Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পিজিতে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ডাক্তারের

এসএসকেএম হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচার চলাকালীন এক জুনিয়র ডাক্তারের শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠল সেখানকার এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাত এগারোটা নাগাদ ভবানীপুর থানায় এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা ডাক্তার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৪ ০১:০৯
Share: Save:

এসএসকেএম হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচার চলাকালীন এক জুনিয়র ডাক্তারের শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠল সেখানকার এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাত এগারোটা নাগাদ ভবানীপুর থানায় এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা ডাক্তার।

অভিযুক্ত কর্মী শান্তি প্রামাণিককে শনিবার থেকেই অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ। সোমবার হাসপাতালের তরফে একটি কমিটি গড়ে আলাদা ভাবে এই ঘটনার তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ প্রদীপ মিত্র। এ দিকে, পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত শান্তি প্রামাণিক।

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ এসএসকেএমের স্ত্রীরোগ বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচার করছিলেন ওই মহিলা চিকিৎসক। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ‘ওটি বয়’ শান্তি প্রামাণিক। পুলিশের কাছে ওই চিকিৎসক অভিযোগ করেছেন, পঞ্চাশোর্ধ্ব শান্তিবাবু ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর শরীরের পিছনের অংশে হাত দেন। এর পরেই ওই চিকিৎসক ফোন করে বিভাগীয় প্রধান গৌরীশঙ্কর কামিল্যাকে বিষয়টি জানান। শনিবার সকালে লিখিত অভিযোগ জানান অধ্যক্ষের কাছে।

অধ্যক্ষ প্রদীপবাবু কথায়, “স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের ওই চিকিৎসকের কাজে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। পড়াশোনাতেও খুব ভাল। তাঁর কাছ থেকে এই অভিযোগ পেয়ে চমকে উঠি। সঙ্গে সঙ্গে থানায় যেতে বলি। তিনি আমায় জানিয়েছেন, আগেও দু’বার ওই কর্মী কোনও না কোনও অছিলায় তাঁর শরীরে হাত দিয়েছেন। এটি কিছুতেই বরদাস্ত করা যায় না।” ওই অবাঙালি মহিলা চিকিৎসক ধানবাদ থেকে কেন্দ্রের কোটায় এসএসকেএম-এ স্নাতকোত্তর পড়তে এসেছেন। টেলিফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমার যা বলার পুলিশ আর অধ্যক্ষকে জানিয়েছি। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলব না।” তবে হাসপাতাল সূত্রের খবর, অভিযুক্ত শান্তিবাবু শনিবার হাসপাতালের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছেন যে, ওটি রুমের মাটিতে পড়ে থাকা রক্ত সাফ করার সময়ে অনিচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর হাত ওই মহিলা চিকিৎসকের গায়ে লেগে গিয়েছিল।

শনিবার ওই মহিলা পুলিশে অভিযোগ দায়েরের পরেই অবশ্য এসএসকেএম হাসপাতালের অধিকাংশ চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, চিকিৎসক এবং ওয়ার্ড মাস্টারেরা মুখে কার্যত কুলুপ আঁটেন। সুপার দীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “এই রকম যে ঘটেছে, আমায় কেউ জানায়নি।’’ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালে ডিউটি থাকলেও এর পরেই তাড়াতাড়ি তিনি অফিস থেকে চলে যান। পরে টেলিফোনে জানান, “আমি অধ্যক্ষের থেকে ঘটনাটি জেনেছি। অভিযোগকারী বা অভিযুক্ত, কারও সঙ্গেই আমার কথা হয়নি।”

এমনকী যে বিভাগে এত কিছু ঘটে গিয়েছে বলে অভিযোগ, সেই স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান গৌরীশঙ্কর কামিল্যারও উক্তি, “আমি কিছুই জানি না। মেয়েটি আমায় শুক্রবার রাতে ফোন করে একটি অভিযোগ করার কথা বলেছিল। কিন্তু কী অভিযোগ, তা জানায়নি।” শান্তি প্রামাণিককেও এ দিন দুপুরের পরে আর হাসপাতালে দেখা যায়নি। ওয়ার্ড মাস্টার, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ইউনিয়ন বা স্ত্রীরোগ বিভাগের ওটি-র চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের কেউ তাঁর সম্পর্কে একটি কথাও উচ্চারণ করতে চাননি। শুধু জানা গিয়েছে যে, তিনি হাসপাতাল কোয়ার্টার্সে থাকেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sskm junior doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE