তরুণ রাও।
অভাবের সংসারে বেশি দূর পড়াশোনা এগোয়নি। পঞ্চম শ্রেণি পাশ করার পরেই সংসারের হাল ধরতে বাইক সারাইয়ের কাজ শিখেছিলেন বছর কুড়ির তরুণ রাও। পাড়ারই একটি দোকানে কাজ করে প্রায় তাঁর উপার্জনেই চলছিল পাঁচ জনের সংসার। কিন্তু সোমবার দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার রিমাউন্ড রোডে অর্ডন্যান্স গেটের কাছে লরির ধাক্কায় সেই যুবকের মৃত্যুতে অথৈ জলে গোটা পরিবার।
ডালু সরকার লেনে এক কামরার ঘরে বাবা-মা আর দুই বোনের সঙ্গে থাকতেন তরুণ। বাবা শঙ্কর রাও কিছু কাজ করতেন না। বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করেন মা লক্ষ্মী রাও। দুই বোন প্রিয়া ও খুশি যথাক্রমে দ্বাদশ ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। মূলত তরুণের উপার্জনের উপরেই নির্ভর করত গোটা পরিবার। ইদানীং পাড়ার একটি বাইকের দোকানে কাজ করছিলেন তিনি। বছর দুই পরে বাড়ি তৈরির পরিকল্পনাও করেছিলেন। কিন্তু ছেলেকে হারিয়ে এখন বাড়ি তৈরি তো দূর, সংসার কী ভাবে চলবে সেটাই ভেবে পাচ্ছে না রাও পরিবার।
সোমবার সকালে তরুণের বাইকে একটি লরি ধাক্কা মারলে গুরুতর আহত হন ওই যুবক। তাঁকে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ও পরে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইটিইউয়ে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। সেখানেই রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। মঙ্গলবার এন আর এসে ময়না-তদন্তের পরে দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।
এ দিন তরুণের পাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, সকাল থেকে সেখানে শোকের পরিবেশ। প্রতিবেশীরা ভিড় করেছেন বাড়ির সামনে। মৃত যুবকের এক আত্মীয় ভীষ্ম রাও বলেন, ‘‘বাইক সারানোর পরে সব ঠিক আছে কি না দেখতে বাইকটি নিয়ে বেরিয়েছিল তরুণ। তখনই ঘটে দুর্ঘটনা। সংসারটা পুরো ভেসে গেল।’’ দাদার মৃত্যুর পরে পড়াশোনাটাও আর চালিয়ে যেতে পারবে কি না, সেটাও জানে না দুই বোন প্রিয়া ও খুশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy