Advertisement
E-Paper

কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় বাড়তে পারে ফ্ল্যাটের দাম! সাত বছর পর ‘প্রপার্টি সার্কল রেট’ বৃদ্ধি করল সরকার

এই পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব পড়বে ক্রেতাদের উপর। বর্তমানে এক কোটি টাকার নীচে ফ্ল্যাটের জন্য ধার্য স্ট্যাম্প ডিউটি ৬ শতাংশ এবং এক কোটির বেশি হলে ৭ শতাংশ।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৪৩
West Bengal government Increases property Circle Rate After Seven Years

কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় ফ্ল্যাটের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

সাত বছরের বিরতির পর ফের কলকাতার ‘প্রপার্টি সার্কল রেটে’ বড় পরিবর্তন আনল রাজ্য সরকার। এর ফলে শহর ও সংলগ্ন এলাকায় ফ্ল্যাট বা জমি কিনতে গেলে ক্রেতাদের রেজিস্ট্রেশন ফি এবং স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবে। ফলে কলকাতায় সম্পত্তি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতাদের বাড়তি খরচ করতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারি এই নতুন নির্দেশ কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আবাসন বাজারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে সার্কল রেট বৃদ্ধি, যা ১৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

সরকারি মতে, এত দিন বহু এলাকায় বাজারদর এবং সরকার স্বীকৃত সার্কল রেটের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফারাক ছিল। যেমন—কোনও অঞ্চলে ফ্ল্যাটের বাজারদর ছিল প্রায় ৯ হাজার টাকা প্রতি বর্গফুট, অথচ সার্কল রেট ছিল মাত্র ৬ হাজার টাকা প্রতি বর্গফুট। এই অমিল দূর করতেই নতুন রেটে সংশোধন আনা হয়েছে। এই বৃদ্ধির ফলে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সার্কল রেট চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। সল্টলেক সংলগ্ন মহিষবাথানে সার্কল রেট ৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১২,০৬৫ টাকা প্রতি বর্গফুট। এটি টলিগঞ্জের নতুন রেটকেও (১০,২১২ টাকা প্রতি বর্গফুট) ছাড়িয়ে গিয়েছে । অন্য দিকে, উত্তর কলকাতার বরাহনগর সংলগ্ন বিটি রোডের প্রকল্পগুলিতে সার্কল রেট প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে—৪,৭০৮ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮,৮৫০ টাকা প্রতি বর্গফুট।

এই পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব পড়বে ক্রেতাদের উপর। বর্তমানে এক কোটি টাকার নীচে ফ্ল্যাটের জন্য ধার্য স্ট্যাম্প ডিউটি ৬ শতাংশ এবং এক কোটির বেশি হলে ৭ শতাংশ। নতুন সার্কল রেট অনুযায়ী বহু তিন বেডরুম এবং কিছু দুই বেডরুম ফ্ল্যাটের দাম এক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এর ফলে ক্রেতাদের অতিরিক্ত স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হবে। বিশেষত মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের জন্য এই খরচ বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়াবে।

কলকাতার এক নামজাদা আবাসন নির্মাণকারী সংস্থার মতে, বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সার্কল রেট বৃদ্ধি করা হলে তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু কয়েকটি অঞ্চলে নতুন রেট বাজারদরকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে, যা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য জটিলতা তৈরি করবে। তাদের আরও দাবি, অতিরিক্ত রেট আয়কর সংক্রান্ত সমস্যার জন্ম দিতে পারে এবং বিক্রয় প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেবে। অন্য একটি সংস্থা জানিয়েছে, নতুন হারের কারণে বহু সম্ভাব্য ক্রেতা আপাতত অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেবেন। বিক্রেতাদেরও বাধ্য হয়ে দাম কমানোর কথা ভাবতে হবে। ফলে বিক্রির গতিতে সাময়িক ধাক্কা আসতে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, সার্কল রেট বৃদ্ধির ফলে দীর্ঘমেয়াদে আবাসন বাজারে বড়সড় প্রভাব পড়বে না। কারণ, ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে মূলত বাজারদর, ব্যক্তিগত আর্থিক সামর্থ্য এবং চাহিদাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি রেটের সামঞ্জস্যকরণ কেবল প্রক্রিয়াগত পরিবর্তন, যা স্বল্প সময়ের জন্য সিদ্ধান্তে বিলম্ব ঘটালেও চাহিদার উপর স্থায়ী প্রভাব ফেলবে না। সব মিলিয়ে বলা যায়, সাত বছর পর সার্কল রেট বৃদ্ধির এই পদক্ষেপ রাজ্যের রাজস্ব আয় বাড়াতে সাহায্য করবে। তবে একই সঙ্গে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের উপর নতুন চাপ তৈরি করবে। বিশেষত মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের জন্য স্বপ্নের বাড়ি কেনার পথে অতিরিক্ত করের বোঝা এ বার বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে চলেছে।

Flat price
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy