Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Ramadan

রমজানের আগে বিবর্ণ ফলপট্টি

দিনভর রোজা রাখার পরে সন্ধ্যায় ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা খেজুর, তরমুজ, কলা, পেঁপে, আপেল, মুসাম্বির মতো ফল খেয়ে উপবাস ভাঙেন।

ফলের জোগান কমেছে মেছুয়াবাজারে। নিজস্ব চিত্র

ফলের জোগান কমেছে মেছুয়াবাজারে। নিজস্ব চিত্র

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২০ ০১:৫৯
Share: Save:

রমজান মাস শুরু হতে বাকি ৯ দিন। রমজান মানেই ইফতারের ভোজে রকমারি ফল। ফল ব্যবসায়ীরা সারা বছর এই সময়ের দিকে তাকিয়ে থাকেন। ওই মাসে ফল বিক্রি করে তাঁদের রোজগার হয় ভালই। কিন্তু লকডাউনের জেরে এ বছর সেই আশা নেই। মেছুয়া ফলপট্টির আড়তদারদের মুখে একটাই কথা, ‘‘সাধারণ মানুষ দু’মুঠো ভাত জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। এই অবস্থায় ফল খাওয়ার চিন্তাও বিলাসিতা।’’

দিনভর রোজা রাখার পরে সন্ধ্যায় ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা খেজুর, তরমুজ, কলা, পেঁপে, আপেল, মুসাম্বির মতো ফল খেয়ে উপবাস ভাঙেন। ফল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বছরের অন্যান্য সময়ে যেখানে রোজ গড়ে ৫০-৬০টি করে ফলের গাড়ি আসত, এখন সেখানে মেরেকেটে ২০টি গাড়ি ঢুকছে। ফল আসা কমে প্রায় ২০ শতাংশে ঠেকেছে। লকডাউনের জেরে সাধারণ মানুষের হাতে টাকা না-থাকায় ক্রমশ কমে আসছে ফলের চাহিদাও।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কলকাতার মেছুয়া ফলপট্টিতে ফলের গাড়ি আসে। সেখান থেকে ফল চলে যায় কলকাতা, শহরতলির বিভিন্ন প্রান্ত-সহ রাজ্যের নানা জায়গায়। মেছুয়া ফলপট্টির কলকাতা ফ্রুট মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহম্মদ সোহরাব বলেন, ‘‘ফলের গাড়ি লকডাউনের আওতায় না-থাকলেও বাজারে ফল কেনার লোক কোথায়! দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফলের গাড়ি এলেও বাধ্য হয়ে বেশ কম দামে ফল বিক্রি করতে হচ্ছে।’’ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, খুচরো বাজারে এখন তরমুজ ২০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, কাশ্মীরি আপেল ৫০-৭০ টাকা, সিমলার আপেল ১২০ টাকা এবং বিদেশ থেকে আসা আপেল (আমেরিকা, নিউজিল্যান্ড) ১৪০ টাকা কিলোগ্রাম প্রতি দরে বিক্রি হচ্ছে। সোহরাবের কথায়, ‘‘বছরের অন্য সময়ের তুলনায় গড়ে কিলোগ্রাম প্রতি ২০-৩০ টাকা কম দরে ফল বিক্রি করতে হচ্ছে। রমজানে টানা এক মাস ধরে ভাল আয় হত সব ব্যবসায়ীদের। কিন্তু এখন সব রোজগারই সংশয়ে।’’ কলকাতা ফ্রুট মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ ইফতেকার আলম বলেন, ‘‘মেছুয়ায় প্রায় ৪০০ আড়তদার রয়েছেন। ফলপট্টি থেকে ফল কিনে নিয়ে যান এমন ছোট, বড় ব্যবসায়ী থেকে ট্রেন, ফুটপাতের হকার মিলে শহর ও শহরতলিতে এক লক্ষ ফল বিক্রেতা রয়েছেন। ফলপট্টি খোলা থাকলেও রাস্তা, ট্রেনে ফল বিক্রির উপায় নেই।’’

আরও পড়ুন: ঘোষণার সাত দিন আগেই লকডাউন সেনবাড়িতে! তাক লাগাচ্ছে দুই খুদেও

এক আড়তদার মহম্মদ আক্রমের কথায়, ‘‘যত দিন যাচ্ছে, পরিস্থিতি ভয়াবহ হচ্ছে। যেটুকু আসছে, তা-ও বিক্রি হচ্ছে না। লোকসান বেড়েই চলেছে। রমজানের মধ্যে পরিস্থিতি বদলানোরও আশা নেই তেমন।’’

আরও পড়ুন: নবান্নের নির্দেশে বাজারের চরিত্র বদলাবে পুরসভা

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ramadan Fruits West Bengal Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE