ভাঙচুর: ভোটের ফল প্রকাশের পরেই রাজনৈতিক হিংসার জেরে কাঁকুড়গাছিতে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। গোলমালের সময়ে ভাঙা হয় বেশ কয়েকটি গাড়িও। ছবি: সুমন বল্লভ
ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই একের পর এক রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে চলেছে এ রাজ্যে। ঘটেছে একাধিক প্রাণহানির ঘটনাও। বহু মানুষ আজ রাজনৈতিক হিংসার জেরে ঘরছাড়া। মৃত্যু, হিংসা নষ্ট করছে রাজ্যের ভাবমূর্তি। এর শেষ কোথায়? হিংসা বন্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত? রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে কী ভাবছে আজকের তরুণ সমাজ?
ভোট-পরবর্তী হিংসা কোনও দিন কাম্য নয়। মুখ্যমন্ত্রীকে এই হিংসা বন্ধে আরও দায়িত্ব নিতে হবে। সাধারণ মানুষ এটাই আশা করে। প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকেই জেলায় জেলায় বার্তা পাঠানো উচিত। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করার অধিকার দিতে হবে। তা হলেই হিংসা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে হয়। ভোট হলে একটা দল জিতবে আর বাকিরা হারবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভোটে জেতার পরেই বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের উপরে হামলা মেনে নেওয়া যায় না। এই রাজনৈতিক হিংসা রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।
সৌম্যব্রত ঘোষ
বেসরকারি সংস্থার কর্মী
ভোট এবং ভোট পরবর্তী হিংসার দায় মুখ্যমন্ত্রীকে নিতে হবে। কারণ তাঁর দায়িত্ব সব থেকে বেশি। মুখ্যমন্ত্রী উচিত এখনই সর্বদলীয় বৈঠক করে এই হিংসা নিয়ন্ত্রণে দলমত নির্বিশেষে ব্যবস্থা নেওয়া। ভোট-পরবর্তী হিংসা পশ্চিমবঙ্গের নামকে কালিমালিপ্ত করেছে। এ বারেও ভোটের পরে একাধিক জায়গায় হিংসা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিরোধের জন্য এই প্রাণহানি মেনে নেওয়া যায় না। আশা করি পুলিশ-প্রশাসন সক্রিয় হবে এবং এই ঘটনা বন্ধ হবে। রাজ্যে সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরবে।
তমাল সাধুখাঁ
মেডিকেল রিপ্রেজ়েন্টেটিভ
হিংসা বন্ধে নিজের দলের অভিযুক্ত কর্মীদের আগে গ্রেফতার করে সব দলের কাছে একটা বার্তা দেওয়া উচিত মুখ্যমন্ত্রীর। তা না-হলে এই ঘটনা কমবে না। হিংসা বন্ধে মুখ্যমন্ত্রীকেই দায়িত্ব নিতে হবে। ভোটের ফল ঘোষণার পরে একের পর এক রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা সামনে আসছে। প্রাণহানির ঘটনা গণতন্ত্রের লজ্জা ছাড়া কিছুই নয়। রাজনৈতিক শিক্ষার অভাবেই বাড়ছে এই হিংসার ঘটনা। এটা বন্ধ হওয়া উচিত। সরকারের উচিত দল-মত নির্বিশেষে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া।
পূবালি দাস
বেসরকারি সংস্থার কর্মী
মুখ্যমন্ত্রীর উচিত দল-মত নির্বিশেষে আক্রান্তদের বাড়িতে যাওয়া, তাঁদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি, বুদ্ধিজীবীদেরও উচিত রাস্তায়
নেমে এর প্রতিবাদ করা। অতিমারির সময়ে রাজনৈতিক দলগুলির যখন একে অন্যের পাশে থাকা উচিত, তখন তা ভুলে একে অন্যকে আক্রমণ করার ঘটনা নিন্দনীয়। রাজনৈতিক হিংসা রাজ্যের উন্নতিতে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
রাজ্যের বাইরের শিল্পপতিদের কাছেও একটা ভুল বার্তা যায়। রাজনৈতিক হিংসা বন্ধে প্রশাসনের আরও সক্রিয় হওয়া উচিত। রাজনৈতিক হিংসা কখনই কাম্য নয়।
সন্দীপ রায় কর্মকার
বেসরকারি সংস্থার কর্মী
প্রতিটি জেলায় সর্বদলীয় কমিটি করে রাজনৈতিক হিংসা বন্ধে উদ্যোগী হওয়া উচিত। দরকারে প্রতিটি এলাকায় এই সর্বদলীয় কমিটি করে এই হিংসা বন্ধ করা উচিত। রাজ্যটা সবার। হার-জিত তো সব জায়গাতেই নির্বাচনের অঙ্গ। যিনি শাসক তাঁর যেমন অধিকার আছে, যিনি বিরোধী দলে আছেন, তাঁরও ঠিক ততটাই অধিকার আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, রাজনৈতিক নেতারা অনেক সময়েই এই জিনিসটা ভুলে যান। যার ফলে পশ্চিমবঙ্গে এই হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে। নেতাদের এই সহজ সত্যটা বোঝার সময় এসেছে। হিংসা ভুলে শাসক-বিরোধী দুই দলের নেতা-কর্মীদের হাতে হাত মিলিয়ে রাজ্যের উন্নতির জন্য পরিকল্পনা করা উচিত।
দিব্যা চৌধুরী
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী
হিংসার দায় শাসক-বিরোধী সব দলের। হিংসা বন্ধ করতে মুখ্যমন্ত্রীর এখনই উচিত প্রতিটি জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের নির্দিষ্ট বার্তা পাঠানো। বিরোধী কণ্ঠ রোধ করার একটা প্রবণতা ইদানিং রাজনীতির অঙ্গ হয়ে উঠেছে। তার ফলে ভোটের ফল প্রকাশের পরেই একের পর এক রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটছে। হিংসা বন্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে আরও দায়িত্ব নিতে হবে। প্রতিটি ভোটের পরেই রাজ্যে ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনা বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণে সে ভাবে আগে থেকে কোনও প্রশাসনিক পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। এটা কাঙ্ক্ষিত নয়।
ঋতজা তাজ
শিক্ষিকা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy