Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Lockdown

পলাতক আট শ্রমিককে ফিরিয়ে আনল পুলিশ

হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন প্রকল্পস্থল থেকে রবিবার বিকেলে পালিয়েছিলেন পুরুলিয়ার ওই আট শ্রমিক।

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৩৭
Share: Save:

দেশ জুড়ে লকডাউন। বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানেরা দু’বেলা খেতে পাচ্ছে তো?—এই চিন্তা বাড়তে থাকায় বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই চম্পট দিয়েছিলেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে কর্মরত আট ঠিকা শ্রমিক। শেষে মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান দেখে তাঁদের ফিরিয়ে আনল হাওড়া সিটি পুলিশ।

লকডাউনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের সব জেলার সীমানায় কড়া প্রহরা রয়েছে। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতে কেউ ঢুকতে না পারেন, সেই দিকে নজরদারি চলছে। তারই মধ্যে হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন প্রকল্পস্থল থেকে রবিবার বিকেলে পালিয়েছিলেন পুরুলিয়ার ওই আট শ্রমিক। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই সন্ধ্যাতেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষ হাওড়ার জেলাশাসক এবং পুলিশ কমিশনারকে ইমেল করে ঘটনাটি জানান। তদন্তে নামে গোলাবাড়ি থানার পুলিশ। পুলিশ কমিশনার কুণাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে শহরের প্রতিটি সীমানায় তল্লাশি চলছে। ওই আট শ্রমিককে কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপদে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সে দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।’’

কেএমআরসিএল সূত্রের খবর, প্রকল্পের থাকার জায়গাতেই অন্যদের সঙ্গে ছিলেন স্বপন প্রামাণিক, দিলীপ মাহাতো, রাজারাম বারুই-সহ আরও পাঁচ জন। বারবার বাড়ি থেকে ফোন আসায় চিন্তায় পড়েছিলেন ওই আট জন। সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শুক্র ও শনিবার ওই আট জনকে অনেক বোঝানো হয়। কিন্তু ওঁরা বাড়ি যেতে মরিয়া ছিলেন।’’ অভিযোগ, রবিবার বিকেলে স্বপন, দিলীপ, রাজারাম-সহ আট জন কার্যত জোর করে বেরিয়ে চম্পট দেন।

তদন্তকারীরা জানান, ওই শ্রমিকেরা ঠিকাদার সঞ্জয় মালের অধীনে কাজ করতেন। লকডাউন শুরুর আগেই তিনি বীরভূমের বাড়িতে চলে গিয়েছেন। তাঁকে ফোন করে শ্রমিকদের মোবাইল নম্বর জোগাড় করেন তদন্তকারীরা। মোবাইলের অবস্থান পরীক্ষা করে দেখা যায়, সকলেই ফোরশোর রোডের ধারের একটি কয়লা ডিপোয় ছিলেন। পুলিশ যত ক্ষণে পৌঁছয়, তত ক্ষণে ওঁরা ছোট মালবাহী গাড়িতে পুরুলিয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। সেই চালকের মোবাইল নম্বর জোগাড় করে তার অবস্থান দেখে জানা যায়, গাড়িটি ছ’নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে সলপের দিকে যাচ্ছে। এর পরেই সলপ মোড়ের কাছে গাড়িটি আটকে উদ্ধার করা হয় আট জনকে।

হাওড়া শহরের ধূলাগড় টোলপ্লাজা, দু’নম্বর জাতীয় সড়কের ৭৯ পয়েন্ট, মাইতিপাড়া, দ্বিতীয় হুগলি সেতু, হাওড়া সেতু, অঙ্কুরহাটি, নিবড়া-২ সীমানা দিয়ে হাওড়া গ্রামীণ, হুগলি, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনায় যাতায়াত করা যায়। এই ঘটনার পরে সীমানাগুলিতে আরও জোরদার হয়েছে নাকা তল্লাশি। ছোট গাড়ি বা বেসরকারি বাসে অনেক লোক দেখলেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ডেপুটি কমিশনার (ট্র্যাফিক) অর্ণব বিশ্বাস বলেন, ‘‘অন্যান্য জায়গার পাশাপাশি জাতীয় সড়কের চেক পোস্টেও কড়া নজর রাখা হচ্ছে। অনেক গাড়িকে ঘুরিয়ে যে এলাকা থেকে এসেছে সেখানে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE