Advertisement
E-Paper

মাস্ক বাধ্যতামূলক করার পথে কবে হাঁটবে রাজ্য সরকার, উঠছে প্রশ্ন

সম্প্রতি বড়দিনে শহরের বিভিন্ন জায়গায় আছড়ে পড়েছিল জনস্রোত। আগামী কয়েক দিন চলবে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর উৎসব। সেউ উদ্‌যাপনে মাতোয়ারা কারও মুখই ঢাকা থাকছে না মাস্কে।

নির্লিপ্ত: বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কা। তবু নিউ মার্কেটের থিকথিকে ভিড়ে মাস্ক নেই প্রায় কারও মুখেই। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নির্লিপ্ত: বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কা। তবু নিউ মার্কেটের থিকথিকে ভিড়ে মাস্ক নেই প্রায় কারও মুখেই। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৫৯
Share
Save

বিশ্বের কয়েকটি দেশে ফের করোনার বাড়বাড়ন্ত শুরু হওয়ার পরে ভারতের কিছু রাজ্য আগাম সতর্কতা হিসেবে ইতিমধ্যেই ভিড়ের মধ্যে এবং উৎসব-অনুষ্ঠানে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে। সেই পথে পশ্চিমবঙ্গ এখনও হাঁটছে না কেন? এই প্রশ্নই তুলছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের আরও জিজ্ঞাস্য, ওমিক্রনের নতুন ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭-এর সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা মারাত্মক জানা সত্ত্বেও এবং করোনা থেকে বাঁচতে মাস্ক যে প্রধান হাতিয়ার, সেই ছবিটা গত দু’বছরে স্পষ্ট হয়ে গেলেও সরকারের তরফে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে কেন এই দোলাচল?

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বড়দিনে শহরের বিভিন্ন জায়গায় আছড়ে পড়েছিল জনস্রোত। আগামী কয়েক দিন চলবে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর উৎসব। সেউ উদ্‌যাপনে মাতোয়ারা কারও মুখই ঢাকা থাকছে না মাস্কে। আর এখানেই ভয় পাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, নাক-মুখ ঢাকা না থাকার সুযোগ নিয়ে এক জনের শরীরে বিএফ.৭ ভ্যারিয়েন্ট প্রবেশ করার অর্থ, তাঁর থেকে আরও অন্তত ১৮ জন সংক্রমিত হতে পারেন।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘কেন্দ্র করোনা বিধি মেনে চলার জন্য আবেদন করেছে। কোনও কিছু বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দেয়নি। আর, করোনা বিধি কখনওই প্রত্যাহার করা হয়নি। মানুষকেও নিজে থেকে সচেতন হতে হবে।’’ তিনি আরও জানাচ্ছেন, রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১০-এর উপরে উঠছে না। তাই পরিস্থিতি উদ্বেগের, এখনই সেটা বলা যাচ্ছে না। তবুও নিয়মিত বৈঠক করে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। দৈনিক আক্রান্তের লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করলে অবশ্যই মাস্ক এবং অন্যান্য বিধি আবার বাধ্যতামূলক করা হবে।

চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান-সহ আরও কয়েকটি দেশে বিএফ.৭ ভ্যারিয়েন্ট দাপাদাপি শুরু করার পরেই নড়ে বসেছে ভারত। প্রথম থেকেই করোনা সংক্রমণ আটকাতে কর্নাটক, পঞ্জাব, হিমাচলপ্রদেশ-সহ আরও এক-দু’টি রাজ্যে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বর্ষশেষের উৎসব থেকে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, সে জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস, জনসমাগম হচ্ছে এমন জায়গায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হয়েছে হিমাচলে। এই রাজ্যের চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, ‘‘বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি গঙ্গাসাগর মেলা রয়েছে। শীতে বিভিন্ন জায়গায় মেলা ও নানাবিধ অনুষ্ঠান লেগে থাকে। কোনও কিছুতেই বাধা দিতে বলা হচ্ছে না। কিন্তু, মাস্কের ব্যবহার প্রথম থেকেই বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন।’’ তাঁরা জানাচ্ছেন, করোনাভাইরাস নাক দিয়েই শরীরে প্রবেশ করে। তাই মুখ ও নাক ঢাকা থাকলে বিপদ অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব।

যদিও কোনও কিছুর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা যায় না বলেই মত রাজ্যের কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা, চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীর। তিনি বলেন, ‘‘বাধ্যতামূলক নয়, মানুষকে সচেতন করতে সরকার মাস্ক পরার আবেদন করতে পারে। কিন্তু মানুষ তা কতটা মেনে চলার চেষ্টা করছেন, সেটাই দেখা দরকার।’’ মেডিসিনের চিকিৎসক অজয়কৃষ্ণ সরকার জানাচ্ছেন, নির্দিষ্ট কিছু গোত্রের মানুষের ক্ষেত্রে এবং বিশেষ কয়েকটি পরিস্থিতিতে মাস্ক ব্যবহার জরুরি। যেমন, বিমানযাত্রার সময়ে এবং অপরিচিত জায়গায় যেতে হলে নিজের সুরক্ষার জন্য মাস্ক পরা প্রয়োজন। পাশাপাশি, কোমর্বিডিটি রয়েছে এমন মানুষদেরও মাস্ক পরে থাকা দরকার। অজয়কৃষ্ণর কথায়, ‘‘ওমিক্রনের কারণে সমস্যায় পড়তে হয়েছে কোমর্বিডিটি থাকা মানুষজনকে। বিএফ.৭-র কারণেও সমস্যা হতে পারে।’’

মাস্ক পরা, হাত ধোয়া এবং ভিড় এড়িয়ে চলা— এই তিনটি অভ্যাসকে আবারও গুরুত্ব দিতে বলছেন বক্ষরোগ চিকিৎসক ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘করোনা তো আছেই। তা ছাড়া, শীতে অন্যান্য সংক্রমণের কারণে ফুসফুসের সমস্যা বাড়ে। এই সময়ে বাতাসের দূষণ বেশি থাকে এবং ঠান্ডা হাওয়ায় সংক্রমণের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। সেটা ভুললে চলবে না।’’

Coronavirus in West Bengal Mask COVID-19

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}