ছিলেন সুদের কারবারি, হয়ে গেলেন ছিনতাইবাজ।
সুদের কারবারে কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতি হওয়ায় পরে নতুন জায়গায় উঠে যান মহম্মদ ওয়াসিম। নতুন জায়গায় গিয়ে বাড়ি এবং দোকান কেনেন তিনি। কিন্তু নতুন ব্যবসাতেও লালবাতি জ্বলতে দেরি হয়নি। ফের নতুন ব্যবসা ফেঁদে বসেন ওয়াসিম। তবে এ বার ছিনতাইয়ের ব্যবসা। সম্প্রতি বড়তলা এলাকা থেকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে ওয়াসিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে ছিনতাইয়ের পেশায় নামার এই গল্প পাওয়া গিয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি।
তদন্তকারীরা জানান, চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিলে ফুলবাগান, বড়তলা ও টালিগঞ্জ থানা এলাকায় মোটরবাইক করে এসে হার ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ছিলেন ওয়াসিম। তাঁকে জেরা করে ছিনতাই হওয়া হার ও মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
লালবাজার সূত্রে খবর, কড়েয়া থানা এলাকার সামসুল হুদা রোডে পারিবারিক বাড়ি ওয়াসিমের। অন্য ভাইদের সঙ্গে স্ত্রী এবং কন্যাকে নিয়ে সেখানেই থাকতেন তিনি। পুলিশের দাবি, পরিবারের অমতে বছর দুয়েক আগে সুদের কারবার শুরু করেন ওয়াসিম। কিন্তু তাতে প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতি হওয়ায় পরিবারের মধ্যে বিরোধ বাধে ধৃতের সঙ্গে। এর পরেই হাওড়ার পিলখানায় মোটা টাকা সেলামি দিয়ে বাড়ি এবং দোকান ভাড়া নেন তিনি।
তদন্তকারীদের দাবি, নতুন ব্যবসা শুরু করলেও চলতি বছরের গোড়ার দিকে তা মুখ থুবড়ে পড়ে। এর মধ্যেই নিজের তিন বছরের মেয়েকে বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য ঋণ নিয়েছিলেন ওয়াসিম। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, পুরোনো বকেয়া মেটানো দূরের কথা, ওয়াসিম আরও ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তা থেকেই বাঁচতে ছিনতাইয়ের পথ নেন তিনি।
পুলিশ জানায়, কড়েয়াতে থাকার সময়ে বন্ধুদের কাছে মোটরবাইক করে এসে ছিনতাইয়ের কথা শুনেছিলেন ওয়াসিম। বাজারে কয়েক লক্ষ টাকা বকেয়া হয়ে যাওয়ার পরে নিজের মোটরবাইক করে ওই পথ বেছে নেন তিনি।
এক তদন্তকারী অফিসার জানান, প্রতি সপ্তাহেই হাওড়া থেকে কড়েয়ায় মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন তিনি। তবে প্রতি বারই বড় রাস্তার বদলে অলিগলি দিয়ে যাতায়াত করতেন। সেই যাতায়তের পথে পরপর চারটি ছিনতাই করতেন ওয়াসিম। এ বার মোটরবাইকের রং এবং তাঁর ছবি সিসিটিভি-র ক্যামেরায় ধরা পড়ায় পুলিশের জালে পড়ে যান ওয়াসিম।