Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Government

ভর্তুকি নয়, চাকরি ও শিল্পে জোর দিক নতুন সরকার

কতটা প্রত্যাশা পূরণ করল এ বারের ভোটের ফলাফল? নতুন সরকারের থেকে বাংলার তরুণ সমাজই বা কী চাইছে?

উল্লাস: ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হতেই কালীঘাটে ভিড় জমিয়েছিলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। রবিবার বিকেলে।

উল্লাস: ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হতেই কালীঘাটে ভিড় জমিয়েছিলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। রবিবার বিকেলে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২১ ০৬:০৬
Share: Save:

শেষ হয়েছে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পুনরায় রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল, যা নতুন সরকারের দায়িত্ব আরও বাড়িয়েছে। কিন্তু কতটা প্রত্যাশা পূরণ করল এ বারের ভোটের ফলাফল? নতুন সরকারের থেকে বাংলার তরুণ সমাজই বা কী চাইছে?

বাংলার মানুষ সাম্প্রদায়িকতা পছন্দ করেন না। ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভাজন রাজ্যের মানুষ মেনে নেননি। এ বারের বিধানসভা নির্বাচনের ফল দেখে অন্তত সেটাই মনে হয়েছে এবং যেটা খুবই যুক্তিসঙ্গত। তবে এই ফলাফল নতুন সরকারের প্রতি আমার প্রত্যাশা বাড়িয়েছে। দায়িত্বও বেড়েছে নতুন সরকারের। আশা করি নতুন সরকার বেকারদের কর্ম সংস্থান, রাজ্যের শিল্পবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি এবং ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে সক্রিয় হবে।

সায়নময় মুখোপাধ্যায়

বেসরকারি সংস্থার কর্মী

কেন্দ্রের একাধিক নেতার ‘সোনার বাংলা’ তৈরির প্রতিশ্রুতিতে বাংলার মানুষ বিশ্বাস করেনি। আর এই বিশ্বাস না করার জন্য দায়ী কেন্দ্রের একাধিক জনবিরোধী নীতি, করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থতা-সহ একাধিক কারণ। এ ছাড়া বাংলায় বিজেপি নেতাদের ঔদ্ধত্য তো ছিলই। তবে তৃণমূলের এই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা আরও দায়িত্ব বাড়িয়েছে বলেই মনে করি। সরকারি ক্ষেত্রে নিয়োগ ও শিল্পের উন্নতিতে নতুন সরকার আরও সক্রিয় হবে বলেই প্রত্যাশা রাখি।

বনশ্রী মণ্ডল

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী

বিজেপির বাংলায় কোনও নেতা না থাকা তাদের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ বলেই মনে হয়। মানুষের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রহণযোগ্যতার কাছে তাই বিজেপি দাঁড়াতে পারেনি। চাকরিসূত্রে আমি রাজ্যের বাইরে থাকি। তাই নতুন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি অন্তত চাইব যাতে বাংলায় আরও বেশি কাজের সুযোগ তৈরি হোক। যাতে আমরা আবার বাংলায় ফিরতে পারি। পাশাপাশি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বন্ধ হওয়া দরকার। সুষ্ঠু গণতন্ত্রে হার-জিত থাকবেই। কিন্তু ভোটে জেতার পরে বিরোধী দলের কর্মীদের উপরে আক্রমণও কিন্তু প্রত্যাশিত নয়।

দেবপ্রিয়া বসু

বেসরকারি সংস্থার কর্মী

নতুন সরকারের প্রতি প্রত্যাশা অনেক। মানুষের জন সমর্থন সেই প্রত্যাশা আরও বাড়িয়েছে। সরকারি সুযোগ-সুবিধাগুলি যাতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষজন সমান ভাবে পেতে পারেন, নতুন সরকারের সেটা দেখা উচিত৷ পাশাপাশি, বাংলায় এখন সব থেকে বড় সমস্যা বেকারত্ব ও কর্মসংস্থান। ছাত্রছাত্রীরা যাতে ভবিষ্যতে তাঁদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে সরকারি চাকরি পেতে পারে, সেই দিকে আশা করি নতুন সরকার নজর দেবে। এ ছাড়া করোনা রুখতে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন দরকার। স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকাঠামোর উন্নয়নে সরকারের বাড়তি নজর দেওয়া উচিত৷

সিম্পা জানা

কলেজ শিক্ষিকা

বাংলায় বিজেপি নেতাদের গ্রহণযোগ্যতা এবং শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে মানুষে-মানুষে বিভাজনের চেষ্টা বাংলা এই নির্বাচনে মেনে নেয়নি। আর সে জন্যেই বিজেপির এই ভরাডুবি। তবে নতুন তৃণমূল সরকারের প্রতি আমাদের মতো তরুণ সমাজের প্রত্যাশা অনেকটাই বেড়েছে। সেই প্রত্যাশা থেকেই আশা করি, ভর্তুকিতে জোর না দিয়ে শিল্প ও সরকারি চাকরির উপরে জোর দেবে সরকার। রাজ্যে শিল্পবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতেও সচেষ্ট হবে। পাশাপাশি সরকারি ক্ষেত্রে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আশা করছি।

সৌরভ ভৌমিক

ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়া

পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যে ভোটের শতাংশের দিক থেকেও ভোট বেড়েছে তৃণমূলের। আসলে বিজেপির ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে তৃণমূলকেই বেছে নিয়েছে। ফলে বিপুল জনসমর্থন পেয়েছে তৃণমূল। যা নতুন সরকারের দায়িত্ব আরও বাড়িয়েছে বলেই আমার মনে হয়। আশা করি নতুন সরকার রাজ্যের শিল্প পরিকাঠামো, বেকারদের কর্মসংস্থান এবং করোনা মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে। পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে নিয়োগে স্বচ্ছতা আনবে বলে প্রত্যাশা করি।

শুভাশিস দাস

ব্যবসায়ী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE