রোজকার মতো সোমবারও দুপুরে স্কুল থেকে ফিরে দরজা খুলে ফ্ল্যাটে ঢুকেছিল বছর সতেরোর সায়নী। তার পরেই বদলে গেল সব কিছু। বসার ঘরে বাথরুমের দরজার সামনে পড়ে আছেন মা। কাছে যেতেই সে দেখে মায়ের মাথার পাশে চাপ চাপ রক্ত। ‘খুন, খুন’ বলে চেঁচিয়ে ওঠে মেয়ে। ছুটে আসেন পড়শিরা।
কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লির আকাশগঙ্গা অ্যাপার্টমেন্টের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সোমা ঘোষ (৪৫)। খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃতদেহ পাঠানো হয়েছে ময়না-তদন্তে। পুলিশ জানায়, মৃতার গলায় গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ক্ষতচিহ্ন রয়েছে বুকে, হাতেও। দেহটির পাশে একটি বালিশ পড়ে থাকায় তদন্তকারীদের অনুমান, প্রথমে শ্বাসরোধ করে ধারালো অস্ত্রে গলার নলি কাটা হয়। বাগুইআটি থানা ও বিধাননগর গোয়েন্দা বিভাগ একযোগে তদন্ত করছে।
পুলিশ জানায়, ওই বহুতলের চারতলায় দু’কামরার ফ্ল্যাটে থাকেন সুজিত ঘোষ। সঙ্গে স্ত্রী সোমা এবং একমাত্র মেয়ে সায়নী ঘোষ। সল্টলেকের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী রোজকার মতোই এ দিন সকাল ৭টায় স্কুলে বেরিয়েছিল। সুজিতবাবু কাজে বেরোন বেলা ১১টায়। পুলিশ জানায়, সুজিতবাবু আগে একটি ইংরেজি দৈনিকে কাজ করতেন। ২০১২ সালে চাকরি যাওয়ার পর থেকে একটি প্রেসে প্রিন্টিং-এর সরঞ্জাম সরবরাহ করেন তিনি। এ দিন খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন সুজিতবাবু। তবে এই ঘটনায় সুজিতবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে তাঁর আচরণে বেশ কিছু অসঙ্গতি পেয়েছে পুলিশ। তাই তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ দিকে, সোমার বান্ধবী, ওই পাড়ারই বাসিন্দা পূরবী সাহার খোঁজ প্রথমে না মিললেও সোমবার রাতে তাঁকে আটক করে বাগুইআটি থানার পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাঁকে।