সাতসকালে আচমকা ভারী কিছু পড়ে যাওয়ার আওয়াজ শুনে তড়িঘড়ি ছুটে এসেছিলেন বাড়ির লোক। এসে তাঁরা দেখেন, বাড়ির গেটের উপরে পড়ে রয়েছেন গৃহকর্তা। গেটের শিক গেঁথে গিয়েছে তাঁর পেটে। দিলীপ সরকার (৬৪) নামে ওই প্রৌঢ়কে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতাল, পরে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই কিছুক্ষণ পরে মৃত্যু হয় তাঁর।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হরিদেবপুর থানার বলাকা এলাকায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ঘুম থেকে উঠে চায়ের কাপ হাতে ছাদে উঠেছিলেন দিলীপবাবু। তাঁদের বাড়িটি দোতলা। এর কিছুক্ষণ পরেই দোতলার ছাদ থেকে কোনও ভাবে বাড়ির গেটের উপরে পড়ে যান তিনি। আওয়াজ শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। ঘর থেকে ছুটে আসেন দিলীপবাবুর স্ত্রী ও মেয়ে। বাইরে বেরিয়ে দেখা যায়, গেটের ধারালো শিক দিলীপবাবুর পেটে গেঁথে গিয়েছে। ছাদের পাঁচিলে রাখা রয়েছে তাঁর চায়ের কাপ ও চশমা।
দিলীপবাবুর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ডালহৌসি শাখায় ম্যানেজার ছিলেন দিলীপবাবু। বছর চারেক আগে অবসর নেন। তার পরে কিছু দিনের জন্য যুক্ত ছিলেন একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে। সেই কাজ ছাড়ার পরে বাড়িতেই থাকতেন। তাঁর ছেলে কর্মসূত্রে থাকেন আমেরিকায়। মেয়ে পড়াশুনো করেন ইতালিতে। বাবার অসুস্থতার জন্য তিনি সম্প্রতি ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জনিয়েছে, কয়েক বছর ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন দিলীপবাবু। তবে বছর দেড়েক আগে ছেলের কাছে ঘুরতে গিয়েছিলেন। পুলিশ আরও জেনেছে, দিলীপবাবুর বাড়ির লোকজন সব সময়ে ছাদের দরজায় তালা দিয়ে রাখতেন। পুলিশের অনুমান, এ দিন সকলের চোখ এড়িয়ে কোনও ভাবে ছাদে উঠে যান দিলীপবাবু। ঘটনাস্থলে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। তবে কী ভাবে দিলীপবাবু ছাদ থেকে পড়ে গেলেন, তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না পুলিশ। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, তাঁর আত্মীয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy