Advertisement
E-Paper

আহত হনুমানকে বাঁচাতে রাতভর দৌড়ঝাঁপ

বেলুড় স্টেশনে এমন দৃশ্য দেখে মুখ ফেরাননি বেলুড়ের বাসিন্দা ওই যুবক। বরং মানবিকতা দেখিয়ে আরও কয়েক জন যুবককে জুটিয়ে হনুমানটিকে নিয়ে ছুটেছিলেন মানুষের চিকিৎসার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০০
সহমর্মী: হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আহত হনুমানটিকে। নিজস্ব চিত্র

সহমর্মী: হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আহত হনুমানটিকে। নিজস্ব চিত্র

রাতের শেষ ট্রেনে প্ল্যাটফর্মে নেমে এক কোনায় পুঁটলির মতো কিছু একটা পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয়েছিল অফিস ফেরত যুবকের। সামনে যেতেই দেখলেন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে বস্তা চাপা দেওয়া এক হনুমান। পাশে পড়ে একটি বাঁশ। বোঝা গেল, কেউ বাঁশ দিয়ে পেটানোয় চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়েছে হনুমানটি।

মঙ্গলবার বেলুড় স্টেশনে এমন দৃশ্য দেখে মুখ ফেরাননি বেলুড়ের বাসিন্দা ওই যুবক। বরং মানবিকতা দেখিয়ে আরও কয়েক জন যুবককে জুটিয়ে হনুমানটিকে নিয়ে ছুটেছিলেন মানুষের চিকিৎসার। কিন্তু সেখানে পশুদের চিকিৎসা না হওয়ায় বিনা চিকিৎসায় যন্ত্রণায় ছটফট করা হনুমানটিকে নিয়ে জনমানবহীন রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রাথমিক ভাবে বিপাকেই পড়েছিলেন তাঁরা। শেষে এক পরিচিতের মাধ্যমে তাঁরা খোঁজ পান কলকাতার বেলগাছিয়ায় রাজ্যের পশু হাসপাতালের।

উদ্ধারকারী যুবক সোনু সিংহ বলেন, ‘‘তখন রাত প্রায় সাড়ে ১২টা। কী করে বেলগাছিয়া নিয়ে যাব বুঝতে পারছিলাম না। অ্যাম্বুল্যান্স এক হাজার টাকা ভাড়া চাইল।’’ টাকার জোগাড় করতে না পেরে শেষে বেলুড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালের বাইরে একটি বহুতলের ছাদে হনুমানটিকে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সোনুরা। কারণ রাস্তায় রাখলে হনুমানটিকে কুকুর আক্রমণ করতে পারত।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সোনু জানান, ছাদে তুলে দিলেও তাঁরা হনুমানটিকে ছেড়ে যেতে পারেননি। তাঁদের পরিচিত ব্যক্তির থেকে ঘটনাটি জেনে স্থানীয় তিন বাসিন্দা ভাস্করগোপাল চট্টোপাধ্যায়, সনাতন গোস্বামী ও জয়ন্ত সরকার রাতেই পৌঁছে যান বেলুড়ের

ওই হাসপাতালে। তাঁরাই ডাকেন হাওড়া পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্স। তাতে চাপিয়ে যন্ত্রণায় নিস্তেজ হনুমানকে নিয়ে যাওয়া হয় বেলগাছিয়ার হাসপাতালে। খবরটি জেনে রাজ্য প্রাণী কল্যাণ পর্ষদের সদস্য

পল্লব গুপ্ত আগেই হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসার বন্দোবস্ত করেন। তবে বেলগাছিয়ার ওই হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা না থাকলেও হনুমানটিকে ব্যথা কমানোর ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। এর পরে রাতে পশু হাসপাতালেরই জরুরী বিভাগে রেখে দেওয়া হয় হনুমানটিকে।

রাজ্য প্রাণী কল্যাণ বিকাশ দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর মিন্টু চৌধুরী বলেন, ‘‘হনুমানটির শিরদাঁড়ায় ও একটি হাতে বেশ চোট আছে।’’ বুধবার সকালে রাজ্য বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয় হনুমানটিকে। এ ভাবে নিরীহ প্রাণীটিকে পেটানোর ঘটনার নিন্দা করেছেন সকলেই।

সকালে অবশ্য যন্ত্রণা কিছুটা কমতেই দাঁত মুখ খিঁচিয়ে নিজের মেজাজেই ফিরে এসেছে ‘হনু’।

Monkey Belur Belur State General Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy