ুয়াদের রোজ হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনাও। সোমবার সকালেও স্কুলের সামনে টোটো উল্টে গিয়ে বড়সড় বিপদের মুখ থেকে বেঁচেছে পড়ুয়ারা। মোটরবাইক, স্কুটার নিয়ে আসা অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছেন।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই দু’টি স্কুল ছাড়াও এলাকায় রয়েছে আরও তিনটি বেসরকারি বিদ্যালয়। অভিযোগ, বীরেন রায় রোডের (পশ্চিম) বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে তৈরি হয়েছে বিশাল বিশাল গর্ত। সেখানে বৃষ্টির জল জমে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়েছে। গর্তের গভীরতা কত, তা বুঝতে না পেরে বিপদে পড়ছেন গাড়ি, স্কুটার, সাইকেল বা মোটরবাইক আরোহীরা। প্রায়ই জমা জলে উল্টে পড়ছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতির জেরে তীব্র যানজট তৈরি হচ্ছে সেখানে।

এ দিন দুপুরে যোতশিবরামপুর গার্লস হাইস্কুলের সামনে দেখা গেল, রাস্তার মাঝখানে বিশাল গর্ত। সেখানে জল জমে থাকায় মোটরবাইক যেতে পারছে না। চালকেরা রাস্তার ধার ঘেঁষে মোটরবাইক নিয়ে হেঁটে কোনও মতে যাচ্ছেন। পড়ুয়ারা খুব সাবধানে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে। অভিভাবক, স্কুলপড়ুয়াদের অভিযোগ, ‘‘রাস্তার বেহাল দশার জন্য স্কুলে আসতেই ভয় করে।’’ ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সবিতা দাসের অভিযোগ, ‘‘রাস্তার বেহাল দশার জন্য দু’মাস ধরে আমাদের সবাইকে ভুগতে হচ্ছে। রাস্তা মেরামতির জন্য বিভিন্ন মহলে দাবি জানিয়েও কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। মেয়েগুলোর কথা ভেবে আতঙ্ক হয়। অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার না হলে বড়সড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।’’ রাস্তা দ্রুত মেরামতির দাবিতে শীঘ্রই ছাত্রী, অভিভাবকদের নিয়ে তাঁরা পথ অবরোধে শামিল হবেন বলে জানান প্রধান শিক্ষিকা।

১২৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি মালবিকা বৈদ্যের কথায়, ‘‘মাস তিনেক আগে মহেশতলা পুরসভা রাস্তা কেটে বড় বড় জলের পাইপ বসানোয় বিপত্তি বেড়েছে। ওরা রাস্তা কাটলেও মেরামত করছে না।’’ কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেহালার বীরেন রায় রোড (পশ্চিম) কেএমডিএ-র অধীনে। রাস্তা সারাতে কেএমডিএ মহেশতলা পুরসভাকে টাকা দিয়েছে।’’ মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান দুলাল দাস বলেন, ‘‘কেএমডিএ রাস্তা সারাতে টাকা দিয়েছে, রাস্তা যাতে দ্রুত মেরামত করা যায়, সে বিষয়ে সচেষ্ট হব।’’ তবে, কেবল বীরেন রায় রোড (পশ্চিম) নয়, বৃষ্টি শুরু হতেই শহরের অন্যান্য অংশের রাস্তার বেহাল দশাও সামনে এসেছে। বেহালার শকুন্তলা পার্ক, ডায়মন্ড হারবার রোড, কসবার পূর্বাচল, ই এম বাইপাসের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কোথাও রাস্তা ফুঁড়ে পাথরকুচি বেরিয়ে এসেছে।

মেয়র পারিষদের (রাস্তা) আশ্বাস, ‘‘বৃষ্টি কমলেই আমরা শহরের সমস্ত রাস্তা মেরামত করব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Behala

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy