শুধু চিড়ে আর জল খেয়ে চার দিন ধরে হাসপাতালের লিফটে আটকে ছিলেন এক মহিলা। অবশেষে শুক্রবার উদ্ধার করা হয়েছে তাঁকে। এনআরএস-এর মতো একটা ব্যস্ত হাসপাতালে একটা মানুষ চার দিন ধরে লিফটে আটকে রইলেন আর কেউ টেরই পেলেন না? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।
মহিলার নাম আনোয়ারা বিবি। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থানার অন্তর্গত পশ্চিম চণ্ডীপুর গ্রামে। স্নায়ুজনিত সমস্যা রয়েছে বছর ষাটের আনোয়ারার। তাঁর ছেলে আবুল হোসেন মণ্ডলের দাবি, গত ২৫ বছর ধরে একাই হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যেতেন তাঁর মা। গত সোমবারও গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরও বাড়ি না ফেরায় চিন্তিত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।
আবুলের দাবি, মা বাড়িতে না ফেরায় তাঁরা এনআরএস হাসপাতালে আসেন এবং হাসপাতালের পুলিশ আউটপোস্টে বিষয়টি জানিয়ে আনোয়ারার একটি ছবিও দিয়ে যান। শিয়ালদহ জিআরপি-তেও ছবি দেন তাঁরা। বাদুড়িয়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরিও করেন।
তার পর থেকেই আনোয়ারা বিবির খোঁজ চলছিল। শুক্রবার হাসপাতালে টহল দিতে বেরিয়েছিলেন সেখানে প্রহরারত পুলিশকর্মীরা। হঠাৎই হাসপাতালের একটি লিফটের কাছে এসে দাঁড়িয়ে পড়েন তাঁরা। লিফটটি নীচে ছিল না। এবং উপরের দিকেও ওঠেনি। তাঁদের একটু সন্দেহ হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়েই তাঁরা চমকে ওঠেন। দেখা যায়, লিফটটি মাঝপথে আটকে। ভিতর থেকে গোঙানির আওয়াজ আসছে। তাঁদের বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে লিফটের ভিতরে কোনও মানুষ আটকে রয়েছেন। তৎক্ষণাৎ মেকানিককে খবর দেওয়া হয়। লিফট চালু হওয়ার পর দেখা যায় ভিতরে এক বয়স্ক মহিলা আটকে রয়েছেন। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করা হয়।