Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Tweet

বিতর্ক এড়ানো টুইটেই স্বচ্ছন্দ শহরের মেয়েরা

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আবহে টুইটারকে কেন্দ্র করে কম ‘জলঘোলা’ হয়নি। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় ঠাঁই পাওয়া অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের একটি টুইটই তার উদাহরণ হতে পারে।

রূপকিনী সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২১ ০৬:৪৩
Share: Save:

রাজনীতি বা বিতর্কিত ‘সামাজিক’ বিষয় নয়, কলকাতার মহিলারা টুইটারে ব্যক্তিগত আনন্দ-মুহূর্তের উদ্‌যাপন ভাগ করে নিতেই বেশি পছন্দ করেন। আগামী কাল, সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস। তার আগে এই ছবিই তুলে ধরেছে টুইটার সংস্থা। তাদের বিস্তারিত সমীক্ষা রিপোর্ট থেকেই এই ছবি জানা গিয়েছে বলে ওই সংস্থা জানিয়েছে।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আবহে টুইটারকে কেন্দ্র করে কম ‘জলঘোলা’ হয়নি। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় ঠাঁই পাওয়া অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের একটি টুইটই তার উদাহরণ হতে পারে। বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়ের সঙ্গে টুইট-যুদ্ধ গড়িয়েছিল থানা-পুলিশ পর্যন্ত। কিন্তু টুইটারের সমীক্ষা বলছে, কলকাতার নারী সমাজের ‘রাজনৈতিক’ বা বিতর্কিত ‘সামাজিক’ বিষয় নিয়ে টুইট করার প্রবণতা অপেক্ষাকৃত কম।

সায়নীর দলীয় সতীর্থ মিমি চক্রবর্তী বা নুসরত জহানের টুইটার অ্যাকাউন্টে তাকালেও ‘বৈচিত্র’ দেখা যায়। যাদবপুরের সাংসদ মিমির অ্যাকাউন্টে রাজনীতি যেমন রয়েছে, তেমনই আছে দৈনন্দিন খবর থেকে শুরু করে অনলাইনে কেনা জিনিসের সমালোচনা। কিছু দিন আগেই নজর কাড়ে পোষ্য সারমেয় চিকুর অসুস্থতার কথা জানিয়ে করা তাঁর টুইট। নুসরতের সাম্প্রতিক টুইটগুলির মধ্যে বেশির ভাগই খবর সংক্রান্ত এবং রয়েছে তাঁর নিজস্ব ‘কৃতিত্বের’ প্রচারও।

প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি কলকাতার নারীদের মধ্যে ‘রাজনৈতিক সচেতনতা’ কম? বিতর্ক থেকে গা বাঁচাতেই কি পছন্দ করেন কলকাতার মেয়েরা? নারী-আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বলছেন, সাম্প্রতিক কালে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলির ‘আইটি সেল’ যে ভাবে নাগরিকদের হেনস্থা করেছে, তাতে সাধারণ মেয়েরা আতঙ্কিত। সেই কারণেই হয়তো ‘বিতর্কিত’ বিষয় এড়িয়ে যেতে চান তাঁরা। তবে মহিলা রাজনৈতিক কর্মীরা কিন্তু নানা বিষয় নিয়ে অনেকটাই সক্রিয়।

সমীক্ষায় যে দাবি করা হয়েছে, টুইটারে খুঁজলেই মেলে তার প্রমাণ। রোজকার জীবনের ছোটখাটো সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিচ্ছেন মহিলারা। টুইট করছেন কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি থেকে শারীরিক বা মানসিক অসুস্থতার বাধা অতিক্রম করার মতো ব্যক্তিগত জয়ও। সেই প্রসঙ্গ টেনে অনেকে এ-ও বলছেন, ‘পুরুষতান্ত্রিক’ সমাজে নারীদের এই ব্যক্তিগত আনন্দ ভাগ করা বা কোনও বাধা অতিক্রম করার সামগ্রিক প্রভাব কিন্তু সমাজের উপরেও পড়ে।

শুধু কলকাতা নয়, গত দু’বছর ধরে ভারতের প্রায় আট হাজার মহিলার অ্যাকাউন্ট এবং তাঁদের করা ৫২২,৯৯২টি টুইট পর্যবেক্ষণ করেছে টুইটার। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ঠিক আগে তারই ভিত্তিতে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন তাঁরা, যার বিষয় ভারতের মহিলারা সমাজমাধ্যমে কী কী বিষয় নিয়ে কথা বলে থাকেন। সেখানেই উঠে এসেছে কলকাতার মহিলাদের প্রসঙ্গও। এ ছাড়া, সারা ভারতের মহিলাদের ক্ষেত্রেই তালিকায় সবার উপরে রয়েছে পছন্দের বিষয় নিয়ে করা টুইটের সংখ্যা। সাজপোশাক হোক বা বই, গান হোক বা খেলা, সমীক্ষা বলছে, ভাললাগার বিষয়গুলি নিয়েই মহিলারা সব চেয়ে বেশি টুইট করেন। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে গুয়াহাটি, লখনউ ও পুণে।

সমীক্ষা করা টুইটের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে আরও কিছু বিষয়। তাতে রয়েছে দৈনন্দিন নানা ঘটনা, ব্যক্তিগত আনন্দ-মুহূর্তের উদ্‌যাপন, একই পেশার মহিলাদের দল গঠন, মহিলাদের নিয়ে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, রোজকার জীবনের নানা সমস্যা এবং শিল্পকলা ও মনের ভাব ব্যক্ত করা টুইট।

এই সমীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে টুইটার ব্যবহারকারীদের অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও নতুন কিছু পদক্ষেপ করেছে তারা। তার মধ্যে রয়েছে ডিরেক্ট মেসেজে (সরাসরি মেসেজ পাঠানোর ব্যবস্থা) প্রেরকের প্রোফাইলের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা, নিজের করা টুইটে কে উত্তর দিতে পারবে, তা নিয়ন্ত্রণ করা, টুইটে অপছন্দের উত্তর মুছে দেওয়ার মতো সুবিধা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

twitter Tweet international women's day
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE