কসবার হোটেলে বীরভূমের দুবরাজপুরের বাসিন্দা আদর্শ লোসাল্কাকে খুনের পর অন্তত তিনটি জায়গায় ঘুরে বেড়ান ধৃত তরুণ-তরুণী। পালানোর পথ না পেয়েই কি শেষে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন? তাঁদের জেরা করে একাধিক তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তবে সবই যাচাই করে দেখা হচ্ছে। সোমবার দু’জনকে আদালতে হাজির করানো হবে।
গত শুক্রবার রাতে কসবার হোটেলে ওঠেন আদর্শ। সঙ্গে ছিলেন এক যুবক এবং এক তরুণী। পুলিশ জানতে পেরেছে, যুবকের নাম ধ্রুব মিত্র। তিনি আদর্শের পূর্বপরিচিত ছিলেন। তবে কমল সাহা নামের ওই তরুণীর সঙ্গে আগে থেকে পরিচয় ছিল না আদর্শের। হোটেলে দু’টি ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন তাঁরা। গভীর রাতে কমল এবং ধ্রুব হোটেল থেকে বেরিয়ে যান। পরের দিন আদর্শের দেহ উদ্ধার করা হয়। হোটেলের ঘরের মেঝেতে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়েছিল তাঁর দেহ। পা ছিল বাঁধা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করা হয়। মৃত্যুর আগে মদ্যপান করেছিলেন আদর্শ।
আরও পড়ুন:
পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এখনও পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছে, তাতে প্রাথমিক ভাবে অনুমান, হোটেলে ঢুকে মদ্যপান করেছিলেন তিন জনই। তার পর তাঁদের মধ্যে টাকা নিয়ে অশান্তি হয়। বচসা ক্রমে ধস্তাধস্তির আকার নেয়। দু’তরফেই হাতাহাতি হয়েছিল। এর পর পা বেঁধে আদর্শকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। খুনের পর পালিয়ে যান বাকি দু’জন।
কসবার হোটেল থেকে বেরিয়ে কমল এবং ধ্রুব প্রথমে চলে যান নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। তার পর সেখান থেকে কল্যাণীতে যান। সেখান থেকে চলে আসেন দমদমে। এর মাঝে আরও কোথাও তাঁরা গিয়েছিলেন কি না, তাঁরা সব সত্য বলছেন কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ধ্রুব নদিয়ার বাসিন্দা। কমলের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর এলাকায়। তবে উভয়েই কলকাতার উপকণ্ঠে দমদমে একই ঠিকানায় থাকতেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, কসবার হোটেলে খুনের কথা জানাজানি হয়ে যাওয়ায় ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। কী করণীয়, তা নিয়ে এক জনের সঙ্গে পরামর্শও করেন। তার পর রবিবার কসবা থানায় গিয়ে ধরা দেন। তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। দু’জনের বয়ান মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।
কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকতেন আদর্শ। কী নিয়ে দুই সঙ্গীর সঙ্গে তাঁর বচসা হয়েছিল, নেপথ্যে শুধুই টাকা নিয়ে ঝামেলা কি না, পুলিশ খতিয়ে দেখছে। এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলা বাকি। তদন্তের স্বার্থে ধৃতদের সোমবার নিজেদের হেফাজতে চাইতে পারে পুলিশ।