Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata Airport

কর্মী বিক্ষোভের জেরে কাজ বন্ধের শঙ্কা বিমানবন্দরে

আন্দোলনরত কর্মীদের যুক্তি, ওই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হলে তাঁদের কাজের চাপ বাড়বে, আর তখন প্রত্যেক কর্মীকেই কাজে নিতে বাধ্য হবে নতুন সংস্থাটি।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:১২
Share: Save:

কলকাতা বিমানবন্দরে ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং’-এর কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরে। অথচ বরাত পাওয়া নতুন সংস্থাটি এখনই সমস্ত ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং’ কর্মীদের কাজে নিতে চাইছে না। এ নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে কর্মী-বিক্ষোভের আঁচ ক্রমশ বাড়ছে। যা র পরিপ্রেক্ষিতে দেশের পাঁচ শহর থেকে কলকাতায় উড়ান বন্ধের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কথা উঠছে। আন্দোলনরত কর্মীদের যুক্তি, ওই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হলে তাঁদের কাজের চাপ বাড়বে, আর তখন প্রত্যেক কর্মীকেই কাজে নিতে বাধ্য হবে নতুন সংস্থাটি। অন্য দিকে, আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত কাজ শেষ না হলে নতুন বছরে বিমানবন্দরে ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং’-এর কাজ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছে উড়ান সংস্থাগুলি।

‘ভদ্র’ নামে যে সংস্থার অধীনে কলকাতা বিমানবন্দরে পণ্য ওঠানো-নামানো, সিঁড়ি লাগানো, বিমান পরিষ্কার-সহ বিভিন্ন কাজ করেন ৩৮০ জন ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং’ কর্মী, তার চুক্তি শেষ হচ্ছে চলতি বছরে। কিন্তু নতুন বরাত পাওয়া, এয়ার ইন্ডিয়ার সহযোগী সংস্থা ‘এআই এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস লিমিটেড’ ৩৮০ জনকেই কাজে নিতে রাজি নয়। তাদের যুক্তি, প্রথমে ২০০ জন কর্মী এবং দ্বিতীয় দফায় আরও ১০০ জন কর্মীকে কাজে নেওয়া হবে। পরে কাজের চাপ বাড়লে বাকিদের কথা ভাবা হবে। প্রথম দফার বাছাই কর্মীদের এখনই নিজেদের শংসাপত্র জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু নেতাদের দাবি, সকলকে কাজে নিলে তবেই শংসাপত্র জমা দিতে দেওয়া হবে।

উড়ান সংস্থার আবার আশঙ্কা, ২০০ জন কর্মী নিয়োগের কাজ শেষ না হলে আগামী শুক্রবার থেকে বিমানবন্দরে ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং’-এর কাজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কলকাতায় এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া এবং ভিস্তারার যাত্রিবাহী বিমানে এবং বিমানবন্দরের পণ্য বিভাগে জিনিসপত্র তোলা-নামানোর কাজ ওই কর্মীরাই করেন। ফলে সমস্যা না মিটলে ওই দুই উড়ান সংস্থার পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। জটিলতা না মিটলে জানুয়ারিতে আমেরিকা, রাশিয়া এবং ভারতের পুণে থেকে করোনার প্রতিষেধক শহরে আসার কাজেও সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কলকাতার ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং’ কর্মীদের একাংশের মতে, এখনও দেশের পাঁচটি শহর (মুম্বই, চেন্নাই, পুণে, আমদাবাদ ও নাগপুর) থেকে শহরে সরাসরি উড়ানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এখন সপ্তাহে তিন দিন (সোম, বুধ ও শুক্র) ওই শহরগুলি থেকে উড়ান কলকাতায় আসে। ডিসেম্বরের গোড়ায় বাগডোগরা যাওয়ার পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে অনুরোধ করলে শুধু দিল্লির ক্ষেত্রে তা তুলে নেওয়া হয়। কর্মীদের যুক্তি, বাকি শহরগুলির উপর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে উড়ানের সংখ্যা বাড়বে, ফলে কর্মীদের চাহিদাও বাড়বে। সে ক্ষেত্রে এয়ার ইন্ডিয়া সকলকেই কাজে নিতে বাধ্য হবে।

এ নিয়ে কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘সমাধানসূত্র বার করতে ইউনিয়ন নেতাদের অনুরোধ করেছি।’’ ওই কর্মীদের পাশে থাকা তৃণমূল নেতা বরুণ নট্ট এবং স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের দাবি, সকলকে কাজে না নিলে আন্দোলন চলবে। বরুণবাবু বলছেন, ‘‘যতক্ষণ দাবি মানা না-হচ্ছে আন্দোলন চলবে।’’ এ নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার ওই সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁরা ফোন ধরেননি, টেক্সট মেসেজেরও উত্তর দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Airport
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE