Advertisement
০২ মে ২০২৪
লেকটাউন

গৃহশিক্ষিকার খোঁজে ভিন্ রাজ্যে পুলিশ

লেক টাউনে শিশুকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহশিক্ষিকা পূজা সিংহের সন্ধানে বিহার এবং ওড়িশায় গেল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। বাগুইআটিতে পূজার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খতিয়ে দেখে পুলিশের অনুমান, পালিয়ে বিভিন্ন হোটেলে থাকার সামর্থ্য তাঁর নেই। ফলে সম্ভবত কোনও আত্মীয়ের বাড়িতেই তিনি আছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০০:৩৮
Share: Save:

লেক টাউনে শিশুকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহশিক্ষিকা পূজা সিংহের সন্ধানে বিহার এবং ওড়িশায় গেল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। বাগুইআটিতে পূজার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খতিয়ে দেখে পুলিশের অনুমান, পালিয়ে বিভিন্ন হোটেলে থাকার সামর্থ্য তাঁর নেই। ফলে সম্ভবত কোনও আত্মীয়ের বাড়িতেই তিনি আছেন। জানা গিয়েছে, পূজার শ্বশুর জগমোহন সিংহ বিহারের সমস্তিপুরে থাকেন। কর্মসূত্রে পূজার শাশুড়ি থাকেন ওড়িশার সম্বলপুরে। বিহারের উদ্দেশে ইতিমধ্যে রওনা হয়েছে কমিশনারেটের একটি দল। বৃহস্পতিবার ওড়িশার উদ্দেশেও একটি দল রওনা হয়েছে।

এ দিন বিধাননগর কমিশনারেটের এডিসিপি দেবাশিস ধর বলেন, “অভিযুক্ত শিক্ষিকা কেন এ রকম বর্বরোচিত আচরণ করলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পূজার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনদের খোঁজ করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সম্ভাব্য সমস্ত জায়গাতেই তল্লাশি চলছে। ”

পুলিশ জেনেছে, বাগুইআটির বিসি রায় সরণিতে পূজা তাঁর স্বামী রোহিত, কন্যা মাহি ও শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে থাকা শুরু করেন। ফেব্রুয়ারিতে পূজার শাশুড়ি সম্বলপুর এবং শ্বশুর সমস্তিপুরে চলে যান। এ দিন পুলিশ পূজার দাদা অভিষেক খেমকাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশ জেনেছে, পূজা মোবাইলে অভিষেকের সিম কার্ড ব্যবহার করতেন। পুলিশের দাবি, অভিষেক জানান, বোনের সঙ্গে চার বছর ধরে তাঁর সম্পর্ক নেই। সিমকার্ডটি পূজা বিয়ের আগে থেকে ব্যবহার করেন। অভিষেক আগে রাজারহাটে থাকলেও এখন কাঁকুড়গাছিতে থাকেন। তাঁর বক্তব্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

পুলিশ জেনেছে, পূজার বিরুদ্ধে আগেও কয়েক বার বাচ্চাদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের দাবি, অভিষেক জানান, তাঁর ছেলেকে মারধর করায় তিনি বোনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তখন তাঁর ছেলে ছিল নিতান্তই শিশু। অন্য দিকে, বাঙুরের বাসিন্দা দীপক শর্মা বলেন, “আমার ছেলে পূজার বাগুইআটির বাড়িতে তিন দিন পড়তে গিয়ে কেমন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। পড়তে যাওয়ার আগে কান্নাকাটি করত। পরে ওই টিউশন ছাড়িয়ে দিয়েছি।”

তদন্তকারীদের প্রশ্ন, কেন বারবার শিশুদের গায়ে হাত তুলছিলেন পূজা? তাঁর কি মানসিক রোগ রয়েছে? মূলত আইসিএসই ও সিবিএসই বোর্ডের নার্সারি বা ওয়ান-টুর বাচ্চাদের পড়াতেন পূজা। নানা জায়গায় টিউশনি করা পূজা অন্য বাচ্চাদেরও মারতেন কি না, দেখছে পুলিশ। তাঁদের প্রশ্ন, এই বয়সের বাচ্চারা সে ভাবে কিছু বলতে পারত না বলেই কি এত দিন পার পেয়ে শেষে সিসিটিভি-র দৌলতে ধরা পড়লেন পূজা?

ওই গৃহশিক্ষিকার প্রতিবেশীদের দাবি, পূজাকে পড়াতে না দেওয়ার কারণ তাঁর মারধরের অভ্যাস। এক প্রতিবেশী গৌরী দে বলেন, “পড়া না পারায় পূজাকে ওর মেয়েকে বেধড়ক পেটাতে দেখেছি। পূজা বলেছিল আমার বাচ্চাকে পড়াবে। নিজের মেয়েকেই যে এ রকম মারধর করে, তাকে কী ভাবে পড়াতে দিই?”

এ দিকে লেকটাউনের নিগৃহীত শিশুর পরিজনেরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তার জ্বর আসে। তবে শুক্রবার সে অনেকটা ভাল আছে। সিসিটিভিতে মারের ছবি স্পষ্ট দেখা গেলেও শব্দ ভাল শোনা যায়নি। তাই পূজা শিশুটিকে কী বলেছিল, জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ওই শিশুটির এক আত্মীয় রাকেশ কুমার এ দিন বলেন, “ওর মানসিক উদ্বেগ এখনও কাটেনি। মাঝেমধ্যেই কেঁদে উঠছে। ভাল করে খাওয়াদাওয়া করছে না।” শিশুটি যে স্কুলে পড়ে, সেখানকার কয়েক জন অভিভাবক এ দিন তাকে দেখতে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

lake town home tutor police searching
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE