গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
অনলাইন একটি সংস্থার মাধ্যমে এক প্লেট বিরিয়ানির অর্ডার দিয়েছিলেন টালিগঞ্জের এক ব্যক্তি। কিন্তু বিরিয়ানি তো আসেইনি, উল্টে তার দাম বাবদ ২৫৪ টাকার পাশাপাশি ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে দু’দফায় প্রায় ১০ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবারই যাদবপুর থানায় এমন অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ব্যক্তি। প্রাথমিক তদন্তের পরে বুধবার পুলিশ জানায়, মুম্বইয়ের কোনও হ্যাকার গোষ্ঠীর খপ্পরে পড়েছিলেন ওই ব্যক্তি।
পুলিশ সূত্রের খবর, হরিদেবপুরের বাসিন্দা অভিযোগকারীর নাম ঋষভ ঘোষ। তিনি প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ সংস্থার স্টুডিয়োয় কাজ করেন। মঙ্গলবার দুপুরে সেখান থেকেই তিনি ওই খাবার সরবরাহকারী সংস্থার মাধ্যমে বিরিয়ানি আনার অর্ডার দেন। অনলাইনে দাম বাবদ ২৫৪ টাকা কেটে নিলেও অর্ডার বাতিল হয়ে যায়। ঋষভ এ দিন বলেন, ‘‘এর পরেই ইন্টারনেট থেকে ওই সংস্থার হেল্পলাইন নম্বর দেখে সেখানে ফোন করি। কেউ ফোন ধরেননি। কয়েক মিনিটের মধ্যেই অন্য একটি নম্বর থেকে ফোন করে সমস্যা শুনে বলা হয়, আপনার মোবাইলে একটি লিঙ্ক যাবে। সেটিতে ক্লিক করলে ডেলিভারি বয় আপনার ঠিকানায় বিরিয়ানি দিয়ে আসবেন।’’
ঋষভের দাবি, এর পরে মোবাইলে আসা লিঙ্কে ক্লিক করতেই তাঁর ফোনটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও ভাবেই কিছু করা যাচ্ছিল না। স্ক্রিনে ভেসে ওঠে, আমার ফোন একটি কম্পিউটরের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই মেসেজ আসে, আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ২৫০০ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।’’ এর পরে ঋষভ তাঁর ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারেন, শুধু ২,৫০০ টাকাই নয়, আরও ৭,৫৯৯ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে অ্যাকাউন্ট থেকে। যাদবপুর থানার দ্বারস্থ হন ঋষভ। যে নম্বর থেকে ফোনটি এসেছিল, সেই নম্বর থানায় দেওয়ার পাশাপাশি সরবরাহকারী সংস্থার বিরুদ্ধেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
কী করবেন?
• ইন্টারনেট থেকে পাওয়া হেল্পলাইন নম্বর যাচাই করুন
• হেল্পলাইনে কথা বলে পাওয়া লিঙ্ক বা ওটিপি ব্যবহার করবেন না
• মোবাইল থেকে ইউপিআই যুক্ত অ্যাকাউন্ট ব্যবহারে নিয়মিত লগ আউট করবেন
• ব্যাঙ্কিং অ্যাপ্লিকেশনের পাসওয়ার্ড এবং ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের পিন নিয়মিত বদলান
সূত্র: সন্দীপ সেনগুপ্ত, সাইবার বিশেষজ্ঞ
এ দিন ঋষভ বলেন, ‘‘আড়াইশো টাকার বিরিয়ানি খেতে গিয়ে ১০ হাজার টাকা খোয়া গেল! খাবার সরবরাহকারী ওই সংস্থা আমার টাকা ফেরত দিক।’’ এ দিন ওই সরবরাহকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, তাদের কোনও হেল্পলাইন নম্বরই নেই! সংস্থার মোবাইল অ্যাপের চ্যাট বাক্স এবং ইমেলেই শুধু গ্রাহকের অভিযোগ নেওয়া হয়। সংস্থার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘গ্রাহকের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই প্রতারণার সঙ্গে সংস্থা কোনও ভাবেই জড়িত নয়। পুলিশ তদন্ত করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy