Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা

.....

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:০০

‘বাদশাহী আংটি’তে নতুন ফেলুদা

ও বিলিতি বই পড়ে আর নিজের বুদ্ধিতে দারুণ ডিটেক্টিভের কাজ শিখে নিয়েছে। তার মানে অবশ্যি এই নয় যে চোর ডাকাত খুনি এইসব ধরার জন্য পুলিশ ফেলুদাকে ডাকে। ও হল যাকে বলে শখের ডিটেক্টিভ।’ এ ভাবেই তোপসে’র বয়ানে বাদশাহী আংটি-র (আনন্দ, প্রথম সংস্করণ: ১৯৬৯) শুরুতে ফেলুদা’র সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন সত্যজিত্‌ রায়। তখনও গোয়েন্দাগিরিটা নেশা ফেলুদার কাছে, পেশা নয়। লখনউ বেড়ানোর কথা উঠলে তোপসের বাবা বলে ওঠেন ‘ফেলু তো আসতেই পারে, কিন্তু ও যে নতুন চাকরি নিয়েছে, ছুটি পাবে কি?’ আসলে ১৯৬৬-তে সন্দেশ-এ ‘ধারাবাহিক রহস্য উপন্যাস’ হিসেবে যখন বাদশাহী আংটি লিখছেন সত্যজিত্‌, ফেলুদা আদৌ আইকন নয়, প্রস্তুতিপর্ব থেকে পুরোদস্তুর গোয়েন্দা হয়ে ওঠার পথে। ‘এটাই তো আমার কাছে চ্যালেঞ্জ!’—সন্দীপ রায়ের স্বরে উত্তেজনা, তাঁর পরিচালনায় ‘বাদশাহী আংটি’ ১৯ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে কলকাতায়।

‘ফেলুর কাছে পয়েন্ট থ্রি টু কোল্ট রিভলভারই নেই তখন, খালি হাত, সম্বল কেবল মগজাস্ত্র। বয়স অনেকটাই কম, লালমোহনবাবু তার জীবনে আসেনি, আত্মীয়স্বজন-অভিভাবক চারপাশে, ততটা সিগারেট খাওয়ারও সুযোগ পায় না। তোপসের বাবা থেকে তাঁর বন্ধু ধীরুকাকা পর্যন্ত অনেকেই তাকে আদর করে ফেলুবাবু বলে ডাকে। এমন একটা পরিবেশ বজায় রেখে আমায় নতুন করে ফেলু চরিত্রটা তৈরি করতে হয়েছে।’ সন্দীপের কথার সূত্রে স্পষ্ট হয়ে আসে কেন আবির-এর (চট্টোপাধ্যায়) ফেলুদা আগের ফেলুদাদের থেকে অনেকটাই আলাদা। ‘বাবার ছবিতে সৌমিত্রকাকা বা আমার আগের ছবিগুলিতে বেণু (সব্যসাচী চক্রবর্তী) একেবারে পাকা গোয়েন্দা, তোপসে এমনকী লালমোহনবাবুর কাছেও প্রায় প্রাজ্ঞ অভিভাবকের মতো। তুলনায় এ ছবিতে আবিরের ফেলুর মধ্যে ইনোসেন্স অনেকটাই, যদিও রহস্য উন্মোচনে অসম্ভব সিরিয়াস—এ দুটোই আছে আবিরের অভিনয়ে। অতএব ফেলুদাকে নিয়ে এত দিনের ছবি দেখার অভ্যেস থেকে খানিকটা সরে এসে এ বারে একটু নতুন চোখে দেখতে হবে বাদশাহী আংটি।’ নতুন এই ফেলুদাকে কালো চশমা পরতেও দেখা যাবে ছবিতে, সত্যজিত্‌ স্বয়ং আনন্দ-র বইতে সেই ইলাস্ট্রেশন করে গেছেন (বাঁ দিকে)। আর সন্দেশ-এ প্রকাশিত উপন্যাসের সত্যজিত্‌-কৃত নামাঙ্কনটি ছবির টাইটেল থেকে পোস্টার-এ (ডান দিকে) ব্যবহার করেছেন সন্দীপ রায়।

বহুরূপী

‘রবীন্দ্রনাথের একটা ট্র্যাজিক গ্র্যাঞ্জার আছে’—‘রবীন্দ্রনাথের নাট্য-চিন্তা’ নিয়ে চিত্তরঞ্জন ঘোষকে বলেছিলেন শম্ভু মিত্র। রচনাটির ভাষ্যকার শম্ভু মিত্র, লিপিকার চিত্তরঞ্জন ঘোষ। শম্ভু মিত্রের মননে ফুটে উঠেছে কবির নানা রূপ, যেমন ‘ট্র্যাজিক গ্র্যাঞ্জার’-এর অনুষঙ্গ: ‘রবীন্দ্রনাথ কতগুলি সেক্যুলার উত্‌সব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলেন। হলকর্ষণ, বৃক্ষরোপণ, বসন্ত-উত্‌সব, বর্ষামঙ্গল ইত্যাদি। সুন্দর উত্‌সব। কিন্তু বাঙালি নিল না। বেড়ে গেল পোলিটিক্যাল দাদাদের বারোয়ারি পুজো। ... ট্র্যাজিক নয়?’ বহুরূপী ১২২ (সম্পা: প্রভাতকুমার দাস) ‘শম্ভু মিত্র জন্মশতবর্ষ সংখ্যা’, তাতে একগুচ্ছ রচনার মধ্যে এটি ফের প্রমাণ করে আজও কত প্রাসঙ্গিক তিনি। সঙ্গে ক্রোড়পত্র স্মরণ খালেদ চৌধুরী শিশিরকুমার ভাদুড়ীকে নিয়ে। খালেদ চৌধুরীর মঞ্চচিত্রণের খসড়া তাঁর মঞ্চভাবনার উপর রচনাদির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যাবে। আর শিশিরকুমার সম্পর্কে রচনার মধ্যে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘শিশিরকুমারের দৃষ্টান্ত’ নিয়ে।

আরণ্যক

বান্ধবগড় জঙ্গলে যেতে যেতে চোখে পড়ল, রাস্তার ধারের নুড়িপাথরে লুকোনো লাল-ঝুঁটি ল্যাপউইং-এর বাসায় সদ্যোজাত ছানারা। অতএব ক্যামেরা হাতে অবতরণ। ছবি তুলে জিপের দিকে হাঁটতে হাঁটতে টের পেলেন, বাঁ দিকের লম্বা ঘাসবনে হলুদ-কালো ডোরার ঝলক। দম বন্ধ করে হাঁটছেন ছবি-শিকারি, ৫০ গজ দূরে সমান্তরালে হাঁটছে বনের রাজা। থামলে সে-ও থামছে।

রাস্তার মোড় অবধি গিয়ে বাঘ ঘুরলেন উল্টো দিকে, গাড়ির দিকে ছুটলেন মানুষটি। বিশ্বজিত্‌ রায়চৌধুরীর সদ্য প্রকাশিত ডেজ ইন দ্য ওয়াইল্ড বইটিতে রাজস্থান থেকে অরুণাচলের পাখি, সরীসৃপ, চেনা-অচেনা প্রাণীর ভিড়। লেখক নিজেকে ‘শখের ফটোগ্রাফার’ বলে দাবি করেন, তবে এর ২৭৫টি অপরূপ ছবিতে স্পষ্ট তাঁর পেশাদারিত্ব।

শিল্পকথা

সোসাইটি অব কন্টেম্পোরারি আর্টিস্টস-এর পঞ্চান্নতম বার্ষিক প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে বিড়লা একাডেমিতে ৯-২১ ডিসেম্বর। প্রথম থেকেই এতে ছিলেন বি আর পানেসর, অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়, গণেশ পাইন এবং সাধন চক্রবর্তী। গত দুই বছরে চলে গিয়েছেন এই চার জন শিল্পী। এঁদের স্মরণে ১৬-২১ ডিসেম্বর বিড়লা অ্যাকাডেমিতেই আয়োজিত হয়েছে ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’। প্রকাশিত হবে চার শিল্পীর কাজ নিয়ে একটি বই। অন্য দিকে ‘স্পেকট্রাম আর্টিস্ট সার্কেল’এর ৪১তম প্রদর্শনী ৯-১৫ ডিসেম্বর অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে। উদ্বোধনে রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়।

অন্য রকম দিন

বৈদগ্ধ্য, যুক্তি ও শব্দবাণে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করার মতো সংসদীয় অস্ত্রের প্রয়োগ আজ বিলুপ্তপ্রায়... এক যুগ আগেই বাংলার বিধানসভার একশো বছর: রাজানুগত্য থেকে গণতন্ত্র বইয়ে দুঃখ করেছিলেন সত্যব্রত দত্ত। সারদা-অধ্যুষিত রাজ্যে মহম্মদ সাদেকের মতো বিধায়কও আজ কল্পকথা। সত্যব্রতবাবুই তাঁর বইয়ে স্বরাজ্য পার্টির বিধায়ক মহম্মদ সাদেকের কথা জানিয়েছিলেন। বর্তমান বিধানসভা তৈরির সময় সাদেক বলেছিলেন, সাধারণের অন্ন বস্ত্র আশ্রয়ের সংস্থান করে দিতে পারলে ইডেন গার্ডেনের গাছতলাতেও আলোচনা করতে আপত্তি নেই। সেই যুগ অস্তমিত, ৮৫-তে বিদায় নিলেন ইতিহাসকারও। বিশ্বভারতী থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, গুরুদাস কলেজে অধ্যাপনা করেছেন সত্যব্রত দত্ত। ত্রিগুণা সেনের সাংসদজীবন নিয়ে ইংরেজি বইটিই তাঁর শেষ লেখা।

নতুন ব্যাখ্যা

প্রাণ কী, সে ব্যাপারে পণ্ডিতরা চিন্তিত বহু কাল। সম্প্রতি খানিক আলোকপাত করেছেন দুই বিজ্ঞানী। আমেরিকায় লরেন্স বার্কলি ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি-র ফ্রিজফ কাপরা এবং ইতালিতে উনিভার্সিতা দেগলি স্তাদি রোমা ত্রে-র পিয়ের লুইজি লুইনি। কাপরা ১৯৭০ দশকের গোড়ায় লিখেছিলেন দ্য টাও অব ফিজিকস, পাশ্চাত্যের পদার্থবিজ্ঞান আর প্রাচ্যের দর্শনচিন্তার যোগাযোগ প্রমাণে। লুইজি-র গবেষণার বিষয় প্রাণীদেহে রাসায়ানিক ক্রিয়া-বিক্রিয়া। দুই বন্ধু মিলে লিখেছেন দ্য সিস্টেমস ভিউ অফ লাইফ। প্রতিপাদ্য অভিনব। প্রাণ আসলে অর্বুদ-নির্বুুদ কোষের আর হাজারো-লাখো বিক্রিয়ার যৌথ উদ্যোগ। নতুন এই ব্যাখ্যা সম্বল করে কাপরা এবং লুইজি চলে গেছেন অর্থনীতি, রাজনীতি, চিকিত্‌সা, মনস্তত্ত্ব বা আইনের আলোচনায়। বই প্রকাশ উপলক্ষে সম্প্রতি অক্সফোর্ড বুক স্টোরে বক্তৃতা দিলেন লুইজি। আলোচনায় ছিলেন স্বামী আত্মপ্রিয়ানন্দ এবং রাজু রামন।

প্রয়াণ

হাতে সুটকেশ কিংবা কাঁধের ঝোলায় থাকত এক গুচ্ছ লিটল ম্যাগাজিন। প্রকাশককে বলতেন, দাদা, আজ আসি! রাত্রের ট্রেনটা না ধরলে চক্রধরপুরে ডিউটি ধরা যাবে না। মুখে অনাবিল হাসি। কিডনির অসুখে বেশ কিছু কাল ধরে ব্যাগ বইতে পারছিলেন না অনিল ঘড়াই। প্রান্তিক পরিবারে জন্ম ১৯৫৭-য়, মেদিনীপুরের এক গ্রামে। নিম্নবর্গের মানুষের জীবনলিপি উঠে আসত তাঁর রচনায়। প্রথম উপন্যাস নুনবাড়ি, প্রথম গল্প-বই কাক। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় নব্বই। দে’জ থেকে প্রকাশ হতে চলেছে পঞ্চাশটি গল্পের সংকলন। বঙ্কিম স্মৃতি পুরস্কার, দলিত পুরস্কার পেয়েছেন। মিষ্টিমুখের লেখকটি সম্প্রতি চলে গেলেন।

কবির সঙ্গে দেখা

কেবলই জলের মতো ঘুরে ঘুরে একই চরণ লেখেন শক্তি চট্টোপাধ্যায়, তাঁর শেষ জীবনের কবিতা সম্পর্কে এমন অভিযোগ বার বার শোনা গিয়েছে। কিন্তু কেন সেই ঘুরে ঘুরে আসা? কোথায় তিনি অমিত্রাক্ষরের প্রভু, সনেটেই বা কোথায় তিনি একা ও অনন্য—সম্প্রতি এ সব নিয়ে আলোচনা করলেন জয় গোস্বামী, বাংলা আকাদেমিতে, ‘কবির সঙ্গে দেখা’ অনুষ্ঠানে। শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিনে ‘আমার চোখে শক্তি চট্টোপাধ্যায়’ নামের অনুষ্ঠানে। ছিলেন শাঁওলী মিত্র। প্রকাশিত হল বাংলা আকাদেমির বঙ্কিমচন্দ্র রচনাবলি ২য় খণ্ড।

মেয়েদের জন্য

ভায়োলেন্স-এর কোনও স্থান-কাল হয় না। পাত্র হয় অবশ্যই, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা নেমে আসে নারী-র উপর। কারণ ওরা তো প্রতিরোধ-প্রত্যাঘাত করে না, বরং সমাজের তোলা আঙুলের সামনে গুটিয়ে যায় লজ্জা-অপমানে। এই মেয়েদেরই সাহায্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রামে গ্রামে দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন ‘জীবিকা ডেভেলপমেন্ট’ সংস্থার কর্মীরা। ‘নারীনির্যাতন-বিরোধী আন্তর্জাতিক পক্ষ’ উদ্‌যাপনের অঙ্গ হিসেবে একগুচ্ছ কর্মসূচি ওঁদের, সঙ্গী কলকাতার আমেরিকান সেন্টার। সেখানেই ১০ ডিসেম্বর দুপুরে কথোপকথনে থাকবেন ফ্লাভিয়া অ্যাগনেস, রুচিরা গোস্বামী সহ অনেকে। আছে ব্যতিক্রমী কমিউনিটি থিয়েটারও, চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ও অনির্বাণ চক্রবর্তীর নির্দেশনায় নাটক ‘আমি ভয় করব না’। এতদিন কষ্ট-ভয়ের অন্ধকারে ছিলেন যাঁরা, তাঁরাই সে দিন মঞ্চের আলোয়।

অতীতের ছবি

ক্লাইড ওয়াডেল ১৯৪৩-এ এই শহরে এসেছিলেন মার্কিন সামরিক আলোকচিত্রী হিসেবে। ওঁর আগ্রহের বিষয় ছিল সাধারণ মানুষ। তাই কাজের ফাঁকেই ওঁর লেন্সে উঠে এসেছে তখনকার কলকাতার জনজীবন।

দেশে ফিরে তিনি এরই ৬০টি ছবি নিয়ে প্রকাশ করেন একটি অ্যালবাম, আ ইয়াঙ্কস মেমরিজ অফ ক্যালকাটা। সেই ছবি নিয়ে আজ বিকেলে একটি প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আকৃতি আর্ট গ্যালারিতে। চলবে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। সঙ্গের ছবিটি মার্বেল প্যালেস-এর, প্রদর্শনী থেকে। প্রাসাদের সামনে ঠেলাচালকরাই নজর কেড়েছে শিল্পীর।

উত্‌সব

বাংলার লোকগান, নৃত্য ও পালা নিয়ে বাইপাসের ধারে লোকগ্রামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাত্‌সরিক লোকপার্বণ ‘সুরে ছন্দে মাটির গন্ধে’। রয়েছে হস্তশিল্পের প্রদর্শনীও। সঙ্গে লালন মঞ্চে তথ্যচিত্র ও আলোচনা। মেলা শেষ হবে আজ। অন্য দিকে ১০-১৪ ডিসেম্বর শিশু পত্রিকা ‘মুক্ত আলো’ ডাক্তার যদুনাথ মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে আয়োজন করেছে ৬৫তম বার্ষিক শিশুসাহিত্য উত্‌সব, বেহালার জয়রামপুর জলা রোডের মুক্ত আলো সভাঘরে।

তিন কাহন

বাঙালির এক শতকের জীবনযাপনকে ছোঁয়ার চেষ্টা করেছি ছবির ভিতর দিয়ে। এই নতুন শতক অবধি কী ভাবে তা বদলাচ্ছে, নৈতিকতায় পরিবর্তন আসছে, মূল্যবোধে ক্ষয়, এমনকী বাংলা ভাষাতেও দূষণ ঢুকে পড়ছে, তার একটা হদিশ যেন। এই যোগসূত্র থেকেই তিনটে আলাদা গল্প নিয়ে ছবি, তিনটে পিরিয়ডের ডকুমেনটেশন-এর মধ্যে দিয়ে সেগুলির লাবণ্য বা সীমারেখা ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি।’ বলছিলেন পরিচালক বৌদ্ধায়ন মুখোপাধ্যায়, তাঁর ‘তিন কাহন’ সদ্য দেখানো হল গোয়ায় আন্তর্জাতিক ফিল্মোত্‌সবে, ইন্ডিয়ান প্যানোরামা-য়। মুম্বইবাসী মানুষটি (জ. ১৯৭৩) আদতে কলকাতার বাঙালি, মা মীরা মুখোপাধ্যায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, বাবা প্রয়াত বনজ মুখোপাধ্যায় ছিলেন কবি। সাউথ পয়েন্ট থেকে সেন্ট জেভিয়ার্স, অর্থনীতি নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন, বিজ্ঞাপনে পা। কলকাতা ছেড়ে মুম্বই, ‘লিটল ল্যাম্ব ফিল্মস’ তৈরি করে লাগাতার বিজ্ঞাপনের ছবি, কান ফেস্টিভ্যালে ‘সিলভার লায়ন’-সহ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ‘তিন কাহন’ ওদের প্রথম কাহিনিচিত্র, প্রযোজক সহধর্মিণী মোনালিসা। সে সূত্রেই কসোভো, জাকার্তা, সিয়াট্ল ফেস্টিভ্যালে পুরস্কার ও সম্মান, দুনিয়া জুড়ে আরও নানান ফিল্মোত্‌সবে দেখানো হচ্ছে ছবিটা। ‘আমার আদর্শ সত্যজিত্‌ রায়। তাঁর জীবন বা ছবি করতে আসাকেই প্রায় অনুসরণ করে চলেছি যেন। তাঁর ‘তিন কন্যা’-র গড়নেই আমার এই ‘তিন কাহন’। এতে সিনেমার শিল্পস্বভাবের প্রতি দায়বদ্ধ থেকেছি। ভারতীয় সিনেমার শতবর্ষে শ্রদ্ধার্ঘ্য এ ছবি।’ জানালেন বৌদ্ধায়ন।

বিজ্ঞানী

শরীর কেমন আছে জিজ্ঞেস করলে একটু বিরক্তই হন একানব্বই বছরের তরুণ তারকমোহন দাস। বরং জিজ্ঞেস করুন গরিব মানুষের জন্য তাঁর তৈরি সোলার কুকার বাজারে বিক্রি করার জন্য কী ভাবছেন? তক্ষুণি নিজের গবেষণাগারে বসে ভবিষ্যতের নানা পরিকল্পনা শোনাবেন। এক সময় স্কুল জীবনে পরিবেশবিজ্ঞানী তারকমোহন দাসের বায়োলজি বই পড়েননি এমন মানুষ কম। এখনও তিনি গবেষণা থামিয়ে দেননি। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে খিদিরপুরের বাড়িতে বসে এখনও স্বপ্ন দেখেন তাঁর ‘তারকমোহন দাস ফাউন্ডেশন’-এ নতুন কিছু করার। স্মৃতি-রোমন্থন ভালবাসেন না পৃথিবী কী শুধু মানুষের জন্য বইটিতে রবীন্দ্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই বিজ্ঞানী। বরং ভালবাসেন পিঁপড়েদের চালচলন নিয়ে তিনি যে পিঁপড়ের জীবন দর্শন নামে বই লিখেছেন তাতে আরও নতুন কিছু সংযোজন করতে। তিনি হিসাব করে দেখিয়েছিলেন ৫০ টন ওজনের গাছ ৫০ বছর বাঁচলে ১৫ লক্ষ টাকার মতো সামাজিক পরিষেবা দেয়। ১৯৭০ দশকের শেষে তাঁর এই গবেষণা সাড়া ফেলে। গবেষণাপত্রটি সযত্নে রাখা আছে দিল্লির সায়েন্স মিউজিয়াম ও অস্ট্রেলিয়ার পার্থ মিউজিয়ামে। জানালেন, এই টাকার অঙ্কটা আজকের দিনে ৩ কোটিরও বেশি। কিন্তু মানুষ তবু নির্বিচারে গাছ কাটছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা থেকে অবসরের পরেও পড়িয়েছেন বহু বছর। গঙ্গার জীব বৈচিত্র, সুন্দরবনের উন্নয়ন, নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ নিয়ে তিনি যে সব গবেষণাপত্র লিখেছেন সেই নিয়ে আজকের প্রজন্মের ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করে গবেষণা আরও সমৃদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

kolkatar karcha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy