মাঝেরহাট সেতু।ফাইল চিত্র
প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রতা কাটাতে অতীতে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ‘লাল ফিতের ফাঁস’ খুলতে বলেছিলেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নির্দেশ ছিল ‘ডু ইট নাউ’। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কাজে গড়িমসিকে প্রশ্রয় দেন না। মাঝেরহাট বিপর্যয়ের পরে পরে গঠিত সর্বোচ্চ স্তরের প্রশাসনিক কমিটিও সরকারি আধিকারিকদের গাফিলতি খুঁজতে এই বিষয়টিকেই মাপকাঠি করেছেন।
কমিটির প্রাথমিক রিপোর্ট পেয়ে শুক্রবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, পূর্ত দফতরও ‘অবহেলা’ অস্বীকার করতে পারে না। এর পরেই শাস্তির কোপ কার ঘাড়ে পড়তে পারে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে পূর্ত দফতরের অন্দরে। প্রশাসনিক সূত্রের ব্যাখ্যা, সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত তৎকালীন সময়ের যাবতীয় ফাইল আগেই বাজেয়াপ্ত করেছিল সর্বোচ্চ কমিটি।কোন অফিসারের টেবিলে কত দিন ফাইল পড়ে ছিল, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন শীর্ষ আমলারা। তার ভিত্তিতেই অফিসারদের ‘গাফিলতি’ চিহ্নিত করা হচ্ছে।
২০১৬-তেই খড়গপুর আইআইটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে জানিয়ে দেয়, মাঝেরহাট সেতুর পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রয়োজন। তার আগে অবিলম্বে সেতুর ভার কমানোর পরামর্শ দিয়েছিল ওই প্রতিষ্ঠান। তার পরেও সেই পরামর্শকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ২০১৭ সাল থেকে সেতুর পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য একাধিকবার দরপত্রের আহ্বান করা, সংস্কারের দর হিসাবে প্রায় তিন কোটি টাকা নিয়ে পূর্ত এবং অর্থ দফতরের মধ্যে বারংবার ফাইল চালাচালি হয়। ঝুঁকি কমাতে আইআইটি’র প্রাথমিক প্রস্তাব না মেনে সেতুটিকে ওই অবস্থায় কেন ফেলে রাখা হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে অনুসন্ধান কমিটির সদস্যদের মধ্যে। তা ছাড়া টাকা বরাদ্দের জন্য অর্থ দফতরই বা কেন অত সময় নিল, আগামী দিনে তার ব্যাখ্যাও সংশ্লিষ্ট অফিসারদের থেকে চাওয়া হতে পারে।
প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘কাদের গাফিলতি, সরকার সব জানে। এ বার পুলিশ তাদের চিহ্নিত করবে।’’ তবে পূর্ত অফিসারদের কারও কারও প্রশ্ন, দায় বর্তালে তা সর্ব স্তরের কর্তা-আধিকারিকদের উপর কেন বর্তাবে না? সাফল্যের কৃতিত্ব মন্ত্রী-আমলাদের হলে, ‘গাফিলতি’র দায় কেন তাঁদের দেওয়া হবে না?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy