Advertisement
E-Paper

নিয়মের রুটে বেনিয়মের যাত্রা

ঘটা করে বাসরুটের উদ্বোধন করেছিলেন খোদ রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী। কিন্তু কয়েক মাস পরেই পাল্টে গেল ছবিটা। সরকারি রুটের বদলে ইচ্ছেমতো রুটে একাধিক বাস চলতে শুরু করল হাওড়া-কলকাতা বেশ কয়েকটি রুটে।

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৪ ০১:৪৪

ঘটা করে বাসরুটের উদ্বোধন করেছিলেন খোদ রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী। কিন্তু কয়েক মাস পরেই পাল্টে গেল ছবিটা। সরকারি রুটের বদলে ইচ্ছেমতো রুটে একাধিক বাস চলতে শুরু করল হাওড়া-কলকাতা বেশ কয়েকটি রুটে।

বন্ধ হয়ে গিয়েছে কয়েকটি বাসও। এমনটাই অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। এই অভিযোগ স্বীকারও করে নিয়েছে বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট।

সরকার ভাড়া না বাড়ানোয় বিপুল লোকসানের হাত থেকে কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টাতেই বাস মালিকেরা এই পথে হেঁটেছেন বলে জানিয়েছে সিন্ডিকেট। পরিবহন দফতর সূত্রের খবর, ২০১৩-র শেষ দিকে পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র হাওড়ার ডোমজুড়-নিউটাউন বাস রুটের উদ্বোধন করেছিলেন। বেশ কয়েকটি বেসরকারি বাস চলত এই রুটে। এখনও চলে। তবে রুট বদলে নেওয়া হয়েছে ইচ্ছেমতো। নিউটাউন যাওয়ার বদলে রবীন্দ্রসদন থেকে বাস ঘুরিয়ে আবার ডোমজুড় চলে আসছে বলে অভিযোগ। এমনকী, ডোমজুড়-পৈলানের (কে-১১) বাসও হেস্টিংস থেকে আবার ফিরে যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। আন্দুলের খটিরবাজার-ব্যারাকপুর রুটের বাস রাজাবাজার রুটে চলছে বলে অভিযোগ। যার ফলে বেশ বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।

সবকটি বাসের বৈধ রুটই হল সাঁতরাগাছি হয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতু দিয়ে কলকাতা।

হাওড়ার সাঁতরাগাছি থেকে দক্ষিণ কলকাতার রবীন্দ্রসদনে আসার বেশ কয়েকটি বাস থাকলেও সাঁতরাগাছি থেকে সরাসরি পৈলান বা উত্তর কলকাতা যাওয়ার বাসের সংখ্যা খুবই কম। সেই কারণেই রাজ্য সরকার এই সমস্ত রুটে বাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু বাস ইচ্ছেমতো রুটে চলায় আবারও ভোগান্তি সেই সাধারণ মানুষের। তার মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ রুটটি হল ডোমজুড় থেকে নিউটাউন। কারণ হাওড়ার গ্রামীণ এলাকা থেকে সরাসরি কলকাতার নিউটাউনে আসার প্রধান রুট এটি। পাশাপাশি, খটিরবাজার-ব্যারাকপুর রুটটির ধর্মতলা, শিয়ালদহের সঙ্গে যোগ ছিল। ফলে এই রুটের বাসের উপর নির্ভরতাও ছিল অনেকটা বেশি।

কিন্তু কেন তাহলে নিয়ম ভেঙে বাস চালাচ্ছেন বাস মালিকেরা?

বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সম্পাদক বাবু ঘোষ বলেন, “ভাড়া না বাড়ানোয় বাস চালানো যাচ্ছে না। যে রুটে লাভ হচ্ছে না সেই রুটের ক্ষেত্রেই এ সব করা হচ্ছে। কারণ সকলকেই বাঁচতে হবে।” তাঁর ব্যাখ্যা, ডোমজুড়-নিউটাউনের বাস রবীন্দ্রসদন পর্যন্ত যাওয়ার কারণ, ওই পর্যন্ত গেলেই নির্দিষ্ট লাভ হচ্ছে। তার পরে নিউটাউন পর্যন্ত যেতে গেলে লাভের পরিমাণ তলানিতে ঠেকছে। তাঁর দাবি, খটিরবাজার-ব্যারাকপুরে আর কেউ নতুন বাস নামাচ্ছে না। ফলে সেখানে বাসের সংখ্যাও কম। নতুন কোনও বাস না আসায় বেশি দূরত্বের রুটে বাস যেতেও পারছে না। আর ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারে অনমনীয় মনোভাবের কারণে নতুন বাস আসছে না। এর ফলে আখেরে সেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকেই। নিত্যযাত্রী প্রসেনজিৎ কর্মকার বলেন, “সাঁতরাগাছি থেকে নিউটাউন সহজেই যাওয়া যেত। কিন্তু এখন আর বাস যায় না। ফলে নিউটাউন যেতে হলে কলকাতার এক্সাইড থেকে আবার অন্য বাসে করে যেতে হয়। এতে টাকাও বেশি লাগে এবং হয়রানিও হয় বেশি।” একই অভিজ্ঞতা আন্দুল থেকে ব্যারাকপুরে কাজ করতে যাওয়া সীমান্ত রায়ের। তিনি বলেন, “বাড়ির সামনে থেকে একটি বাসেই কর্মক্ষেত্রে যাওয়া যেত। কিন্তু এখন তা আর হচ্ছে না।”

এ বিষয়ে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। এই ঘটনা ঘটে থাকলে যা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, সেটাই নেওয়া হবে।”

supriya tarafder howrah sealdah bus service
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy