Advertisement
E-Paper

চেহারায় মসৃণ, তবুও মৃত্যুফাঁদ ভিআইপি রোড

রাস্তায় কোথাও গর্ত বা খোয়া উঠে যাওয়ার চিহ্ন নেই। নতুন পিচ দেওয়া মসৃণ রাস্তা। আপাত দৃষ্টিতে মনে হবে, এ পথে গাড়ি কোনও ঝাঁকুনি ছাড়াই চলে যাবে। অথচ সেই রাস্তাই মরণফাঁদ। মসৃণ রাস্তাতেই ঘটছে দুর্ঘটনাও। শুধু অটো বা টেম্পোর মতো ছোট গাড়িই শুধু নয়, উল্টে যাচ্ছে দূরপাল্লার বাসও। শহরের অন্যতম প্রধান রাস্তা ভিআইপি রোডের ছবিটা এখন অনেকটা এ রকমই।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৪ ০১:০৩
এতটাই উঁচুনিচু মূল রাস্তা ও সার্ভিস রোড।  ছবি: শৌভিক দে।

এতটাই উঁচুনিচু মূল রাস্তা ও সার্ভিস রোড। ছবি: শৌভিক দে।

রাস্তায় কোথাও গর্ত বা খোয়া উঠে যাওয়ার চিহ্ন নেই। নতুন পিচ দেওয়া মসৃণ রাস্তা। আপাত দৃষ্টিতে মনে হবে, এ পথে গাড়ি কোনও ঝাঁকুনি ছাড়াই চলে যাবে। অথচ সেই রাস্তাই মরণফাঁদ। মসৃণ রাস্তাতেই ঘটছে দুর্ঘটনাও। শুধু অটো বা টেম্পোর মতো ছোট গাড়িই শুধু নয়, উল্টে যাচ্ছে দূরপাল্লার বাসও। শহরের অন্যতম প্রধান রাস্তা ভিআইপি রোডের ছবিটা এখন অনেকটা এ রকমই।

কেষ্টপুর থেকে রঘুনাথপুর পর্যন্ত চলছে উড়ালপুল নির্মাণ। আর তার নীচেই চলছে ভিআইপি রোড চওড়া করার কাজ। ওই এলাকাতেই চলছে তিনটি আন্ডারপাস নির্মাণের কাজও। পূর্ত দফতরের দাবি, পুরো কাজ শেষ হয়ে গেলে ভিআইপি রোডের ছবিটাই আমূল পাল্টে যাবে। কিন্তু অভিযোগ, রাস্তা চওড়া ও লেন তৈরি করতে গিয়ে রাস্তার বেশ কিছু অংশ উঁচুনিচু হয়ে গিয়েছে। এর ফলে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। সাধারণ মানুষের দাবি, এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি পূর্ত দফতরের এই বিষয়েও নজর দেওয়া দরকার। তা না হলে যে কোনও দিন বড়সড় দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে।

রাস্তার মধ্যে কী ভাবে তৈরি হয়েছে উঁচুনিচু অংশ? পথচলতি মানুষ জানাচ্ছেন, কেষ্টপুর থেকে রঘুনাথপুর পর্যন্ত রাস্তা চওড়া হয়েছে অনেকটা। চওড়া রাস্তার সঙ্গে সার্ভিস রোডও তৈরি হচ্ছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা ও সার্ভিস রোডের মধ্যে প্রায় ছ’ইঞ্চির মতো উচ্চতার ফারাক। কোথাও আবার তার থেকেও বেশি। এই সার্ভিস রোড ও রাস্তার মধ্যে কোনও ডিভাইডার এখনও দেওয়া হয়নি। ফলে গাড়িগুলো বুঝতে পারছে না, কোনটা সার্ভিস রোড আর কোনটা মূল রাস্তা। অনেক সময়ই সার্ভিস রোডকে মূল রাস্তা ভেবে বড় গাড়ি সার্ভিস রোডে নেমে যাচ্ছে। মূল রাস্তা ও সার্ভিস রোডের মধ্যে উচ্চতার পার্থক্য থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে গাড়ি। তার পরে সার্ভিস রোড থেকে মূল রাস্তায় উঠতে গিয়ে আরও বেশি বিপত্তিতে পড়তে হচ্ছে। গত শনিবার একটি শিলিগুড়িগামী দূরপাল্লার বাস এ ভাবেই মূল রাস্তা থেকে ভুল করে সার্ভিস রোডে নেমে গিয়েছিল। অতিরিক্ত মাল বহন করায় সেটি আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি। আর তার ফলেই উল্টে যায়।

অভিযোগ, শুধু সার্ভিস রোড থেকে মূল রাস্তার মাঝে উচ্চতার ফারাকই নয়, মূল ভিআইপি রোডের নতুন করে যে পিচ ঢালা হয়েছে, সেখানেও এ রকম উঁচুনিচু অংশ রয়ে গিয়েছে। যেমন কেষ্টপুরের কাছে ভিআইপি রোডে যেখানে নতুন পিচ ঢালা হয়েছে, সেখানে প্রায় পাঁচ ইঞ্চির মতো উঁচুনিচু। বাগুইআটি মোড়ের কাছেও একই অবস্থা। এই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী গাড়িচালকেরা জানাচ্ছেন, উঁচু থেকে নিচে নামতে বা নিচু অংশ থেকে উপরে উঠতে গিয়ে প্রায়শই গাড়ির চাকা বেসামাল হয়। অটো উল্টে যাওয়ার মতো ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটেছে। যাত্রীদের অভিযোগ, সেতু বানাতে গিয়ে হঠাৎই কোনও লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সে ব্যাপারে সচেতন করার বোর্ডও দেওয়া হয়নি অনেক ক্ষেত্রে।

সমস্যা যে রয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা। পূর্ত দফতরের এক চিফ ইঞ্জিনিয়ার সুস্মিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেষ্টপুর থেকে রঘুনাথপুর পর্যন্ত রাস্তা এক বারে তৈরি করা যায়নি। এক বারে তৈরি করতে হলে যানচলাচল বন্ধ করে করতে হতো। যা সম্ভব নয়। ভাগে ভাগে তৈরি করায় কিছুটা উঁচুনিচু হয়ে গিয়েছে। তবে খুব শীঘ্রই রাস্তা সমান করে দেওয়া হবে।” সুস্মিতবাবু জানিয়েছেন, মূল রাস্তা ও সার্ভিস রোডের মধ্যে এখনও ডিভাইডার দেওয়া যায়নি। ফলে ওই জায়গাগুলোতেও উচ্চতার ফারাক থেকে গিয়েছে। তিনি বলেন, “ওই জায়গাগুলোতে আমরা ডিভাইডার দিয়ে দেব। যত দিন না তা হচ্ছে, তত দিন চালকদের সতর্ক করতে বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হবে।”

aryabhatta khan vip road
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy