কলকাতা পুরসভার বাজার। কিন্তু পুরসভার নথি থেকে নাম বাদ গিয়েছে। ফলে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেহাল দশা দক্ষিণ কলকাতার করুণাময়ী বাজারের।
করুণাময়ী বাজারের এক দিকে স্তূপীকৃত আবর্জনা। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। নিকাশির বেহাল অবস্থা। একটু বৃষ্টিতেই জল জমে যায় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। প্লাস্টিক টাঙিয়ে বেচাকেনা চলে। বৃষ্টি পড়লে বিক্রেতাদের একাংশকে মালপত্র উঠিয়ে নিতে হয়।
সম্প্রতি কলকাতা পুরসভা যৌথ উদ্যোগে এই বাজাটির রক্ষণাবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) তারক সিংহ বলেন, “এই বাজারটি কলকাতা পুরসভার অন্তর্ভুক্ত। প্রায় বছর কুড়ি আগে পুরসভার নথিতে এই বাজারের উল্লেখ ছিল। সেই সময়ে স্থানীয় বরো থেকে এই বাজারের রক্ষণাবেক্ষণ করা হত। পরে পুরসভার নথিতে এই বাজারের কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। ফলে বর্তমানে বাজারটির রক্ষণাবেক্ষণও বন্ধ।” মেয়র পারিষদের দাবি, যৌথ উদ্যোগে বাজারটি নতুন করে গড়ে তোলা হবে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, করুণাময়ী বাজারের প্রায় ২৩ কাঠা জমি পুরসভাকে স্থায়ী বাজার তৈরির জন্য আশির দশকের শেষে স্থানীয় এক পরিবার দান করেছিল। তার পরেই, এই জমিটি পুরসভার বাজেট পুস্তিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নিয়মানুযায়ী, এই বাজারের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পুরসভা থেকে বাজেট বরাদ্দও করা হয়। পরে বাজেট পুস্তিকায় পুরসভার সম্পত্তির তালিকা থেকে এই বাজারটির নাম বাদ যায়। তার পরে পুরসভার বাজেট বরাদ্দও বন্ধ হয়ে যায়।
তারকবাবু জানান, কেন বাজারটির নাম বাদ গেল সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কী করে এমন হল তা জানা যায়নি। কবে এই বাজার পুরসভার নথি থেকে বাদ গেল তাও জানা যায়নি। তবে, সম্প্রতি পুরসভার নথিতে বাজারটিকে অন্তভুর্ক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পরে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাজেট বরাদ্দও করা হবে। পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এই বাজারটির জমির একাংশের দলিল পুরসভার কাছে আছে। জমির অন্য অংশটি, যেটি পরে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তার দলিল পুরসভার কাছে নেই। তবে এ ব্যাপারে খোঁজ চলছে।
সম্প্রতি, কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর রত্না শূর এই বাজারটির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এটি এলাকার অন্যতম বাজার। এটি পুরসভার নিজস্ব বাজার হিসেবেই চিহ্নিত। সুতরাং অবিলম্বে এই বাজারের সংস্কার প্রয়োজন। ব্যবসায়ীদের মালপত্রের নিরাপত্তার সমস্যা ছাড়াও পথচারীদের হাঁটাচলার অসুবিধা হচ্ছে। অন্য দিকে, পুরসভার কোনও আয় হচ্ছে না।” অবিলম্বে বাজাটির সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। পুরকর্তৃপক্ষ জানান, এই বাজাটির সংস্কার করা হলে এই সমস্যা থাকবে না। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করা হবে।